জাতীয়

মামলা থেকে নাম কাটার কথা বলে অর্থ আদায়, র‌্যাব সদস্যসহ আটক ৩

হত্যা মামলা থেকে নাম কাটার কথা বলে রাজধানীর আজিমপুরের একটি এতিমখানার তত্ত্বাবধায়কের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী।

Advertisement

সোমবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর আজিমপুরের ওই এতিমখানা থেকে তাদের আটক করা হয়। আটক তিনজনের মধ্যে একজন র‌্যাবের সদস্য ল্যান্স করপোরাল শাহীন। তিনি র‌্যাব-১০ এ কর্মরত। অন্য দুজনের মধ্যে একজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাবেক সদস্য সিরাজুল ইসলাম। আরেকজন হলেন উজ্জ্বল বিশ্বাস।

এ ঘটনায় র‌্যাব-১০ এর লালবাগ ক্যাম্পের এক কর্মকর্তা জড়িত বলে ওই এতিমখানার তত্ত্বাবধায়ক অভিযোগ করেছেন।

এ বিষয়ে লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ক্যশিনু বলেন, তিনজনকে আটক করার পর সেনাবাহিনী তাদের থানায় হস্তান্তর করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও কয়েকজনকে আসামি করা হচ্ছে।

Advertisement

এতিমখানার তত্ত্বাবধায়ক জানান, ৫ আগস্টের ঘটনায় আদালতে করা একটি মামলায় তাকে আসামি করা হয়। বিষয়টি ওই র‌্যাব কর্মকর্তা জানতে পারেন। পরে গত ২৭ নভেম্বর এতিমখানায় ল্যান্স করপোরাল শাহীন ও সিরাজুল ইসলামকে পাঠান। দুজন সাদাপোশাকে এসে তাকে গ্রেফতার করতে উদ্যত হন।

আরও পড়ুন> আপনে যোগাযোগ কইরেন, চার্জশিট থেকে নাম কেটে দিমুনি

এতিমখানার তত্ত্বাবধায়ক আরও বলেন, একপর্যায়ে এ মামলায় গ্রেফতার এড়ানো এবং অভিযোগপত্র থেকে নাম বাদ দেওয়ার জন্য তাকে ১০ লাখ টাকা দিতে বলেন শাহীন ও সিরাজুল। তাৎক্ষণিকভাবে ধার করে তাদের দুই লাখ টাকা দেন তিনি।

বাকি আট লাখ টাকার একটি চেক দেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পর সেই চেক ফেরত দিয়ে নগদ আট লাখ টাকা নিতে আসেন তিনজন। বিষয়টি আগে থেকেই সেনাবাহিনীকে জানানো হয়েছিল। সেনাবাহিনী এসে তিনজনকে আটক করে লালবাগ থানায় নিয়ে যায়।

র‌্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার প্রমাণ হিসেবে এতিমখানার তত্ত্বাবধায়ক একটি অডিও রেকর্ড হাজির করে বলেন, ৩০ নভেম্বরের ওই অডিও রেকর্ডে তার সঙ্গে ওই র‌্যাব কর্মকর্তার কথোপকথন রয়েছে। ওই অডিও রেকর্ডে যেসব কথাবার্তা হয়েছে, তাতে দাঁড়ায় যাত্রাবাড়ী, রামপুরা ও নিউমার্কেট থানার তিনটি হত্যা মামলায় ওই তত্ত্বাবধায়কের নাম এসেছে।

Advertisement

এর মধ্যে যাত্রাবাড়ীর মামলাসংক্রান্ত বিষয়টি এরই মধ্যে সমাধান করেছেন র‌্যাব কর্মকর্তা। তিনি দ্রুত টাকা দেওয়ার জন্য তাগাদা দেন। তত্ত্বাবধায়ক তখন তাকে বলেন, তিনি চেষ্টা করছেন। ১ ডিসেম্বরের মধ্যে ৫ লাখ টাকার ব্যবস্থা করে জানাবেন। ওই টাকা নিতে এসেই তিনজন আটক হন।

এ বিষয়ে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল মুনীম ফেরদৌস জানান, অভিযোগটা পেয়েছি। যাচাই-বাছাই করে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

এর আগে গত ১১ অক্টোবর গভীর রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ এলাকায় তিন রাস্তার মোড়ে আবু বকর নামের এক ব্যবসায়ীর বাসায় ও কার্যালয়ে ডাকাতি হয়। সেনাবাহিনী ও র‌্যাবের পোশাক পরা ডাকাতেরা নিজেদের যৌথ বাহিনীর সদস্য বলে পরিচয় দেন। তারা ৭৫ লাখ টাকা ও ৭০ ভরি সোনা লুট করেন বলে গৃহকর্তা ও পুলিশ সূত্র জানায়।

ওই ঘটনায় র‌্যাবের সাবেক একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যায়। ওই ডাকাতিতে র‌্যাব-৪ এ কর্মরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকজন সদস্যেরও নাম এসেছিল।

টিটি/এসআইটি/এএসএম