জাতীয়

‘গণঅভ্যুত্থানে আহতরা চিকিৎসা পাচ্ছেন না, রাষ্ট্র কি ঘুমিয়ে আছে?’

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও সমানভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। অনেকে আহত হয়ে এখন হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার আহতদের অনেকের চিকিৎসা এখনো করতে পারছে না। রাষ্ট্র কি ঘুমিয়ে আছে?

Advertisement

এমন প্রশ্ন রাখেন গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী নারীরা। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত ‘নারীরা কোথায় গেল?’ শীর্ষক সংলাপে এমন প্রশ্ন করেন তারা। লড়াকু ২৪‌ নামের এক সংগঠন সংলাপের আয়োজন করে। এতে অংশ নিয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালীন নিজেদের নানান অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন নারীরা।

তারা অভিযোগ করে বলেন, রাষ্ট্র কাঠামোতে নারীদের অংশগ্রহণ খুবই কম। অনেক জায়গায় নারীরা থাকলেও তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না। বিপ্লবের স্পিডের আলোকে নারীদেরও সমানভাবে ক্ষমতায়ন করতে হবে।

বক্তারা বলেন, আন্দোলনে সরাসরি নরীরা যুক্ত হওয়ার পাশাপাশি অনলাইন, অফলাইনে ঘরে-বাইরে, প্রবাসে- সবক্ষেত্রে তারা অবদান রেখেছেন। সন্তানের পাশে মায়েরা রাজপথে যেমন স্লোগানে-মিছিলে থেকেছেন, তেমনই কোনো কোনো নারী আবার খাবার, আশ্রয়, চিকিৎসা, সাহস, অর্থ সাহায্য দিয়ে পাশে থেকেছেন। শহর থেকে গ্রাম, দেশ থেকে বিদেশে, ধনী থেকে দরিদ্র, নানান ধর্মের, নানান জাতিসত্তার, সর্বস্তরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারীরা গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়েও নারীরা প্রকাশ্যে এবং নিভৃতে অবদান রেখে যাচ্ছেন।

Advertisement

আরও পড়ুন ধাপে ধাপে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাবে সরকার: হাসান আরিফ এলডিসি দেশগুলোকে ২০০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দে সমর্থন চাইলো বাংলাদেশ

বরিশালের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস নিপু বলেন, আওয়ামী লীগের হুমকির মধ্যে প্রতিদিনই আমাদের চ্যালেঞ্জ নিতে হয়েছে। আন্দোলনে ব্যবহৃত টিয়ার শেলের খোসা নিয়ে উপস্থিত হন তিনি।

কামরাঙ্গীরচরের স্কুলছাত্রী সামিয়া জান্নাত বলে, নারীরা সময়ের প্রয়োজনে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। একজন স্কুল শিক্ষার্থী হিসেবে আন্দোলন করতে গিয়ে আত্মীয়-স্বজন, আওয়ামী লীগ নেতাদের হুমকির মধ্যে আমার পরিবারকে পড়তে হয়েছে। এখনো আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসা পাচ্ছেন না। রাষ্ট্র কি ঘুমিয়ে আছে? নিহতদের ক্ষতিপূরণ ও আহতদের পুনর্বাসন এবং নারীদের সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব দেওয়ার আহ্বান জানায় এ শিক্ষার্থী।

আশুলিয়ার শ্রমিক নেত্রী সাবিনা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের অনেক শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। অনেকে জীবন দিয়েছেন। তাদের পরিবারগুলোকে এখনো পুনর্বাসন করা হয়নি। এখনো শ্রমিকদের বেতনের জন্য আন্দোলন করে রক্ত দিতে হচ্ছে। শ্রমিকদের সব সমস্যা সমাধানে বর্তমান সরকার আন্তরিক হবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন লড়াকু ২৪-এর সহযোদ্ধা কানিজ ফাতেমা মিথিলা। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন শহীদ নাঈমা সুলতানার মা আইনুন নাহার। বক্তব্য দেন- ডা. অর্থি জুখরিফ, ডা. হৃতিশা আক্তার মিথেন, সাংবাদিক শামীমা সুলতানা লাবু, নুসরাত জাহান টুম্পা প্রমুখ।

Advertisement

আরএএস/কেএসআর/এএসএম