আইন-আদালত

প্রাথমিকের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগপত্র প্রদানের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।

Advertisement

এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচাপতি মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

কোটা পদ্ধিত অনুসরণ করে তাদের নিয়োগ দেওয়ায় আদালত এ আদেশ দিয়েছেন। আগামীকাল থেকে এই সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষককে নিয়োগ পত্র দেওয়ার কথা ছিল।

আদালতে এদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফয়েজ উদ্দিন আহমদ, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী কামরুজ্জামান ভূইয়া।

Advertisement

আইনজীবী জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত উত্তীর্ণদের নিয়োগপত্র দেওয়ার কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।

ফলে ৬ হাজার ৫৩১ জন উত্তীর্ণ প্রার্থী বুধবার (২০ নভেম্বর) আর নিয়োগপত্র পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।

আরও পড়ুন তৃতীয় শ্রেণির ‘গ্লানি থেকে মুক্তি’ চান প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ, নির্বাচিত ৬৫৩১ মৌখিক পরীক্ষা দিয়েও কোটার ব্যাখ্যায় আটকা ৪৬ হাজার চাকরিপ্রার্থী  

৩০ প্রার্থীর করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত রুলসহ এ আদেশ দেন।

২০২৩ সালের ১৪ জুন ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরপর ৬ হাজার ৫৩১ জন প্রার্থীকে নির্বাচন করে গত ৩১ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়।

Advertisement

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ৩১ অক্টোবরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রার্থীদের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯ অনুসরণ করে উপজেলাভিত্তিক মেধাক্রম অনুযায়ী নিয়োগের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রার্থী নির্বাচন করে তালিকা প্রণয়ন করা হয়। পরে ১১ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় নিয়োগ আদেশ সংবলিত নির্দেশনা জারি করে।

এ সংক্রান্ত আদেশ অনুসারে নির্বাচিত প্রার্থীদের অনুকূলে ২০ নভেম্বর নিয়োগপত্র ইস্যু করার কথা ছিল।

ওই নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা অনুসরণের অভিযোগ তুলে ফলাফল প্রকাশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নিয়োগবঞ্চিত ৩০ প্রার্থী গত সপ্তাহে রিটটি করেন।

রুলে ৩১ অক্টোবর ফলাফল প্রকাশের বিজ্ঞপ্তি ও নিয়োগ বিষয়ে ১১ নভেম্বরের নির্দেশনা-সংবলিত স্মারক কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহাপরিচালকসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদেশের বিষয়ে আইনজীবী ফয়েজ উদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত ২৩ জুলাই কোটাপদ্ধতি সংশোধনের পর একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে বলা হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবরের জারি করা পরিপত্রসহ আগের এ সংক্রান্ত সব পরিপত্র বা প্রজ্ঞাপন বা আদেশ রহিত করা হলো। ফলে আগের কোনো আদেশ বহাল থাকছে না। অথচ ওই নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯ অনুসরণ করা হয়েছে।

এ অনুসারে নারী কোটা ৬০ শতাংশ, পোষ্য কোটা ২০ শতাংশ, ৪ শতাংশ অন্যান্য কোটা ছিল। এ রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্ট রুল দিয়ে নিয়োগের কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। ফলে ২০ নভেম্বর নিয়োগপত্র ইস্যু করা যাবে না। 

এফএইচ/বিএ/এমএস/ইএ