নিউইয়র্কে উইমেন্স এন্টারপ্রেনার অ্যাওয়ার্ডস পেয়েছেন নারী উদ্যোক্তা আম্বিয়া বেগম। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) লাগোর্ডিয়া এয়ারপোর্ট ম্যারিয়ট বলরুমে ইউএস বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ইউএসবিসিসিআই) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
Advertisement
জানা গেছে, আম্বিয়া বেগম এম্পাওয়ারিং ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট ইনকের (ইডিপি) প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী পরিচালক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসীদের জন্য অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আম্বিয়া বলেন, ইডিপি হলো নারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির একটি প্ল্যাটফর্ম, যা তাদের সফল হওয়ার জন্য কর্মসংস্থান এবং সহায়তা দিয়ে থাকে। ব্যক্তিগত উন্নয়ন থেকে শুরু করে পেশাদার দক্ষতা-নির্মাণ পর্যন্ত, আমরা নারীদের স্বপ্ন পূরণে এবং সমাজে অর্থপূর্ণ অবদান রাখতে সাহায্য করে।
তিনি বলেন, ইডিপিতে মূলত অফিসের কাজ, ব্যবসা পরিচালনা এবং স্ব-শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কম্পিউটার দক্ষতা শেখানো হয়। কোর্সগুলো মৌলিক কম্পিউটার সাক্ষরতা থেকে শুরু করে সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশনও করা হয়, যা দেশটির কর্মক্ষেত্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
Advertisement
শেখ ফরহাদ এবং মিলি এ ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় ইউএসবিসিসিআই উইমেনস এন্টারপ্রেনার সামিট এবং অ্যাওয়ার্ডস ২০২৪-এর বিভিন্ন সেশন পরিচালনা করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন নাজমুল হাসান, ডেপুটি কনসাল জেনারেল, বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, নিউইয়র্ক।
নাজমুল হাসান বলেন, ইউএসবিসিসিআই উইমেন্স এন্টারপ্রেনার সামিট এবং অ্যাওয়ার্ডস ২০২৪ বাংলাদেশি নারীদের জন্য একটি অনন্য উদ্যোগ, যা তাদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করবে। এই ধরনের ইভেন্ট নারীদের ব্যবসায়িক জগতে প্রবেশের পথ সুগম করে এবং তাদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনাকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরে। আমি ইউএসবিসিসিআই এবং এর নেতৃত্বকে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানাই।
নির্বাহী উপদেষ্টা জেনি লো বলেন, ইউএসবিসিসিআইয়ের এই উদ্যোগ অসাধারণ। এই সামিট এবং অ্যাওয়ার্ডস শুধু নারীদের উদ্ভাবনী ধারণাগুলোকে তুলে ধরেনি বরং তাদের ব্যবসায়িক প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এম্পায়ার স্টেট ডেভেলপমেন্ট সবসময় এই ধরনের উদ্যোগকে সমর্থন করে এবং আমি আশা করি, এটি আরও নারীদের অনুপ্রাণিত করবে এবং তাদের লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করবে।
তিনি বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এই সামিট একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করেছে। যেখানে উদীয়মান উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে অভিজ্ঞ পেশাদারদের একত্রিত করেছে।
Advertisement
ইভেন্টটি তিনটি মূল দিককে ঘিরে তৈরি করা হয়েছে: নেটওয়ার্কিং: অংশগ্রহণকারীরা সহকর্মী, পরামর্শদাতা এবং সম্ভাব্য ব্যবসায়িক অংশীদারদের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে পেশাদার সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ পেয়েছেন।
ব্যক্তিগত ও পেশাগত উন্নয়ন: সেশনগুলোতে কর্মজীবন এবং ব্যক্তিগত অগ্রগতির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে, যা নারীর ক্ষমতায়নের সামগ্রিক পদ্ধতির প্রতিফলন।
ইভেন্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল উইমেন্স এন্টারপ্রেনার অ্যাওয়ার্ডস ২০২৪, যা নারী উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়িক নেতাদের উদ্ভাবন, নেতৃত্ব এবং সামাজিক অবদানের জন্য স্বীকৃতি দেয়।
এ সময় পুরস্কার দেওয়া হয়, সোনিয়া চাঁদনী – মালিক, বিরাসত, ডা. দিলরুবা চৌধুরী – লেখক, ‘ব্লু ইকোনমি: বাংলাদেশের সামুদ্রিক নবায়নযোগ্য শক্তির সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জ ‘নাজনীন মির্জা – সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও, মির্জা রিয়েল এস্টেট অ্যাডভাইজার্স আম্বিয়া বেগম – প্রতিষ্ঠাতা ও সচিব, এমপাওয়ারিং ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট ইনক। সাবরিনা আহমেদ – সিইও, সাহেলিয়াজ বাই লিয়া ইনক। রোজি ইসলাম – রিপারেটিভ, এলমহার্স্ট মেডিকেল, অ্যাফিনিটি অ্যাবস্ট্রাক্ট, উম্মাহ গিভিং সার্কেল জিন্নাথ জাহান – সিইও, দীন ফ্যাশন ইনক। ফাতেমা আক্তার – কসমেটোলজিস্ট এবং মেকআপ আর্টিস্ট। উমামা সিদ্দিকা – প্রতিষ্ঠাতা, অনলাইন কুরআন স্কুল, নিউইয়র্ক। সেলিনা আক্তার – সামাজিক উদ্যোক্তা। সারা পারভেজ – সহযোগী অ্যাটর্নি, জন এফ. কারমানের আইন অফিস। ভাবলীন সবরওয়াল – ম্যানেজিং পার্টনার, ভাবলীন সবরওয়ালের আইন অফিস। স্নিগ্ধা কুন্ডু মিস্টি – প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন, গ্লোমেন সিআইসি মিলি এ ভূয়ান – ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক ডমিনোজ
ইউএসবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট তোফাজ্জল লিটন বলেন, ইউএসবিসিসিআই উইমেন্স এন্টারপ্রেনার সামিট এবং অ্যাওয়ার্ডস ২০২৪ একটি অসাধারণ উদ্যোগ যা নারী নেতৃত্ব এবং উদ্ভাবনের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এই ইভেন্টটি শুধু নারীদের ক্ষমতায়ন নয় বরং তাদের উদ্যোগ এবং উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে সামনে নিয়ে আসার একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করেছে। আমরা গর্বিত যে আমরা এমন একটি মঞ্চ তৈরি করতে পেরেছি, যা নারী উদ্যোক্তাদের স্বীকৃতি, সমর্থন এবং উন্নয়নের সুযোগ দেয়। ভবিষ্যতে আমরা এই ধারা আরও জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এমআরএম/এমএস