হেমন্তের শেষে এসে শীত পড়তে শুরু করেছে। আর শীতে পিঠা হবে না তা ভাবাই যায় না। বিশেষ করে বিভিন্ন এলাকায় পিঠা বিক্রি শুরু করেন অনেকে। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। চিতই-ভাপাসহ নানা পদের পিঠা বিক্রি হয়। ঝালকাঠি শহরেও এর ব্যতিক্রম দেখা যায়নি।
Advertisement
শুধু ঝালকাঠিই নয়, নলছিটি, রাজাপুর ও কাঠালিয়াতেও অলিগলি, পাড়া-মহল্লা ও হাটবাজারে পিঠাপুলির পসরা সাজিয়ে বসেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। তাদের বাহারি সব পিঠাপুলি নজর কাড়ছে। পড়ন্ত বিকেল থেকে শুরু করে সন্ধ্যা হয়ে বেশ রাত পর্যন্ত বিক্রির ধুম পড়ে। সন্ধ্যার পর থেকেই অলিগলি ও রাস্তার পাশের দোকানগুলোতে দাঁড়িয়ে বা বসে লাইন দিয়ে পিঠা খেতে দেখা যায়।
শীত মৌসুমে বাড়িতে পিঠাপুলি বানানোর আয়োজন গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে ঘরে ঘরে পিঠাপুলির আয়োজন এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। ব্যস্ততা ও পারিপার্শ্বিক সমস্যায় নিজ হাতে পিঠা তৈরির আয়োজন কমে গেলেও পিঠাপ্রীতি ও ভোজন থেমে নেই। মানুষ এখন দোকানের পিঠার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
শহরের পুরাতন স্টেডিয়াম এলাকার পিঠা বিক্রেতা মজিবুর রহমান (৫৫) জানান, প্রতিদিন ১২-১৩ কেজি চালের পিঠা বিক্রি করেন তিনি। এতে দিনে এক থেকে দেড় হাজার টাকা আয় হচ্ছে তার।
Advertisement
মজিবুর রহমান চিতই পিঠার জন্য নেন পাঁচ টাকা। আর ভাপা পিঠা ১০ টাকা। চিতই পিঠার সঙ্গে শুঁটকি, মরিচ, শর্ষে ভর্তা থাকে।
রাজাপুর শহরের বাইপাস মোড়ের পিঠা বিক্রেতা মো. আব্দুস সালাম বলেন, বছরের এই সময়ে শীতের পিঠা বেশি বিক্রি হয়। বর্তমানে চিতই ও ভাপা পিঠা তৈরি করছি। এই ব্যবসায় আগে ভালো লাভ পাওয়া গেলেও এখন সবকিছুর দাম অতিরিক্ত হওয়ায় লাভ তেমন নেই। তবে যা উপার্জন হয়, তাও একেবারে কম না।
চিতই পিঠা খেতে আসা পাশের একটি বাস কাউন্টারের পরিচালক মো. রায়হান বলেন, শীতে চুলার পাশে বসে পিঠা খাওয়ার যে ছবি আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে, এখন তা দেখা পাওয়া সম্ভব নয়। রাস্তার পাশে পিঠা বিক্রি হওয়ায় পিঠা খাওয়ার সুযোগ পাওয়া যায়।
রাজাপুর উপজেলার বাঘরি বাজারের পিঠা বিক্রেতা মো. পান্নু হাওলাদার বলেন, আগে রিকশা চালাতাম। পাঁচ বছর যাবত এখানে পিঠা বিক্রি করছি। প্রতিদিন ২৫০-৩০০ পিস পিঠা বিক্রি হয়। সব খরচ বাদে প্রতিদিন গড়ে ৭০০ টাকা লাভ হয়। এতেই চলে সংসার।
Advertisement
মো. আতিকুর রহমান/জেডএইচ/এমএস