জাতীয়

এবার রেললাইন অবরোধ রিকশাচালকদের, ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ

ঢাকা মহানগর এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়ায় দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করছেন চালকরা।

Advertisement

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, রাজধানীর মহাখালী থেকে সাতরাস্তাগামী রাস্তার মহাখালী মোড় অবরোধ করে রেখেছেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা।

এছাড়া মহাখালী রেলক্রসিংসহ রেললাইনে অবস্থান নিয়েছেন তারা। এই অবস্থানের কারণে মহাখালী ও আশপাশ এলাকায় সম্পূর্ণ যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। যান চলাচল বন্ধ থাকায় সকাল থেকে অফিসগামী মানুষকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। যানবাহন না পেয়ে তারা হেঁটে গন্তব্যে রওনা দিয়েছেন।

এদিকে মহাখালী রেলগেট এলাকায় রেলপথ অবরোধ করে আন্দোলন করায় যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে ঢাকা থেকে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে রাখা হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন ফের ঢাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের অবরোধ, তীব্র যানজট দয়াগঞ্জে সড়ক অবরোধ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ মিরপুরে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের আন্দোলনে যান চলাচল ব্যাহত

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, অটোরিকশাচালকরা রেললাইনে অবরোধ করে আন্দোলন করছেন। ফলে নিরাপত্তার স্বার্থে সকাল ১০টা থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে। সকাল ১০টার পর কোনো ট্রেন ঢাকা স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়নি এবং আসছেও না। ঢাকামুখী ট্রেনগুলো কাছাকাছি স্টেশনে অবস্থান করছে।

এ বিষয়ে ঢাকা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন বলেন, আমরা জানতে পেরেছি ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা মহাখালী রেললাইন অবরোধ করে আন্দোলন করছেন। এ খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে গেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে রেলওয়ে পুলিশ।

এদিকে এ বিষয়ে বনানীর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেল সরোয়ার বলেন, সকাল থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা মহাখালী এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন। অবস্থান নিয়ে তারা রেলক্রসিংসহ বিভিন্ন রাস্তায় অবরোধ করেছেন। এছাড়া তারা মহাখালী রেললাইনও নিজেদের দখলে নিয়েছেন। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি।

Advertisement

গত মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর এলাকায় তিনদিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এই আদেশের পর গতকাল বুধবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর দয়াগঞ্জ, মিরপুর, কল্যাণপুরসহ বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকরা।

দ্বিতীয় দিনের মতো বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রাজধানীর মহাখালী, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, গাবতলী ও ডেমরা এলাকায় রিকশাচালকরা জড়ো হন। এতে এসব এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ।

বর্তমানে প্রায় ১৩ লাখ রিকশা চলাচল করছে রাজধানীতে। যার বড় একটি অংশ ব্যাটারিচালিত। পুরাতন প্যাডেলচালিত অনেক রিকশায় ব্যাটারি লাগিয়ে যান্ত্রিক করা হচ্ছে।

রাজধানীর মূল সড়কের চেয়ে অলিগলিতে ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচল বেশি। সুযোগ পেলে মূল সড়কও দাপিয়ে বেড়ায় এসব রিকশা। রাজধানীর খিলগাঁও, মান্ডা, বাসাবো, মানিকনগর, রামপুরা, বাড্ডা, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, সবুজবাগ, শ্যামপুর, ডেমরা, মোহাম্মদপুর, বছিলা, উত্তরা, ভাটারা, দক্ষিণখান, উত্তরখান, ময়নারটেক, মিরপুর, পল্লবী এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা বেশি।

এসব এলাকা ছাড়াও রাজধানীর প্রায় সর্বত্র ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল রয়েছে। ফলে নিয়মিত ঘটছে দুর্ঘটনা। অনেকে আহত হচ্ছেন, প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কয়েক দফা অভিযান চালালেও থেমে নেই অবৈধ এসব বাহনের দৌরাত্ম্য।

টিটি/বিএ/এএসএম