পুরুষ ক্রিকেটারদের মধ্যে তার ছাত্র অগণিত। সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালের মত দেশ বরেণ্য আর শীর্ষ ক্রিকেটাররা সালাউদ্দীনের শিষ্য। তার পরামর্শ মেনে চলেন, খেলেন। সেটা সবার জানা। তবে নারী ক্রিকেটারদের মধ্যেও যে মোহাম্মদ সালাউদ্দীনের ছাত্রী আছেন, তা অনেকেরই জানা ছিল না।
Advertisement
আজ সোমবার সে অজানা তথ্য জানা গেলো। বাংলাদেশ নারী দলের অন্যতম ব্যাটার শারমিন আকতার সুপ্তা জানিয়ে দিলেন, তিনি কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দীনের ছাত্রী। তার পরামর্শ মেনেই চলেন। খেলেন।
শুধু সুপ্তা একা নন, নারী ক্রিকেট দলের কোচিং প্যানেলে না থাকলেও শারমিন আকতার সুপ্তাসহ নারী ক্রিকেটারদের কেউ কেউ মোহাম্মদ সালাউদ্দীনের পরামর্শ নেন নিয়মিত। তার টিপস নিয়ে খেলেন।
শুধু কোচ সালাউদ্দীনের পরামর্শ মেনে খেলাই না, তার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগও রাখেন সুপ্তা। ব্যাটিং নিয়ে কথা হয় গুরু-শিষ্যের। সুপ্তার দূর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে করণীয়ও বাতলে দিচ্ছেন কোচ সালাউদ্দীন। সুপ্তার ব্যাটিংটা পাখির চোখে পরখ করে তাকে বাঁ-হাতি স্পিনের বিপক্ষে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে শটস খেলতে নিষেধ করে দিয়েছিলেন কোচ সালাউদ্দীন।
Advertisement
কিন্তু আজ আইরিশদের সাথে খেলার সময় কোচের সে পরামর্শ বেমালুম ভুলে বসেছেন। সেই বাঁ-হাতি স্পিনার এলমি ম্যাগুয়েরের বলেই ডাউন দ্য উইকেট গিয়ে আউট হয়েছেন সুপ্তা।
তার ধারণা, কোচ সালাউদ্দীন নির্ঘাত বকা দেবেন এজন্য। প্রথম খেলায় মাত্র চার রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেছেন। আজ সেঞ্চুরি করতে না পারলেও আউট হয়েছেন ৭২ রানে। ম্যাচ শেষ করে বিজয়ীনির বেশে সাজঘরে ফিরতে পারতেন সুপ্তা। কিন্তু আইরিশ বাঁহাতি স্পিনার এলমি ম্যাগুয়েরের বলে উইকেট ছেড়ে মারতে গিয়ে উইকেট দিয়ে এসেছেন।
সোমবার খেলা শেষে তাই সুপ্তার চিন্তা, ‘সালাউদ্দীন স্যার নিশ্চয়ই বকা দেবেন। আবার হয়তো তাদের সময় হলে হয়তো ফোন করে বকা দিতে পারেন। আজকে যেমন লেফট আর্মে আউট হয়েছি। লেফট আর্মে বের হতে নিষেধ করেছিলেন। টুকটাক টেকনিক্যাল বিষয়গুলো তিনি অবজার্ভ করতেছেন। অ্যাজ অ্যা কোচ, উনি তো আমাকে অবজার্ভ করেন।’
পাশাপাশি ফারজানা পিংকির সঙ্গে কথা হয় বলেও জানালেন শারমিন সুপ্তা। সবাইকেই টেকনিক্যাল পরামর্শ দেন সালাউদ্দীন, তা জানিয়ে সুপ্তার কথা, ‘আমরা তার (সালাউদ্দীন স্যারের) আন্ডারে যারা প্র্যাক্টিস করেছি, আমাদের টেকনিক্যাল বিষয়গুলো নিয়ে তার সঙ্গে কথা হয়।’
Advertisement
সুপ্তা বুঝিয়ে দিলেন, কোচ সালাউদ্দীন তার খেলার টেকনিকে পরিবর্তন এনেছেন এবং তাতে তার খেলার উন্নতি হয়েছে। উন্নতি যে হয়েছে, পরিসংখ্যানও তাই জানাচ্ছে। এক বছরের বেশি সময় পর মাঠে ফিরে আইরিশ নারীদের সাথে তিন ম্যাচে (৯৬, ৪৩ ও ৭২) ধারাবাহিকভাবে খুব ভাল খেলেছেন সুপ্তা।
জানিয়ে দিলেন, কোচ সালাউদ্দীনের প্রতি তার বিশ্বাস প্রচন্ড এবং তার পরামর্শ ও টেকনিক্যাল বিষয়ে পারফরমেন্সে উন্নতি ঘটেছে। প্রথমত হচ্ছে, ‘কোচের প্রতি বিশ্বাস থাকাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। স্যার যে কাজগুলো করিয়েছে, প্রথমত টেকনিক্যাল অনেক জিনিস চেঞ্জ করলে প্রথমে যে কোনো ব্যাটার নিতে চায় না। কারণ দীর্ঘদিন আপনি খেলার পর আপনার যদি টেকনিক্যাল কিছু পরিবর্তন করলে অনেক সময় আনইজি লাগে।’
‘আমার যে বিশ্বাস ছিল স্যারের প্রতি, উনি আমাকে যে ড্রিলটা করাতো, আমি খুব বিশ্বাস নিয়ে প্রসেসটা মেনে করার চেষ্টা করতাম। এখনও অনেক কিছু নিয়ে তর্ক হয়। আমাদের খেলা নিয়ে অনেক তর্ক হয়, অনেক আলোচনা হয়; কিন্তু হ্যাঁ, আমি অনেক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। স্যারের কাছে অনুশীলন করে আমার গেম সেন্স উন্নতি হয়েছে।’
এআরবি/আইএইচএস/