বাফুফে ভবনে নারী ফুটবলারদের ক্যাম্প এখন শূন্য। চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের সঙ্গে ছুটি দেওয়া হয়েছে বাকিদেরও। সাবিনা-মারিয়া মান্দারা কবে ফিরবেন ঠিক নেই। কারণ, তাদের ছুটির নির্দিষ্ট কোনো সীমা নেই। বাফুফে ডাকলেই তারা আবার ক্যাম্পে ফিরবেন।
Advertisement
ছুটির এ সময়টা তার রিল্যাক্সে থাকবেন, পরিবারের সাথে সময় কাটাবেন। তবে যারা অনূর্ধ্ব-২০ দলে ডাক পাবেন তাদের ফিরতে হবে ২৯ নভেম্বরের আগে। কারণ, আগামী বছর ১১ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য সাফ নারী অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ।
বাফুফে ক্যাম্পে ২০ বছরের বেশি বয়সী নারী ফুটবলারদের ছুটিটা তাই বেশ লম্বাই হতে পারে এবার। সহসা কোনো খেলাও নেই। ভরসা ফিফা উইন্ডো, তাও চলতি বছরে নেই। তাই সাবিনা-কৃষ্ণা আর মারিয়া মান্দাদের ক্যাম্পে ফেরার কোনো সময়ও বেধে দেয়নি বাফুফে।
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করা ইংলিশ কোচ পিটার বাটলার সফল হয়েছেন শিরোপা ধরে রাখতে পেরে। বিদায়ী বছরে পিটারের অধীনে ৮ ম্যাচ খেলেছেন সাবিনারা। দুটি হেরেছেন, একটি ড্র করেছে এবং জিতেছে ৫টি। এর মধ্যে আছে মর্যাদার সাফ শিরোপাও।
Advertisement
পিটার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নতুনদের ওপর বেশি নজর দিয়েছেন এই ইংলিশ কোচ। আগামীর জন্য একটি শক্তিশালী দল তৈরি লক্ষ্যে পিটার অতীত ও নামের ওজন বাদ দিয়ে বর্তমান পারফরম্যান্সকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। বাফুফের কাছেও এখন অনূর্ধ্ব-২০ দলটি হবে হ্যাটট্রিক সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। তাই ফেব্রুয়ারির সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে ইংলিশ কোচ পিটার বাটলারকেই দায়িত্বে রাখছে বাফুফে।
‘২৯ নভেম্বর পিটারের অধীনেই শুরু হবে অনূর্ধ্ব-২০ দলের অনুশীলন। আমরা মেয়েদের জন্য তাকে রেখে দিয়েছি। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাফুফের সাথে তার চুক্তি আছে একাডেমির জন্য। এর আগেই তিনি কথা বলে কয়েকদিনের জন্য ছুটিতে যাবেন। তারপরই আমার বয়সিভিত্তক দল নিয়ে পুরোদমে অনুশীলন শুরু করবো’-বলেছেন বাফুফের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নারী উইংয়ের চেয়ারপার্সন মাহফুজা আক্তার কিরণ।
বাফুফের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন হলে মেয়েদের পরের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ পর্যন্তও তাকে দেখা যেতে পারে দায়িত্বে। বাফুফের চোখ এখন মেয়েদের সাফের হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নে। পরের সাফ বাংলাদেশে হওয়ার কথা রয়েছে।
গত কাঠমান্ডু সাফ চলাকালীন ও সাফ শেষে পিটার বাটলারকে নিয়ে বেশ কয়েকজন সিনিয়র খেলোয়াড়ের নেতিবাচক মন্তব্যের কোচের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সাফের মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট চলাকালীন কোচের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে অভিযোগ করাটা ভালোভাবে নেয়নি বাফুফে। যদিও মুখ বুঝে সহ্য করছে বাফুফে, মেয়েদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
Advertisement
তবে ছুটিতে যাওয়ার আগে মেয়েদেরকে একটা বিষয় পরিষ্কার করা হয়েছে বাফুফে থেকে। নারী ফুটবলারদের জানিয়েও দেওয়া হয়েছে তাদের কাজ মাঠে খেলা। বেতন, ভাতা, সুযোগ সুবিধাসহ অন্য সব বিষয় দেখভালের দায়িত্ব বাফুফের। কে কোচ হবেন, কে অফিসিয়াল হবেন এ বিষয়ে মেয়েদের কোনো বক্তব্য থাকবে না।
মেয়েদের বেশি বেশি গণমাধ্যমের সাথে কথা বলার বিষয়টিও লাগাম টানা হয়েছে বলে জানা গেছে। সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকে ক্যাম্প ছুটি পর্যন্ত গণমাধ্যমে কথা বলার জন্য মেয়েদের পুরো স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল। এখন থেকে সেটা পারবে না বলেই জানা গেছে। যদিও মেয়েরা এখন চুক্তির মধ্যে নেই। তাই তারা বাফুফের মৌখিক নির্দেশনা কতটা মানবেন সেটাও দেখার বিষয়।
সাফ নারী অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের সর্বশেষ আসর বসেছিল ঢাকার বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে। ফাইনালে নেপালকে ৩-০ গোলে হারিয়ে বাংলাদেশ জিতেছিল প্রথম আসরের শিরোপা। দ্বিতীয় আসরও হবে বাংলাদেশে। তবে ভেন্যু এখনো ঠিক হয়নি।
সাফ থেকে বাফুফেকে ভেন্যুর নাম দিতে বলেছে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম প্রস্তুত নয় বলে খেলা কোথায় হবে তাও নিশ্চিত নয়। বাফুফের নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণের চোখ কক্সবাজারে। বৃহস্পতিবার তিনি বলেছেন,'ওই সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম প্রস্তুত না হলে আমরা বিকল্প হিসেবে কক্সবাজারের কথা ভাবছি। তবে এক্ষেত্রে সাফের মতামতের বিষয় আছে। কারণ, কক্সবাজারে টুর্নামেন্ট হলে ব্যয় বেড়ে যাবে।’
আরআই/আইএইচএস