চলতি সপ্তাহে টানা ভারী বৃষ্টির কারণে মালয়েশিয়ার ছয়টি রাজ্যে বন্যায় ৩৭ হাজারেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
Advertisement
সংসদে আনোয়ার জানান, কেলান্তান, তেরেঙ্গানু, কেদাহ, পারলিস, জোহর এবং পেরাক রাজ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৩২২টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বার্নামা জানিয়েছে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য কেলান্তান, যা থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী, বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কেলান্তানে ৯ হাজার ২২৩টি পরিবারের ৩০ হাজার ৫৮২ জন মানুষ এই দুর্যোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
মালয়েশিয়ার পূর্ব উপকূলে অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত বার্ষিক বর্ষা মৌসুমে বন্যা একটি সাধারণ ঘটনা। প্রতি বছরই এই সময়ে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হন।
Advertisement
মালয়েশিয়ার আবহাওয়া বিভাগ বুধবার কেলান্তান, পাহাং এবং তেরেঙ্গানু রাজ্যে অবিরাম ভারী বৃষ্টির জন্য ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে। এটি বিপজ্জনক মাত্রার বৃষ্টিপাতের সতর্কবার্তা এবং শুক্রবার পর্যন্ত এই বৃষ্টি চলতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার জানান, জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য পর্যায়ের সব সংস্থা সক্রিয়ভাবে বন্যাকবলিতদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে। বর্ষা মৌসুমজুড়ে উদ্ধার কার্যক্রম এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
কেলান্তান এবং তেরেঙ্গানুতে চলমান বন্যা পরিস্থিতি ২০১৪ সালের ভয়াবহ বন্যাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আহমদ জাহিদ হামিদি এই পূর্বাভাসের কথা জানিয়েছেন, যা মালয়েশিয়ার আবহাওয়া বিভাগের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বন্যা দুর্যোগ মোকাবিলা সংক্রান্ত জরুরি বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে জাহিদ হামিদি বলেন, ‘এই বছরের বন্যা ২০১৪ সালের তুলনায় আরও ভয়াবহ হতে পারে।’
Advertisement
তিনি জানান, আগামী সপ্তাহে পূর্ব উপকূলে স্প্রিং টাইড বা অতি জোয়ারের ঘটনা ঘটবে, যা বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ করবে। নদীর পানি সাগরে মিশতে না পারায় প্লাবন বাড়তে পারে।
জাহিদ হামিদি আরও বলেন, ‘যদিও প্রাথমিক পর্যায়ে পাহাং ও জোহরে বন্যা দেখা দেয়নি, তবে ডিসেম্বরের শুরুতে ভারী বৃষ্টির কারণে এই রাজ্যগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।’
তিনি ব্যাখ্যা করেন, তেরেঙ্গানুর নদীর পানি পাহাংয়ে এবং পাহাংয়ের নদীর পানি জোহরে প্রবাহিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। তবে আমাদের বর্তমান অগ্রাধিকার কেলান্তান এবং তেরেঙ্গানু।
এমআরএম/জিকেএস