সাহিত্য

মৃন্ময় চক্রবর্তীর কবিতাগুচ্ছ

১.বড্ড খিদে পেয়েছেকোথায় যাওয়া যায় বলতো হে?চাল বাড়ন্তআনাজ নেই!টাকা না থাকলেসবকিছু দামি।যাবে?কোথায়?প্রসাদপুরের মাঠে,হাড়ি মেয়েরা ওই মাঠেশালুক পুড়িয়ে খায়।পয়সা লাগে নাএমনিই দেবে,যাবে?যাবযেতে হবে,নদীতে চান করে আসি।চান না করেএখনো খাই না।২.আসমানে অতো কী দেখ হে,সাধন মুর্মু বলেছিলআমিতো মাথার উপরে শুধুভাত দেখি হে ভাতভাতের সাদা সাদা দানাযেন খিলখিলাইছে,আর ওই চাঁদটাএকটা পুরুষ্ট ডিম।তবে বুঝলেওই আসমানি থালাটা মাঝেসাঝেবড় আন্ধার লাগেভুখে পোড়া আন্ধার।তারপর থেকে মাথার উপরে চাইলেইআমিও দেখিঅজস্র চালের দানাছড়িয়ে রয়েছে।আমার আর আসমানদারি করা হয় নাকিছুতেই হয় না৩.তোমার দ্বারা কিচ্ছু হবে নাকিচ্ছু না!একজন মানুষ আমাকে বলতেনতিনি ভালবাসতেন আমাকেভালবাসতেন অনেকের চেয়ে বেশি,বলতেন-খররৌদ্রে সারাদিন কাটিয়েফিরে এসে তুমিযখন হাত খুলে দেখবেমুঠোভর্তি অন্ধকার,তখনসমস্ত দর্শন ছাই হয়ে যাবে।তোমার পাকস্থলিতেকুণ্ডলী পাকানো পাপতোমাকেদুদণ্ড বসতে দেবে না কিছুতেই,কী ভাববে তুমি,কী লিখবে তুমি কবিতা?মানুষটা বড় ভালবাসতেনবড় ভালবাসতেন আমাকে!৪.জলের ভেতর ঘাই মারছে আলোকিসের এত ফুর্তি হে তোমারযাও ফোটো এখনমাছেরা ঘুমুচ্ছেসারাদিন খেটেছে ওরাওদের একটু ঘুমুতে দাও৫.এখানে কে ছড়িয়ে গেল কাঁটা,বাছতে বাছতে চোখ ব্যথা হয়ে যাচ্ছে।কে আছ লণ্ঠন বাড়িয়ে ধরো!বুকভর্তি ফুটো থেকেবেরিয়ে আসছেক্রমাগতজরুরি অবিশ্বাস,ছিদ্রান্বেষণঅনিবার্য হয়ে উঠেছে,কে আছ?৬.একটা অন্ধকার জলের পাশে বসে কাঁদছেটুপ টুপ করে বাতাস খসে পড়ছে উঠোনে।আমি বাড়ি যাবআমায় বাড়ি নিয়ে চলোএখানে মাটির তলায় কারা শিষ দিচ্ছেএখানে গুমোটআমি বাড়ি যাবফেলে আসা পথ আমাকে খুঁজে নাও।৭.ছিঁড়ো নারেখে দাওবুকে।যদি সবমিথ্যে হয়ে যায়পাঁজরেইথাকুক গোপনে।৮.ডালে ভরা ছিল কাঁটাঝরে গিয়েছিল ফুলতোমার দু’হাতে রাতনির্ভুল নির্ভুল।৯.একটা পাখির গন্ধ ঘুমিয়ে আছেওকে জাগিয়ে দাওআকাশ বড় কাঁদছেটুপ টুপ জল১০.আমায় বলেছ তুমি, ডাঁহা খাঁটি বোকা।টাকা নেই তাইবুদ্ধি পারিনি কিনতে।পেটে প্রত্যহ নির্বোধমারে টোকা,নিজেকেই তাইনিজেই পারিনি চিনতে।এসইউ/আরআইপি

Advertisement