অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের ছেলে মুয়াজ আরিফের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মুয়াজের সাবেক স্ত্রী নীলা ইসরাফিল বাদী হয়ে রাজধানীর রমনা থানায় এ মামলা করেন। মামলায় নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন নীলা।
Advertisement
সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে মামলাটি রমনা থানায় নথিভুক্ত হয় বলে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ফারুক। মামলা নম্বর ২।
তিনি বলেন, নির্যাতনের অভিযোগে রমনা থানায় একজন ভুক্তভোগী নারী মামলার আবেদন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নারী নির্যাতন আইনে মামলা নেওয়া হয়েছে। মামলায় মুয়াজ আরিফ একমাত্র আসামি। তদন্ত সাপেক্ষে এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মামলায় অভিযুক্ত আসামি মুয়াজ আরিফ অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের ছেলে।
Advertisement
মামলা গ্রহণের আগে রমনা থানার সামনে নীলা সাংবাদিকদের বলেন, মুয়াজ আরিফের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছয় বছরের। আমি গতকাল (রোববার) রাত থেকে এই থানায় অবস্থান করছি৷ পুলিশ মামলা নিচ্ছিল না।
বাদীর ভাষ্য, গত ২৯ নভেম্বর (শুক্রবার) সন্ধ্যায় ঢাকা ক্লাবে নিয়ে আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছে মুয়াজ। সাবেক স্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও আমাকে সেক্সুয়ালি হ্যারাসমেন্ট, ব্যাড টাচ করেছে। পেটে চাকু মেরেছে। মাথায় আঘাত করেছে।
নীলা আরও বলেন, ২০২১ সালে ২৯ এপ্রিল আমাদের ডিভোর্স হয়েছে। কিন্তু মুয়াজ সেই ডিভোর্স মানতে চায়নি। সে আমার ওপর সমসময় অনধিকার চর্চার চেষ্টা করেছে।
নীলা ইসরাফিল
Advertisement
‘ডিভোর্সের পর আমাকে কারাগারে যেতে হয়। কারাগার থেকে বের হয়ে আমি ২০২১ সালে বড় মেয়েকে আটকে রাখার অভিযোগে রিট করছিলাম। সেই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের আদেশ ছিল বাচ্চা ছেলেটা আমার কাছে থাকবে। মাসিক ১ লাখ টাকা খরচা দেবে। কিন্তু বাচ্চাও পাইনি, খরচাও পাইনি। বড় মেয়েটা আমার কাছে থাকে।’
ঢাকা ক্লাবে কেন দেখা করতে গেলেন? জানতে চাইলে নীলা বলেন, আমি মুসলিম আইন অনুযায়ী সন্তানের অভিভাবকত্ব পাইনি। মাঝেমধ্যে দেখা করার অধিকার আমার আছে। আমার বড় বাচ্চা মানসিকভাবে অসুস্থ। সাইকিয়াট্রিস্ট চিকিৎসক বলেছেন তার সুস্থতার জন্য পারিবারিক আবহ দরকার। সেজন্য সুইমিং করাতে ঢাকা ক্লাবে যাই।
‘সেখানে আমার সাবেক স্বামী মুয়াজ তার এক বন্ধুর টোকেনে মেয়েকে সুইমিংয়ের ব্যবস্থা করে দেয়। আর হোটেলে রুম বুকিং করে। আমাকে সেই রুমে নিতে প্ররোচিত করে। আমি যেতে আগ্রহী ছিলাম না।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, কাল রাত (শনিবার) থেকে আমি থানায়। লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর পুলিশ যখন দেখে অভিযুক্ত ব্যক্তি মুয়াজ আরিফ উপদেষ্টা হাসান আরিফের ছেলে, তখন সবাই উঠে চলে যায়। মামলা নেয়নি। সকালেও নেয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
যদিও সোমবার দুপুরে মামলা নেওয়ার কথা জানিয়েছে রমনা থানা পুলিশ।
নীলা বলেন, আমাকে অফার করা হয়েছে মীমাংসার জন্য। মুয়াজের সঙ্গে আমার বিয়ে হয় ২০১৮ সালে। ডিভোর্স হয় ২০২১ সালে। আমি ন্যায়বিচার চাই। হাসান আরিফের সঙ্গে মীমাংসা বৈঠকেও বসতে রাজি। কিন্তু প্রতিটি অন্যায়, অবিচার ও নির্যাতনের বিচার হতে হবে। ২০১৮ সালের পর থেকে আজ পর্যন্ত যে সময় গেছে সেটা ফিরিয়ে দিতে হবে।
টিটি/এমকেআর/এমএস