আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণায় মমতা, বললেন শান্তিরক্ষী পাঠাতে

বাংলাদেশে সৃষ্ট হওয়া অস্থির পরিবেশ সামলানোর জন্য জাতিসংঘের বিশেষ বাহিনী পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। সোমবার (২ ডিসেম্বর) বিধানসভা অধিবেশনে বক্তব্য দেওয়ার সময় এই আহ্বান জানান তিনি।

Advertisement

মমতা বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, তা নিয়ে আমি নাক গলাতে চাই না। এটা আমার এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না। এটা কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়। বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা যেন জাতিসংঘে উত্থাপন করে কেন্দ্রীয় সরকার। পড়শি দেশে জাতিসংঘের বিশেষ শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব পেশ করার আর্জিও জানান তিনি।

গত কয়েক দিন ধরে ভারতীয় গণমাধ্যমে চলমান বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণার পর  মমতা বিধানসভায় এই বক্তব্য নিয়ে এলেন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক উপদেষ্টা ভারতীয় গণমাধ্যম এবং সামাজিকমাধ্যমের উদ্দেশ্যমূলক বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণার প্রতিবাদ করে আসছেন। 

আরও পড়ুন: 

Advertisement

সংখ্যালঘু ইস্যুতে ভারতের মিডিয়া অপপ্রচার চালাচ্ছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশ ইস্যুতে যা বললেন কঙ্গনা রানাওয়াত ভারতে দলে দলে প্রবেশের চেষ্টার তথ্য সঠিক নয়: দ্য হিন্দু

মমতা বলেন, কয়েকদিন আগে আমাদের রাজ্যের প্রায় ৭৯ জন মৎস্যজীবী ভুল করে ঢুকে গিয়েছিলেন বাংলাদেশে। তাদের বাংলাদেশের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তারা এখনো মুক্তি পাননি। কেন্দ্রীয় সরকারকে বারবার বলেও কোনো লাভ হয়নি।

‘এই মুহূর্তে বাংলাদেশে জাতিসংঘের বিশেষ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা দরকার। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে যে ভারতীয়রা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের এই রাজ্যে ঠাঁই দিতে তৈরি আছি’ বলেও জানান তিনি। তাদের খাদ্যের কোনো অসুবিধা হবে না বলেও আশ্বাস দিয়েছেন মমতা।

বাংলাদেশ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী উষ্মাও প্রকাশ করেছেন। ক্ষোভের সুরে তিনি বলেন, ১০ দিন হয়ে গেলো, কিন্তু বিষয়টি নিয়ে চুপ করে আছে কেন্দ্রীয় সরকার। অথচ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দল প্রতিদিন মিছিল করছে।

আরও পড়ুন: 

Advertisement

বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? কলকাতায় চিকিৎসা নিতে যাওয়া বহু বাংলাদেশি বিপাকে শুধু ভারত নয়, সারা বিশ্বেই এখন সংঘবদ্ধভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে

‘সীমান্ত আটকে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাজ্য বিজেপি। কিন্তু এটা মাথায় রাখতে হবে যে সীমান্তের বিষয়টা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে। আর রাজ্য সরকার কেন্দ্রের পরামর্শ মেনেই চলবে।’

এদিকে বাংলাদেশের বিষয়ে সংসদে মোদী কিংবা জয়শংকরের বিবৃতি দেওয়া উচিত বলে দাবি করেছেন মমতা। তার বক্তব্য, এখন সংসদে অধিবেশন চলছে। তাই বাংলাদেশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দেওয়া উচিত। কূটনৈতিক বা অন্য কোনো কারণে যদি তিনি বিবৃতি না দেন, তাহলে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরের মুখ খোলা উচিত।

এদিকে, মমতার এই বক্তব্যের বিষয়ে অবস্থান জানতে চাইলে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, তার বক্তব্যকে আমি ‘মমতা ব্যানার্জী ধরনের বক্তব্য’ হিসেবেই দেখতে চাই। কারণ, তিনি এই বক্তব্য কেন দিলেন সেটি বুঝতে পারছি না।

ব্যক্তিগতভাবে আমি তার সঙ্গে পরিচিত। তার বাসায় আমার যাতায়াত ছিল। আমি মনে করি এটি তার জন্য সঠিক পদক্ষেপ নয়। রাজনীতিকরা তো রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেই বক্তব্য দিয়ে থাকেন। আমি মনে করি পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে এটি (বক্তব্যটি) হয়তো তাকে সহায়তা করবে। এটি আমার মত।

ডিডি/এসএএইচ