বাংলা ভাষায় একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন ‘বাংলাদেশ টেলিভিশন’। প্রতিষ্ঠানটি সমপ্রচারের ৫০ বছর অতিক্রম করলো আজ। এ উপলক্ষে আজ থেকে শুরু হচ্ছে সপ্তাহব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা।রাজধানীর রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন চত্বরে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ অতিথি থাকবেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী ও তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ এমপি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন তথ্য সচিব মরতুজা আহমদ।বিটিভির উপমহাপরিচালক (অনুষ্ঠান) বাহার উদ্দিন খেলন জানান, আজ বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠানটি শুরু হবে। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিটিভির নবনির্মিত ১২ তলা ভবন উদ্বোধন করবেন এবং বিটিভির সুবর্ণজয়ন্তী স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করবেন। সুবর্ণজয়ন্তী সংগীতের পর স্বাগত বক্তব্য রাখবেন বিটিভির মহাপরিচালক আবদুল মান্নান। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখবেন বিটিভির প্রথম মহাপরিচালক জামিল চৌধুরী এবং বিটিভির প্রথম কণ্ঠশিল্পী ফেরদৌসী রহমান।প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর দেখানো হবে বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র ‘ডিআইটি থেকে রামপুরা’। সবশেষে অনুষ্ঠিত হবে দেশের স্বনামধন্য শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে বিটিভির উদ্যোগে বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন জেলা পর্যায়ের তৃণমূল শিল্পীদের নিয়ে আয়োজিত প্রতিযোগিতার শিল্পীদের নিয়ে থাকবে বিশেষ পরিবেশনা। এসব শিল্পী রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করবেন দেশবরেণ্য রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার সঙ্গে। অন্যদিকে নজরুলসংগীতে নেতৃত্ব দেবেন বিশিষ্ট নজরুলসংগীত শিল্পী সুজিত মোস্তফা। বিটিভির এ ভিন্ন আয়োজন এবারই প্রথম বলে জানালেন উপমহাপরিচালক অনুষ্ঠান।তিনি বলেন, বিটিভির সমপ্রচারের ৫০ বছর পূর্তিতে এবারই এমন একটি ভিন্নধর্মী পরিবেশনা থাকছে। এছাড়া আরও ভিন্নভাবে আয়োজন থাকছে সাত দিনব্যাপী নানারকম অনুষ্ঠান সমপ্রচারের মাধ্যমে। এ অনুষ্ঠানগুলো হলো- সাত দিন সাতটি বিশেষ নাটক, যেগুলোয় দেশের বিখ্যাত অভিনয়শিল্পীদের উপস্থিতি থাকবে। এছাড়া সাত জন বরেণ্য সংগীতশিল্পীর পরিবেশনায় সাত দিনের সংগীতানুষ্ঠান, বিশেষ ব্যক্তিত্বদের নিয়ে সাত দিন আড্ডার অনুষ্ঠান, সংবাদকর্মীদের নিয়ে বিশেষ আড্ডার অনুষ্ঠান, ক্যামেরা ও মঞ্চের পেছনের কলাকুশলীদের নিয়েও থাকবে বিশেষ অনুষ্ঠান। পাশাপাশি ব্যান্ডশো, নৃত্যানুষ্ঠানসহ থাকছে সাত দিনব্যাপী নানা আয়োজন।উল্লেখ্য, ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান টেলিভিশন করপোরেশন নামে যাত্রা শুরু আজকের বাংলাদেশ টেলিভিশনের। এক সময়কার ডিআইটি বর্তমানের রাজউক ভবন থেকে এর সমপ্রচার হতো চার ঘণ্টার জন্য। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর এর নামকরণ হয় বাংলাদেশ টেলিভিশন। ১৯৮০ সালে বিটিভি রঙিন যুগে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে বাংলাদেশ টেলিভিশনের পূর্ণাঙ্গ টেলিভিশন কেন্দ্র ২টি। একটি ঢাকার রামপুরায়, অন্যটি চট্টগ্রামে। রামপুরা টেলিভিশন কেন্দ্রটি স্থাপিত হয় ১৯৭৫ সালে। ২০০৪ সালে বিশ্বব্যাপী সমপ্রচারের জন্য বিটিভি ওয়ার্ল্ড নামে উপগ্রহভিত্তিক একটি চ্যানেল স্থাপন করা হয় এবং সর্বশেষ সংযোজন হচ্ছে সংসদ টেলিভিশন। ১৯৬৪ থেকে ২০১৪ দীর্ঘযাত্রা বিটিভির। একটি দু’টি বছর করে বিটিভি পাড়ি দিয়েছে ৫০টি বছর। আর সেজন্যই উদযাপিত হতে যাচ্ছে বিটিভির সুবর্ণজয়ন্তী।
Advertisement