দক্ষিণ কোরিয়াজুড়ে জরুরি সামরিক আইন জারি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইয়ল। বিরোধী দলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতার অভিযোগ এনে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
Advertisement
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) টেলিভিশনের এক ভাষণে প্রেসেডন্ট ইউন বলেন, উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট শক্তির হুমকি এবং রাষ্ট্রবিরোধী উপাদানগুলোকে নির্মূল করতে একটি উদার ও গণতান্ত্রিক দক্ষিণ কোরিয়া পুনর্গঠন করবো। জনগণের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং রাষ্ট্রের স্থায়িত্ব বজায় রাখতে এটি একটি অনিবার্য পদক্ষেপ।
এ সময় দেশজুড়ে সামরিক আইন জারি করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না বলে উল্লেখ করেন দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট। তবে এরপর কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা জানাননি তিনি।
এদিকে, শাসক রক্ষণশীল দল পিপল পাওয়ার পার্টির নেতা হান ডং-হুন এই সিদ্ধান্তকে ভুল বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, সামরিক আইন ঘোষণার বিরোধিতা করবো এবং জনগণের সঙ্গে এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেবো।
Advertisement
এছাড়া, বিরোধী ডেমোক্রেটিক পার্টি এই ঘোষণার পরপরই জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে।
আরও পড়ুন>>
অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী দক্ষিণ কোরিয়া দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সীমান্ত চিরতরে বন্ধ করছে উত্তর কোরিয়া দক্ষিণ কোরিয়ায় থামেনি তুষারপাত, মৃত বেড়ে ৫২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিরোধী-নিয়ন্ত্রিত সংসদের সঙ্গে ইউনের মতবিরোধ চলে আসছে। বিরোধী ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং শাসক পিপল পাওয়ার পার্টির মধ্যে আগামী বছরের বাজেট বিল নিয়ে চলমান অচলাবস্থা আরও উত্তেজনা তৈরি করেছে।
এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ইউন বলেছেন, জাতীয় পরিষদ রাষ্ট্রের প্রধান কার্যক্রম, মাদক অপরাধ প্রতিরোধ এবং জননিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট কমিয়ে দিয়েছে। এতে জনগণ অস্থিতিশীল অবস্থায় পড়েছে, রাষ্ট্রের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং দেশটি মাদকের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে।
Advertisement
আবার, প্রেসিডেন্ট ইউনের স্ত্রী এবং শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি বিভিন্ন কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু এ বিষয়ে স্বাধীন তদন্তের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন ইউন। এ নিয়ে বিরোধী দলের কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি।
এ অবস্থায় সামরিক আইন জারির এই পদক্ষেপ দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সামরিক আইন কী?সামরিক আইন হলো এমন একটি অস্থায়ী শাসন ব্যবস্থা, যেখানে জরুরি অবস্থায় বেসামরিক প্রশাসন অকার্যকর হলে সামরিক কর্তৃপক্ষ দেশের শাসনভার গ্রহণ করে।
সামরিক আইন কার্যকর হলে বিভিন্ন আইনি প্রভাব দেখা দেয়, যেমন- সাধারণ নাগরিক অধিকার স্থগিত করা, সামরিক আইন কার্যকর করে দেশ পরিচালনা, ইত্যাদি।
যদিও সামরিক আইন তত্ত্বগতভাবে অস্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচিত, তবে এটি অনির্দিষ্টকালের জন্যও চালু থাকতে পারে।
সূত্র: আল-জাজিরা, বিবিসিকেএএ/