বাংলাদেশ সরকারের নিবন্ধিত ‘হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশ’ (এইচসিএসবি) নামের একটি মানবিক সেবা সংস্থা এক কোটি টাকার ত্রাণ সহায়তা বিতরণ শুরু করছে মিশরে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের মাঝে।
Advertisement
শনিবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানী কায়রোর আব্বাসিয়া বুর্জ আল থাতবিকিন সম্মেলন কক্ষে ২০০ ফিলিস্তিনি শরণার্থী পরিবারের মাঝে ১৫ দিনের খাবার, শীতের কম্বল, শিশুদের খেলনা ও চকলেট বিতরণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু হয় তাদের কার্যক্রম। এতে উপস্থিত ছিলেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ।
এছাড়াও দূতাবাসের কাউন্সিলর মো. ইসমাইল হোসেন, দ্বিতীয় সচিব আতাউল হক, মানবিক সেবা সংস্থাটির পরিচালক নওমুসলিম মুহাম্মদ রাজ, নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি ড. মশিউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইব্রাহিম খলিল, স্বাস্থ্যবিষয়ক পরিচালক মাওলানা ইমরান নাফিস ও কার্যনির্বাহী সভাপতি, মুফতী তাওহিদুল ইসলাম।
এর আগে মিশর সফররত সংস্থাটির প্রতিনিধি দলটি নিজ নিজ কার্যালয়ে বৈঠক করেন কায়রোস্থ ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত দিয়াব আল্লু ও বাংলাদেশর রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ এর সঙ্গে। উভয় রাষ্ট্রদূত ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মানুষদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ মিশরে অবস্থানকালে সংস্থাটির সেবা কার্যক্রম পরিচালনায় বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।
Advertisement
বৈঠকে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ১ লাখ ২০ হাজার ফিলিস্তিনি মিশরের শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মধ্যে অধিকাংশই আহত। অনেকেই ক্যানসারে আক্রান্ত। মিশরে সীমাহীন কষ্টে দিনাতিপাত করছেন তারা। এই মহতী কাজের জন্য মানবিক সংস্থাটির পরিচালকসহ বাংলাদেশর জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ত্রাণ বিতরণী অনুষ্ঠানে হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি পরিচালক নওমুসলিম মুহাম্মদ রাজ এই প্রতিনিধিকে জানান, বাংলাদেশ থেকে এই প্রথম আমরা কোটি টাকার ত্রাণ বিতরণ করতে ছয়দিনের সফরে এসেছি মিশরে।
আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মানবিক সেবা সংস্থা ‘ওয়ান ওয়ার্ল্ড উম্মাহ ফাউন্ডেশন’ এর সহযোগিতায় মিশরে আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সেবা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে গাজা ও খান ইউনিসেও সহায়তা পৌঁছে দেব আমরা।
তিনি বলেন, মাজলুমদের মাঝে নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার, খাদ্যসামগ্রী ও পানি বিতরণের জন্য ২৫ লাখ টাকা, বাংলাদেশে ফিলিস্তিনি দূতাবাসের মাধ্যমে ২০০ ফিলিস্তিনি শরণার্থীর জন্য ১২ লাখ টাকা, মিশরে শরণার্থীদের ১০ লাখ টাকা, আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের তিন লাখ টাকা, দারিদ্র্য বিমোচনে ১০ লাখ টাকার সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
Advertisement
এছাড়াও মিশরের শরণার্থী শিবিরে পাঁচ লাখ টাকার খাবার পানি, পাঁচ লাখ টাকার শীতবস্ত্র ও কায়রোর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত ফিলিস্তিনিদের নগদ অর্থ বিতরণের পাশাপাশি চিকিৎসা ব্যয় বহন করা হচ্ছে।
ত্রাণ নিতে আসা শরণার্থী মিন্না- ইল মাসরী বলেন, এক বছর আগে আমি ও আমার ছেলেসহ মিশরে এসেছি। বর্বর ইসরাইলিদের হামলায় আমার পরিবারের ১৮ জন সদস্য শহীদ হয়েছেন। শুধু আমার একজন চাচাতো ভাই যুদ্ধে আহত হয়ে ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় গাজার খান ইউনুস শরণার্থী শিবির বেঁচে আছেন। আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান তিনি।
এমআরএম/জেআইএম