নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে সামগ্রিকভাবে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির আহ্বানও জানিয়েছে দলটি।
Advertisement
বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর হেয়ার রোডে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
গত কয়েকদিনের ঘটনাবলি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সমস্যার দ্রুত সমাধানে ব্যাবস্থা নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আজকে আমাদের আসার মূল উদ্দেশ্য ছিল, সাম্প্রতিক উদ্ভূত পরিস্থিতি বিশেষত কয়েকদিন ধরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ইসকন পরিস্থিতি, ছাত্রদের কয়েকটি কলেজের সমস্যা এই বিষয়গুলো নিয়ে দলের পক্ষ থেকে যে উদ্বেগ সেটা প্রধান উপদেষ্টাকে জানানো।
তিনি বলেন, আমরা আশা করেছি, প্রধান উপদেষ্টা তিনি তার উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে দ্রুত এসব সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের ব্যবস্থা করবেন এবং দেশে যেন কোনো রকমের অবস্থা সৃষ্টি না হয় যে অবস্থার মধ্য দিয়ে বিভাজন সৃষ্টি হবে।
Advertisement
আরও পড়ুন
নিজের ঘরেই বিভাজন থাকলে কোনো কিছুই সম্ভব নয়: ফখরুলসংকট সমাধানে জনসমর্থিত সরকার প্রয়োজন: ফখরুলমির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বলে এসেছি, এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। আমাদের সামনে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য বিশেষত যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়ায় অথবা দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতে চায় তাদের প্রতিহত করতে অবশ্যই জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। সেই কথাগুলো আমরা বলে এসেছি।
‘সামগ্রিকভাবে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির জন্য আমরা আহ্বান জানিয়েছি।’
এদিন সন্ধ্যায় ৬টায় যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধিদলের এ বৈঠক হয়। বৈঠকে বিএনপির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলে ফখরুল ছাড়াও ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাউদ্দিন আহমেদ।
Advertisement
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাসান আরিফ, আদিলুর রহমান খান ও মাহফুজ আলম ছিলেন।
এক ঘণ্টারও বেশি সময়ের বৈঠকে দেশের দ্রব্যমূ্ল্য পরিস্থিতিতে জনদুর্ভোগ, এলাকাভিত্তিক টিসিবির ট্রাকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বিক্রি বাড়ানো, সারাদেশে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখা এবং কৃষিতে সার সরবরাহ, শিল্প উৎপাদন স্বাভাবিক রাখা বিশেষত শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়মিত রাখা, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দায়ের করা বিএনপিসহ বিরোধীদলের ওপর সব মিথ্যা মামলা দ্রুত প্রত্যাহার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, কৃষিতে বিশেষত সার বিতরণের ক্ষেত্রে এখনো ফ্যাসিস্টদের দোসররা নিয়ন্ত্রণ করছে। সেগুলো জনগণের পক্ষে যারা আছে তাদের কাছে নিয়ে আসার কথা বলেছি।
আরও পড়ুন
‘ষড়যন্ত্র’ নিয়ে বিএনপির আশঙ্কার নেপথ্যে কী?নির্বাচিত সরকারই দেশ পুনর্গঠন করতে পারে: তারেক রহমানবিএনপি মহাসচিব বলেন, সারাদেশে ইউনিয়ন পরিষদ যেগুলো আছে সেগুলো ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে জবরদস্তিমূলক নির্বাচন করে তাদের মতো করে করেছিল। আমরা মনে করি সিটি করপোরেশন ও উপজেলা পরিষদ যেভাবে ভেঙে দেওয়া হয়েছে একই ভাবে ইউনিয়ন পরিষদগুলোও ভেঙে দিয়ে পরবর্তী নির্বাচনগুলো করা দরকার।
‘একইভাবে ট্রেড বডিগুলো ভেঙে দিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে এসব পুনরায় সুষ্ঠুভাবে নিয়ে আসার জন্য আমরা বলেছি।’
দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপের দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনের প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়ার কথা আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি। আমরা বলে এসেছি, এটি অত্যন্ত জরুরি।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আমাদের বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শুনেছেন। আমরা বিশ্বাস করি উনারা এসব বিষয় গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।
কেএইচ/এমকেআর/জেআইএম