লক্ষ্মীপুরে হঠাৎ করে নারিকেলের দাম বেড়ে গেছে। গত ১৫-২০ দিন ধরে স্থানীয় বাজারে প্রতিটি নারিকেল বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা দরে। এর আগে জেলায় নারিকেলের দাম এত বাড়েনি বলছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের দাবি, ডাবের চাহিদা বৃদ্ধি এবং ভারত থেকে নারিকেল আমদানি বন্ধ থাকায় হঠাৎ করে অস্বাভাবিকভাবে নারিকেলের দাম বেড়ে গেছে।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাড়তি চাহিদার কারণে প্রতিবছর শীত মৌসুম শুরুর আগে ভারত থেকে নারিকেল আমদানি হতো। এবার এখন পর্যন্ত আমদানি শুরু হয়নি। এ কারণে দাম বেড়েছে।
চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও কুমিল্লাসহ কয়েকটি জেলায় নারিকেলের উৎপাদন বেশি হয়। এসব নারিকেল সারাদেশে সরবরাহ হয়। শুধু লক্ষ্মীপুরেই নারিকেল-ডাব ঘিরে চলতি বছরে ৬০০ কোটি টাকার লেনদেনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
মেঘনা উপকূলীয় এ জনপদে শতাধিক পাইকারি ব্যবসায়ী রয়েছেন। তারা ট্রাক-পিকআপযোগে ঢাকা, সিলেট, শ্রীমঙ্গল ও কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে নারিকেল সরবরাহ করেন। অপরিকল্পিতভাবে উৎপাদন করা এ পণ্য ঘিরে গ্রামীণ অর্থনীতিও রয়েছে চাঙা।
Advertisement
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, লক্ষ্মীপুরে ২ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে নারিকেল গাছ রয়েছে। তবে বেশিরভাগ বাগানই অপরিকল্পিতভাবে করা। আর প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে নারিকেল গাছ। নারিকেলের জন্য সুনাম থাকলেও এখন ডাবের জন্যও সারাদেশে পরিচিতি পাচ্ছে লক্ষ্মীপুর জেলা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কয়েক বছর ধরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাওয়ায় এবং গ্রীষ্মের সময় প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে দেশের বাজারে ডাবের চাহিদা তুঙ্গে থাকে। যে কারণে নারিকেলের সরবরাহ সংকট দেখা দেয়। এর প্রভাবে বাজারে নারিকেলের দামও বাড়তি।
৩০ বছর ধরে নারিকেল ব্যবসা করছেন রায়পুরের দক্ষিণ দেনায়েতপুর এলাকার খোকন দেওয়ান। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, এর আগে কখনো নারিকেলের দাম এত হয়নি। এর কারণ ভারত থেকে আমদানি বন্ধ রয়েছে। আগে প্রতিটি নারিকেল ৪৫-৫৫ টাকায় কেনা হলেও এখন খরচ পড়ছে ৯০-১০০ টাকা।
দালাল বাজার এলাকার নারিকেল ব্যবসায়ী মো. শরীফ বলেন, ‘কখনো নারিকেলের এত দাম ওঠেনি। এখন ৮০ টাকার নিচে কোনো নারিকেল নেই। ফসলও এবার ভালো হয়েছে। দিনদিন এ অঞ্চলে ডাবের চাহিদাও বেড়ে যাচ্ছে।’
Advertisement
লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সোহেল মো. শামছুদ্দিন ফিরোজ বলেন, নারিকেল-ডাব ঘিরে চলতি বছরে ৬০০ কোটি টাকার লেনদেন হবে।
তিনি আরও বলেন, ডাবের চাহিদার কারণেই বাড়ছে নারিকেলের দাম। এখানে অপরিকল্পিতভাবে নারিকেলের বাগান করা হয়। এত ঘনঘন চারা লাগানোয় গাছে রোদ কম পায়। তবে সার দেওয়াসহ পরিচর্চা করলে উৎপাদন আরও কয়েকগুণ বাড়বে।
এসআর/জিকেএস