সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোয় আক্রমণ চালিয়ে এর বেশিরভাগ অংশ দখলে নিয়েছে বিদ্রোহীরা। তাদের আক্রমণের মুখে শহরটি থেকে সাময়িকভাবে পিছু হটার কথা জানিয়েছে সিরীয় সেনাবাহিনী। দু’পক্ষের সংঘর্ষে এরই মধ্যে তিন শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন, প্রাণ বাঁচাতে ঘর ছাড়ছেন বহু বাসিন্দা।
Advertisement
আলেপ্পোয় এই আক্রমণের নেতৃত্ব দিচ্ছে হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) নামে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইরত গোষ্ঠীগুলির মধ্যে অন্যতম কার্যকর ও বিপজ্জনক গোষ্ঠী এটি।
২০১১ সালে আল-কায়েদার সরাসরি সহযোগী হিসেবে জাবহাত আল-নুসরা নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল গোষ্ঠীটি। এর প্রতিষ্ঠায় জড়িত ছিলেন আইএস নেতা আবু বকর আল-বাগদাদীও।
আরও পড়ুন>>
Advertisement
২০১৬ সালে গোষ্ঠীর নেতা আবু মুহাম্মদ আল-জৌলানি আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে নতুন সংগঠন গঠন করেন, যা পরবর্তীতে হায়াত তাহরির আল-শাম নামে পরিচিত হয়।
সিরিয়া কার নিয়ন্ত্রণে?সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকরের পর গত চার বছরে তেমন সংঘাত হয়নি। প্রেসিডেন্ট আসাদের সরকার দেশটির প্রধান শহরগুলো নিয়ন্ত্রণ করলেও কুর্দি সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্বাঞ্চলসহ কিছু অঞ্চলে তাদের সরাসরি কর্তৃত্ব নেই। দক্ষিণে কিছুটা অশান্তি হলেও সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর কার্যক্রম মূলত স্তিমিত ছিল।
বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিমের ইদলিব প্রদেশের প্রধান শক্তি হলো এইচটিএস। গত বুধবার তারা আলেপ্পোতে আকস্মিক আক্রমণ চালিয়েছে, যা সরকারের জন্য একটি বড় ধাক্কা হতে পারে।
অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন২০২০ সালে রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় সিরিয়ায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। তবে ইদলিবে কিছু সময় ধরে লড়াই চলছিল।
Advertisement
হায়াত তহরির আল-শাম দীর্ঘ সময় ধরে ইদলিবে নিজেদের শক্তি প্রতিষ্ঠা করেছে এবং স্থানীয় প্রশাসনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তাদের বৈধতা অর্জনে বাধা সৃষ্টি করেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলের হামলায় হিজবুল্লাহর অবস্থান কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে, যা সিরীয় বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর আচমকা সিদ্ধান্ত নিতে বড় ভূমিকা রেখেছে। বর্তমানে তাদের উদ্দেশ্য কী হবে, তা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। তবে আলেপ্পোতে আকস্মিক আক্রমণ তাদের পরিকল্পনার পরিবর্তনকে নির্দেশ করছে।
সূত্র: বিবিসিকেএএ/