ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার আর ১৫৪ রান। বাংলাদেশের ৬ উইকেট। একটা বড় জুটি কেড়ে নিতে পারে বাংলাদেশের স্বপ্ন। আবার কয়েকটি উইকেট পতন হলে জয়ের কাছে চলে আসতে পারে টাইগাররা। এমন পরিস্থিতিতে জ্যামাইকা টেস্টের চতুর্থ দিনের চা-বিরতিতে গেছে দুই দল।
Advertisement
২৮৭ রানের জয়ের লক্ষ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৩৩ রান। কাভেম হজ ৪৯ আর জাস্টিন গ্রেভস ১০ রানে অপরাজিত আছেন।
এর আগে চাপের মুখে লোয়ার অর্ডারদের নিয়ে দুর্দান্ত লড়াই করেন জাকের আলী। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার। মাত্র ৯ রানের জন্য প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিটা পেলেন না।
চার-ছক্কায় খুব দ্রুতই সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ভরসা করার মতো সঙ্গী যে কেউ ছিলেন না। সেই সুযোগটাই নিলো ক্যারিবীয়রা। আলজেরি জোসেফের বলে পুল খেলে ডিপ মিডউইকেটে ধরা পড়লেন জাকের।
Advertisement
১০৬ বলে ৮ চার আর ৫ ছক্কায় জাকেরের ৯১ রানের লড়াকু ইনিংসটির সমাপ্তি তাতেই। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ অলআউট হলো ২৬৮ রানে। তাতে জ্যামাইকা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৮৭।
এই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে চতুর্থ দিনের লাঞ্চ বিরতির ঠিক আগে উইকেট হারায় ক্যারিবীয়রা। তাইজুল ইসলামের বলটি মিকাইল লুইসের (৬) ব্যাটে ছুঁয়ে প্যাডে লেগে ওপরে উঠে যায়। ঝাঁপিয়ে পড়ে দারুণ এক ক্যাচ নেন শর্টে দাঁড়ানো শাহাদাত হোসেন দিপু। আম্পায়ার প্রথমে আউট দেননি। কিন্তু বাংলাদেশ রিভিউ নিলে সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হন।
লাঞ্চের পর ক্যারিবীয়দের আরও চেপে ধরে বাংলাদেশ। যদিও অনেকটা সময় উইকেট ধরে রেখেছিল স্বাগতিকরা। অবশেষে ১৫তম ওভারে আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদ। ১৪ রান করা কিয়েসি কার্টির ব্যাটে এজ হয়ে বল চলে যায় উইকেটরক্ষক লিটন দাসের হাতে।
১০ ওভার পর তাইজুল ভাঙেন অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রাথওয়েটের প্রতিরোধ। এবার ডিফেন্স করলেও লাফিয়ে উঠা টার্নিং ডেলিভারি চলে যায় প্রথম স্লিপের দিকে। দারুণ এক ডাইভিং ক্যাচ নেন মাহমুদুল হাসান জয়। ৪৩ করে ফেরেন স্বাগতিক অধিনায়ক। নিজের পরের ওভারে অলিক এথেনেজকে (৫) বোল্ড করে দেন তাইজুল। ১০৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
Advertisement
এর আগে প্রথম ইনিংসে ১৬৪ রানে অলআউট হওয়ার পর ক্যারিবীয়দের ১৪৬ রানেই গুটিয়ে দেয় টাইগাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে বেশ প্রতিরোধ গড়ে মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
৫ উইকেটে ১৯৩ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। জাকের আলি ২৯ আর তাইজুল ইসলাম ৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। সকালে তাইজুলকে নিয়ে জাকের প্রথম আধ ঘণ্টা ভালোভাবেই কাটিয়ে দেন।
তবে এরপর টানা দুই ওভারে দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। জাকের-তাইজুলের জুটিতে আসে গুরুত্বপূর্ণ ৩৪ রান। শেষ পর্যন্ত এই জুটিটি ভাঙেন আলজেরি জোসেফ। তাইজুলকে স্লিপে ক্যাচ বানান তিনি। ৫০ বল খেলে তাইজুল কোনো বাউন্ডারি ছাড়াই করেন ১৪ রান।
আট নম্বরে নেমে মুমিনুল হক একদম সুবিধা করতে পারেননি। কেমার রোচের বলে ভুল ড্রাইভ খেলে স্লিপে শূন্য রানেই ক্যাচ হন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। এরপর হাসান মাহমুদকে নিয়ে ২৭ বলে ৩২ রানের ঝোড়ো জুটি গড়েন জাকের, যে জুটিতে হাসানের অবদান মাত্র ৩ রান।
হাসান মাহমুদ (৩) আর তাসকিন আহমেদকেও (০) ফেরান রোচ। কিন্তু জাকের একাই লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত আর সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েও পারেননি।
দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আলজেরি জোসেফ আর কেমার রোচ নেন তিনটি করে উইকেট।
এমএমআর/