৬ বছর ৪ মাস আগে অ্যান্টিগার স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে মাত্র ৪৩ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ফাস্ট বোলার কেমার রোচের দানবীয় বোলিং (৮ রানে ৫ উইকেট) বাংলাদেশকে নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে কম রানে গুটিয়ে দিয়েছিল।
Advertisement
শুনলে অবাক হবেন, সেই ৪৩ রানের ইনিংসে লিটন দাস (২৫) ছাড়া বাংলাদেশের একজন ব্যাটারও দু’অংকের ঘরে পা রাখতে পারেননি। দ্বিতীয় সর্বাধিক ৬ রান করেছিলেন পেসার রুবেল হোসেন।
পুরো ইনিংসে লিটন দাসের ব্যাট থেকে এসেছিল ২টি বাউন্ডারি। অপর বাউন্ডারিটি হাঁকিয়েছিলেন রুবেল হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার সেই প্রায় সাড়ে ৬ বছর আগের অ্যান্টিগা টেস্টের করুন পরিণতি নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে রুবেল হোসেন অকপটে স্বীকার করলেন, ‘আসলে অ্যান্টিগা টেস্টের স্মৃতিচারণ কি করবো! সে ম্যাচের প্রথম ইনিংসে আমরা ৪৩ রানে আর দ্বিতীয় ইনিংসে দেড়শোর নিচে (১৪৪) অলআউট হয়ে ইনিংসে হেরেছিলাম। কাজেই স্মৃতিটা মোটেই সুখের নয়। বরং খুব করুন। আমার কাছে অ্যান্টিগা টেস্ট মানেই দুঃস্বপ্ন। আমি তা নিয়ে খুব বেশি কথা বলতে নারাজ।’ রুবেলের ব্যাখ্যা, ‘যে খেলায় কোন অর্জন, কৃতিত্ব নেই, তা নিয়ে বেশি কথা বলারও কিছু নেই। জাতীয় দলের হয়ে ২৭ টেস্ট, ১০৪ ওয়ানডে আর ২৮ টি-টোয়েন্টি খেলা এ দ্রুত গতির বোলারের উপলব্ধি হলো, দেখেন আমরা কেউ ভাল খেলতে পারিনি। কেউ সেট হতে পারিনি। সবাই একযোগে খুব বেশি খারাপ খেলেছিলাম। যেটা খুবই লজ্জাজনক। ওই টেস্ট আমার কাছে না পারার আর ব্যর্থতার গ্লানির প্রতীক হয়ে আছে। কারণ, আমরা আগে কখনোই ৪৩ রানে অলআউট হইনি। অ্যান্টিগায় হয়েছি। টেস্টে সেটাই আমাদের সবচেয়ে কম রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ড। যা মোটেই সুখকর না। তাই আমি আসলে সে ব্যর্থতার ও না পারার ঘটনাকে ভুলে যেতে যাই। আমার কাছে সেটা এক দুঃস্বপ্নের মত।’
রুবেল মনে করেন, ‘যেহেতু বাংলাদেশ এখন নতুন পথে পা বাড়িয়েছে, দলে সিনিয়র ও অভিজ্ঞ পারফরমারদের কেউই নেই। সেই দলকে অনুপ্রাণিত করতে হলে নিজেদের সাফল্যের গল্প শোনাতে হবে। অতীতের সুখ স্মৃতিগুলো আলোচনা করলে ক্রিকেটাররা অনুপ্রাণিত হবে, তাদের সাহজ জন্মাবে। তা না করে আমরা ওই ব্যর্থতার গল্প যত বেশি শোনাবো, তরুণ ক্রিকেটারদের মনোবল তত কমবে। তাদের সাহসও যাবে কমে।’ ‘এখন আমরা নতুন দল। যে দলে সিনিয়র ও অভিজ্ঞরা কেউ নেই। আমি তাই ওই ম্যাচ নিয়ে এবং সে বিভিষিকাময় ব্যর্থতার স্মৃতি নিয়ে খুব বেশি কথা বলতে চাই না। আমার মনে হয়, ওই খেলার কথা যতই বলা হবে, ততই নেতিবাচক চিন্তা-ভাবনা চলে আসবে। ৪৩ রানে অলআউট হওয়ার গল্প মনে হয় না, কোন অনুপ্রেরণার প্রতীক হতে পারে। তাই ওই ম্যাচের তেঁতো স্মৃতি যত কম আলাপ করা যায়, ততই মঙ্গল। নতুন দলকে অনুপ্রাণিত করতে হলে সে ব্যর্থতার কথা যত কম বলা হবে ততই ভাল। তাই আমার মনে হয় পজিটিভ চিন্তা ভাবনা করা উচিৎ। সেই অ্যান্টিগায় আমরা ৪৩ রানে অলআউট হয়েছিলাম, সেই মাঠে আবার টেস্ট খেলতে নামছি। তাও পঞ্চপাণ্ডব ছাড়া, এমনকি সাকিব আর মুশফিকের কেউ নেই। এভাবে চিন্তা করলে আমার মনে হয় মনোবল কমবে।’
Advertisement
এআরবি/আইএইচএস/