অব্যাহত দরপতন চলছে দেশের শেয়ারবাজারে। সেইসঙ্গে দেখা দিয়েছে লেনদেন খরা। ফলে দিন যত যাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা তত ভারী হচ্ছে। সেইসঙ্গে শেয়ারবাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকট সৃষ্টি হচ্ছে।
Advertisement
গত কয়েক কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ফলে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। সেইসঙ্গে বাজারটিতে ১৭ কার্যদিবসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এ বাজারটিতে সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কার্যদিবসেই উভয় শেয়ারবাজারে দাম কমার তালিকায় নামে লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচক ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। তবে আধাঘণ্টার বেশি সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকেনি। প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার পর দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দরপতনের তালিকা বড় হতে থাকে। ফলে মূল্যসূচকের মোটামুটি বড় পতন দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
Advertisement
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে মাত্র ৬৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ২৬৩টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৫৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪৭ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১৯৭ পয়েন্টে নেমে গেছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৫১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯১৯ পয়েন্টে নেমে গেছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৬৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৯৩ কোটি ৭ লাখ টাকা। সে হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ২৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে গত ৩০ অক্টোবরের পর ডিএসইতে সব থেকে কম লেনদেন হলো।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে মিডল্যান্ড ব্যাংকের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৩ কোটি ১৫ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাভেলো আইসক্রিমের ১১ কোটি ৬৪ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৯ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।
Advertisement
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- আইসিবি, ইস্টার্ন ব্যাংক, ফাইন ফুডস, অগ্নি সিস্টেম, সোনালী আঁশ, ফারইস্ট নিটিং এবং ইসলামী ব্যাংক।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৮৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩২টির এবং ৩৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয় ৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
এমএএস/এমএএইচ/জিকেএস