খেলাধুলা

বয়স চুরির অভিযোগ, যা বললেন বৈভবের বাবা

বয়স মাত্র ১৩ বছর ৮ মাস। এই বয়সেই বৈভব সূর্যবংশী দল পেয়ে গেলেন আইপিএলে! ভারতীয় ফ্র্যাঞ্চাইজির ইতিহাসেও যা রেকর্ড। এর আগে এত কম বয়সে দল পাননি আর কোনো ক্রিকেটার।

Advertisement

দুই দিনের নিলাম অনুষ্ঠানের শেষ দিন গতকাল সোমবার বৈভবকে দলে ভিড়িয়েছে রাজস্থান রয়্যালস। দিল্লি ক্যাপিটালসের সঙ্গে একরকম কাড়াকাড়ি করে এই ব্যাটারকে দলে নিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। ভিত্তিমূল্য ৩০ লাখ রুপি হলেও দুই দলের দর কষাকষিতে শেষ পর্যন্ত বৈভবের দাম উঠেছে ১ কোটি ১০ লাখ রুপি।

যখন নিলামে নাম নিবন্ধন করেন বৈভব, তখন থেকেই শুরু হয় আলোচনা। যদিও এক বছরে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে মোট ৪৯টি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েই মূলত প্রথমবার আলোচনায় এসেছিলেন ভারতের বিহার রাজ্যের এই ক্রিকেটার।

কিন্তু মাত্র ১৩ বছর বয়সী একজন ক্রিকেটার কীভাবে এতটা ভালো খেলতে পারেন, তা নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে কৌতুহল তৈরি হয়েছে। ঘুরছে কিছু উত্তর না জানা প্রশ্নও। আসলেই কি বৈভবের প্রকৃত বয়স ১৩? নাকি জালিয়াতি বা বয়স চুরির কোনো ঘটনা আছে? গুঞ্জন আছে, বৈভবের প্রকৃত বয়স ১৫।

Advertisement

বৈভব নিলামে বিক্রি হওয়ার পর বাবা সঞ্জীব সূর্যবংশীর কাছে ফোন করে ভারতীয় বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট ইন্ডিয়া (পিটিআই)। সঞ্জীবের কাছে অনুভূতি জানতে চাওয়া হয়। এক পর্যায়ে বৈভবের বয়স নিয়েও তাকে প্রশ্ন করে পিটিআই।

জবাবে বৈভবের বয়স নিয়ে বিতর্ক উড়িয়ে দেন সঞ্জীব। তিনি বলেন, ‘যখন তার বয়স সাড়ে ৮ বছর, তখন সে প্রথমবার বিসিসিআইয়ের (ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা) হাড় পরীক্ষার জন্য যায়। ইতিমধ্যে ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলেও খেলেছে সে। আমরা (বয়স নিয়ে কোনো ইস্যুতে) কাউকে ভয় করি না। (প্রয়োজনে) সে আবারও বয়স পরীক্ষা দেবে।’

দল যেহেতু পেয়ে গেছেন, তাই রাজস্থান না খেলালেও বৈভবকে ১ কোটি ১০ লাখ রুপি দেবে। ১৩ বছর বয়সী একজন কিশোরের কাছে এটি বিশাল অংকের অর্থ। এত পরিমাণ অর্থ দিয়ে আসলে বৈভব কী বুঝবেন এমন প্রশ্নও করা হয়। কথিত আছে, অর্থ হাতে পেলে উঠতি বয়সী কিশোররা নেতিবাচক বিভিন্ন কিছুতে ঝুঁকে পড়েন।

জবাবে সঞ্জীব বলেন, ‘সে শুধু ক্রিকেট খেলতে চায়। আর কিছু না। কয়েক বছর আগে সে ডোরেমনকে (কার্টুন সিনেমার চরিত্র) ভালোবাসতো।আর কিছু নয়।’

Advertisement

সাফল্য চোখে পড়লেও এর পেছনে সংগ্রামের কতশত গল্প লুকানো থাকে, তা হয়তো অনেকেই জানেন না। বৈভবের ক্রিকেট যাত্রাও ছিল বিচিত্র্য ও সংগ্রামের। ছেলের স্বপ্ন পূরণে কৃষি জমি বিক্রি করেছিলেন বাবা সঞ্জীব। তখন বৈভবের বয়স ১০ বছর।

বাবাকে হতাশ করেননি বৈভব। ৩ বছর না যেতেই বাবার হাতে তুলে দিলেন পুরস্কার। পিটিআইয়ের সঙ্গে কথা সময় গর্বিত বাবার কণ্ঠে শোনা যায়, আবেগের সুরও।

সঞ্জীব বলেন, ‘সে এখন শুধু আমার সন্তান নয়, পুরো বিহারের সন্তান।’

অর্থ সংকট কাটানোর জন্য জমি বিক্রি করেছেন ঠিকই। কিন্তু জমি বিক্রির অর্থ আরও কতদিনই বা থাকে? যে কারণে এখনো সংকট থেকে বের হতে পারেননি সঞ্জীব। বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি জমি বিক্রি করেছি। কিন্তু এখনো আর্থিক সংকট রয়ে গেছে।’

এমএইচ/জেআইএম