দেশের উত্তরের জেলাগুলোতে আগেভাগেই দেখা দেয় শীত। সাধারণত অক্টোবরের শেষের দিক থেকে শীত অনূভুত হয়। নভেম্বরে শীত বেড়েছে। এ অবস্থায় লেপ-তোশক বানানোর ধুম পড়েছে রংপুরে। কেউ কেউ পুরোনো লেপ-তোশক ঠিকঠাক করিয়ে নিচ্ছেন।
Advertisement
নিত্যপণ্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লেপ-তোশকের দামও। পাঁচ বছরের ব্যবধানে দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এতে আগের মতো লাভের মুখ দেখছেন না বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
শহরের হাঁড়িপট্টি রোডের জননী বস্ত্রালয়ের ম্যানেজার কবিরুল ইসলাম সোহাগ জাগো নিউজকে জানান, লেপ-তোশক তৈরির উপকরণ তুলা, কাপড় ও সুতার দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। কারিগরদের মজুরিও বেড়েছে। পাঁচ বছর আগে ৫ ফুট বাই ৭ ফুট সাইজের একটা জাজিম তৈরিতে খরচ হতো ১৮০০-২০০০ টাকা। এখন সেটাতে দাম পড়ে ৩০০০-৩৫০০ টাকা। আগে ৪ হাত বাই ৫ হাত সাইজের রেডিমেড লেপ বিক্রি হতো ৫০০-৬০০ টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৯০০ টাকায়।
অর্ডার দিয়ে বানানো একই সাইজের লেপের দাম ৯০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১২৫০-১৩০০ টাকা। আগে ৫ হাত বাই ৫ হাত সাইজের লেপের দাম ছিল ১১০০ টাকা। এখন তা ১৫০০-১৬০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। লেপের কভারসহ বিক্রি হচ্ছে ২১০০-২২০০ টাকা।
Advertisement
বেতপট্টি রোডের খালেক বেডিং স্টোরের স্বত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর আলম জাগো নিউজকে জানান, পাঁচ বছর আগে ৬ বাই ৭ ফুট রেডিমেড তোশতের দাম ছিল ৬৫০-৭০০। এখন তার দাম বেড়ে হয়েছে ৯০০ টাকা। অর্ডার দিয়ে বানানো একই তোশকের দাম পড়বে ১২৫০-১৩০০ টাকা। লেপ বানানোর লাল শালুর গজ আগে ছিল ৩২-৩৫, এখন দাম বেড়ে হয়েছে ৪৫-৫০ টাকা। তোশক বানানোর কাপড় আগে ২৫-২৮ টাকা গজ ছিল। এখন বেড়ে ৪০-৪৫ টাকা হয়েছে। জাজিম বানানোর কাপড়ের দাম ৬৫-৭০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৯০-১০০ টাকা।
রংপুর শহরের দেওয়ান বাড়ি রোডের কারিগর রবিউল ইসলাম জানান, তার কারখানায় এখন দৈনিক ১০-১২টি লেপ তৈরি হচ্ছে। শীত বাড়লে সংখ্যা আরও বাড়বে। এখন চারজন কারিগর কাজ করছেন।
লেপ-তোশক-জাজিম তৈরির উপকরণের সঙ্গে বেড়েছে কারিগরদের মজুরিও। হারাগাছ পৌর এলাকার লেপ-তোশক বিক্রেতা মো. মখদুমী জানান, পাঁচ বছর আগে জাজিম তৈরিতে মজুরি ছিল ২০০ টাকা, লেপ ১২০ টাকা এবং তোশকের মজুরি ছিল ৮০-৯০ টাকা। এখন মজুরি বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
নগরীর কুটিরপাড়া এলাকার মৌসুমি ধুনকর আকরাম হোসেন জানান, এখন তার কারখানায় দিনে ৬-৭টি লেপ বানানো হচ্ছে। শীত বাড়লে ১৫-২০টি লেপ বানানো হবে।
Advertisement
হাঁড়িপট্টি রোডে লেপ রিপেয়ারিং করতে আসা গুপ্তপাড়া এলাকার রাজু আহমেদ বলেন, নতুন লেপ কভারসহ বানাতে খরচ হয় ২২০০ টাকা। তাই পুরোনো একটি লেপ রিপেয়ারিং করতে দিয়েছি। সেখানে তুলার দাম বাদ দিলে খরচ পড়বে ১৬০০ টাকা। একই রোডের লাভলু ক্লোথ স্টোরের লিমন মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, লেপ তোশক বানানোর উপকরণের দাম বাড়ায় আগের মতো লাভ হয় না। এখন ইনভেস্ট বেশি কিন্তু লাভ কম। আগে কম ইনভেস্ট করেও ভালোই লাভ হতো।
জিতু কবীর/এসআর/জিকেএস