আশুলিয়ায় জীবিত স্বামীকে মৃত দেখিয়ে আত্মগোপনে থাকা মামলার বাদী কুলসুমকে কক্সবাজার থেকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাতে আশুলিয়া থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। একই সঙ্গে এ ঘটনায় অভিযুক্ত মূলহোতা রুহুলসহ দুজনকে আটক করা হয়েছে।
Advertisement
এর আগে ১২ নভেম্বর মামলাটি করেন কুলসুম। পরে সিলেট থেকে উদ্ধার করা হয় তার স্বামী আল-আমিনকে। এমন একটি রিপোর্ট জাগো নিউজসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে বিষয়টি সামনে আসে। তদন্তে নামে পুলিশ।
তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রযুক্তির সহায়তায় কক্সবাজারের একটি বাসা থেকে উদ্ধার করে আত্মগোপনে থাকা মামলার বাদী কুলসুমকে।
পুলিশ হেফাজতে কুলসুম জানান, অর্থের প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আশুলিয়ায় তার বাড়ির মালিক রুহুলসহ কয়েকজন তাকে দিয়ে মামলাটি করান।
Advertisement
তিনি বলেন, চাকরি না থাকায় অর্থকষ্টে ভুগছিলাম। পরে রুহুল আমাকে বলেন, একটি সই দিলে সরকার থেকে নগদ পাঁচ লাখ ও প্রতিমাসে ২০ হাজার টাকা করে দেবেন। পরে আমাকে একজন উকিলের কাছে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকেই ১৩০ জন আসামির নাম দিয়ে মামলা লিখে রেখেছিল। তিনিই সব আসামিদের নাম দিয়েছেন। আমি কোনো আসামিকে চিনি না।
শুধু তাই নয়, বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে কুলসুমকে কৌশলে কক্সবাজারে নিয়ে রুহুল ষড়যন্ত্রের ছক আঁকেন বলে অভিযোগ ওই নারীর।
তিনি বলেন, যখন বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়, তখন আমি থানায় আসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু রুহুল আমাকে বলেন, এসব স্বীকার করলে আমার ফাঁসি হয়ে যাবে। তাই আমাকে তারা কক্সবাজার নিয়ে রাখে।
‘সেখানে নিয়ে আমাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের নাটক সাজিয়ে সাংবাদিকসহ কয়েকজনের নামে মিথ্যা মামলা করতে বলেন। সেই সঙ্গে সবশেষে তারা আমাকে গুম করার পরিকল্পনাও করেন। তার আগেই পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে।’
Advertisement
এদিকে ঘটনায় অভিযুক্ত মূলহোতা রুহুলসহ দুজনকে আশুলিয়া থেকে আটক করেছে পুলিশ।
আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ভুয়া মামলার বাদী কুলসুম পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। মামলাটি যে মিথ্যা ও সাজানো তা স্পষ্ট। কুলসুম ও রুহুলকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিজের জীবিত স্বামীকে মৃত দেখিয়ে আদালতে ১৩০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছিলেন কুলসুম।
মাহফুজুর রহমান নিপু/জেডএইচ/এমএস