চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল হোসেন বিদ্যুৎকে (২৮) এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখমের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে শহরতলির দৌলতড়িয়াড়ে মাথাভাঙ্গা ব্রিজ সংলগ্ন বজলুর চায়ের দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
Advertisement
পরে স্থানীয়রা তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। তবে অবস্থা শঙ্কাজনক হওয়ায় রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বিদ্যুৎ দৌলতদিয়াড় সর্দারপাড়ার মোহর আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, রাতে বিদ্যুৎ বজলুর চায়ের দোকানে বসেছিলেন। এ সময় কয়েকজন যুবক সেখানে এসে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় বিদ্যুৎকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। জখম গুরুতর হওয়ায় সদর হাসপতালের সার্জারি কনসালট্যান্ট ডা. এহসানুল হক তন্ময় হাসপাতালে এসে তাকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রদান করেন এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করেন।
বিদ্যুতের ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র জানায়, একটি ত্রিভুজ প্রেমঘটিত বিষয়ের মীমাংসা করেছিলেন বিদ্যুৎ। তবে মীমাংসার ফল বিপরীতে যাওয়ায় রাগান্বিত হয়ে একই এলাকার তিব্বত ওরফে মেন্টাল তমাল, আকাশ ও রবিনসহ কয়েকজন বিদ্যুৎকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে।
Advertisement
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক ফয়সাল ইকবাল বলেন, ‘কলেজ ছাত্রদলের এক কর্মীর প্রেমঘটিত বিষয়ের মীমাংসার জন্য বিদ্যুতের সঙ্গে বসেছিল দুটি পক্ষ। মীমাংসা মনঃপূত না হওয়ায় একই এলাকার আকাশ, মেন্টাল তমাল, রবিনসহ কয়েকজন তাকে কুপিয়ে জখম করেছে বলে শুনেছি। এরা যুবলীগের কর্মীও ছিল। বিদ্যুৎ সবাইকে চেনে যারা তার ওপর হামলা চালিয়েছে।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি কনসালট্যান্ট ডা. এহসানুল হক তন্ময় বলেন, ‘রোগীর দুই হাত, ঘাড়, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গভীর জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে। দুই ব্যাগ রক্ত দেওয়াসহ হাসপাতাল থেকে তাকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। তবে অবস্থা সম্পূর্ণ শঙ্কামুক্ত না হওয়ায় এবং উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।’
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পরিদর্শক (ওসি, অপারেশন) হোসেন আলী বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে জেনেছি। আমরা তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছি। অভিযোগ সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল হোসেন বিদ্যুতের ওপর হামলার ঘটনায় বিবৃতি জানিয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদল।
Advertisement
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দৌলতদিয়াড়ের স্থানীয় যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের মাদকাসক্ত কতিপয় ক্যাডাররা বিদ্যুৎকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহাজান খাঁন এবং মোমিনুর রহমান মোমিন মালিতা এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জ্ঞাপন করছে।’
একইসঙ্গে বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনা না হলে পরবর্তীতে দুষ্কৃতকারীদের কোনো ক্ষতির বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ কোনো দায় নেবে না।’
হুসাইন মালিক/এফএ/এমএস