মাত্র ১২০ টাকায় মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে রাজবাড়ীতে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে ৩১ জন তরুণ-তরুণীকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে। এরমধ্যে ৮ নারী ও ২৩ জন পুরুষ সদস্য রয়েছেন। এছাড়া ৫ জনকে রাখা হয়েছে অপেক্ষমান তালিকায়।
Advertisement
রোববার (২৪ নভেম্বর) রাত সোয়া ৯টায় রাজবাড়ী পুলিশ লাইনস ড্রিল শেডে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ এবং ফুল দিয়ে তাদের অভিনন্দন জানান রাজবাড়ী পুলিশ সুপার (এসপি) মোছা. শামিমা পারভীন।
এ সময় খুশিতে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন নির্বাচিত পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। আবেদন ফি ১২০ টাকা ছাড়া আর কোনো টাকা না লাগায় পুলিশ সুপারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তারা।
জানা গেছে, রাজবাড়ীতে ৩১টি শূন্য পদের বিপরীতে অনলাইনে ১২০ টাকায় ২ হাজার ৩৩ জন তরুণ-তরুণী পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে আবেদন করেন এবং যাচাই বাছাই শেষে ৩৫৪ জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। এরমধ্যে থেকে ১০৭ জন পরীক্ষার্থী কৃতকার্য হন। পরবর্তীতে মৌখিক পরীক্ষা শেষে প্রাথমিকভাবে ৩১ জনকে চূড়ান্ত ও ৫ জনকে অপেক্ষমান তালিকায় রাখা হয়েছে। নির্বাচিতদের মধ্যে এতিম, সিকিউরিটি গার্ড, ভিক্ষুক, চায়ের দোকানী, শ্রমিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করা পরিবারের সন্তানরা রয়েছেন।
Advertisement
পরীক্ষায় নির্বাচিত রহিম বিশ্বাস বলেন, আমার বাবা একজন দিনমজুর। যখন যে কাজ পান সেই কাজ করেন। আমি নানা বাড়িতে থেকে বড় হয়েছি। আজ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ১২০ টাকায় আমার চাকরি হয়েছে। আমি মেধা তালিকায় প্রথম হয়েছি। এই চাকরি পেয়ে আমার যেমন আনন্দ লাগছে, তেমনি আমি উপকৃত হয়েছি। ধন্যবাদ পুলিশ সুপারকে।
মাছুমা আক্তার বৈশাখী বলেন, আমার বাবা একজন রিকশাচালক। টিউশনি করে আমি আমার পড়াশুনা চালিয়েছি এবং খুব কষ্ট করে বড় হয়েছি। পুলিশের চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেখে আমি ১২০ টাকা দিয়ে আবেদন করি, আজ চাকরি পেয়েছি। খুব ভালো লাগছে।
ভ্যানচালক মিরাজ শেখ বলেন, ভ্যান চালিয়ে মেয়েকে মানুষ করে পুলিশে চাকরি দিতে পারছি। খুব খুশি হয়েছি। একটা টাকাও লাগে নাই।
রাজবাড়ী পুলিশ সুপার (এসপি) মোছা. শামিমা পারভীন বলেন, রাজবাড়ীতে পরীক্ষায় যারা অংশগ্রহণ করেছে তাদের মধ্যে থেকে ৩১ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে। মাত্র ১২০ টাকায় অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীর সদস্য হওয়ার সুযোগ লাভ করেছে। নির্বাচিতদের মধ্যে বিভিন্ন পেশার মানুষের সন্তান রয়েছে। যারা আজ মেধা ও সম্পূর্ণ যোগ্যতা ভিত্তিতে এই পর্যন্ত এসেছে। এখন নিশ্চয় তাদের সন্তানরা তাদের ভালো রাখবে।
Advertisement
এ সময় নিয়োগ বোর্ডের সদস্যসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রুবেলুর রহমান/এফএ/জিকেএস