ফরিদপুরে খেজুরের গুড় তৈরিতে ব্যস্ত গাছিরা। অগ্রহায়ণ মাস থেকেই তাদের ব্যস্ততা বাড়ে। গাছিদের তৈরি ভেজালমুক্ত ও সুস্বাদু গুড় জেলার চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায়। মান ঠিক রাখতে গাছি ও তরুণ উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরিদপুরের খেজুরের গুড় ও পাটালির খ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে। এটি কিনতে ভিড় করেন অন্য এলাকার মানুষও। জেলার চাহিদা মিটিয়ে এ গুড় যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। প্রতি কেজি গুড় বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা দরে।
ফরিদপুর শহরের তাম্বুলখানাজুড়ে দেখা মেলে এ কর্মযজ্ঞ। কাক ডাকা ভোরে খেজুরের রস সংগ্রহ করতে বেরিয়ে পড়েন গাছিরা। খেজুর গাছ থেকে নামিয়ে আনেন রস ভর্তি হাঁড়ি। এরপর তা নিয়ে ছোটেন চুলার কাছে। টিনের বড় পাত্রে (তাফাল) রস ঢেলে জ্বাল দিয়ে শুরু হয় গুড় তৈরির প্রক্রিয়া। আস্তে আস্তে রস শুকিয়ে রূপ নেয় সুস্বাদু খেজুর গুড়।
গাছি গফফার শেখ বলেন, আগের দিন বিকেলে খেজুর গাছ কেটে হাঁড়ি বসানো হয়। পরের দিন ভোরবেলা রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়। উৎপাদিত গুড় বাজারে বিক্রির পাশাপাশি স্থানীয়দের কাছেও বিক্রি করা হয়।
Advertisement
গুড় কিনতে আসা ক্রেতা মিজানুর রহমান বলেন, বাজারের গুড়ে বেশিরভাগই ভেজাল। ভেজালমুক্ত গুড় চেনা বড় দ্বায়। তাই ভেজালমুক্ত রস ও গুড় নেওয়ার জন্য গাছি ও উৎপাদনকারীদের কাছে ছুটে আসা। ঐতিহ্য ধরে রাখতে নিজ উদ্যোগে প্রায় ৬০০ খেজুরের গাছ কিনেছেন তরুণ উদ্যোক্তা এনামুল হাসান গিয়াস। তিনি বলেন, রাজশাহী ও যশোরসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গাছিদের এনে ভেজালমুক্ত গুড় তৈরির কর্মযজ্ঞ শুরু করেছেন। এতে খরচ বেড়ে যায়। তবে ভেজালমুক্ত গুড় তৈরি করছেন।
ফরিদপুর সদরের কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ফরিদপুরে ছোট-বড় দেড় লাখের বেশি খেজুর গাছ রয়েছে। দেশের অনেক জায়গাতেই ভেজাল গুড় তৈরি হয়। তবে ফরিদপুরের তরুণ উদ্যোক্তাদের মধ্যে এ প্রবণতা নেই। তাই খেজুর গাছ লাগানোর পাশাপাশি তাদের নানা বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এন কে বি নয়ন/জেডএইচ/এএসএম
Advertisement