আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য সংরক্ষণ ইউনিট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের প্রথম দশ মাসে (জানুয়ারি-অক্টোবর) ৪৮২ জন শিশু নিহত হয়েছে যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪২১ জন।
Advertisement
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংলাপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
আসক এবং চাইল্ড রাইটস অ্যাডভোকেসি কোয়ালিশন ইন বাংলাদেশ (সিআরএসিবি) যৌথভাবে এই সংলাপের আয়োজন করে। সিআরএসিবি দেশের প্রথম সারির ১৪টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, শিশু অধিকার প্ল্যাটফর্ম, সংগঠন এবং ফোরামের সমন্বয়ে গঠিত।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা টেরি ডেস হোমসের কান্ট্রি ডিরেক্টর এম কবিরের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আসকর প্রজেক্ট অফিসার শান্তা ইসলাম।
Advertisement
বক্তারা বলেন, বিগত বছরগুলোর মতো ২০২৪ সাল জুড়েও, হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ, বলাৎকার, অনলাইনে যৌন হয়রানিসহ শিশুর প্রতি নানা সহিংসতার ঘটনা অব্যাহত থেকেছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর হিসাবমতে, এ সময়কালে শারীরিক নির্যাতনের কারণে মৃত্যু, সহিংসতার কারণে মৃত্যু, ধর্ষণের পরে হত্যা, ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে হত্যা, অপহরণ ও নিখোঁজের পর হত্যাসহ বিভিন্ন কারণে নিহত হয় মোট ৪৮২ জন শিশু।
২০২৪ সালের প্রথম দশ মাসে শিক্ষক কর্তৃক শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৩৯ জন শিশু, ধর্ষণের শিকার হয় ২১৭ জন শিশু, ১৫ শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়, ধর্ষণচেষ্টার শিকার ৬১ ও যৌন হয়রানির শিকার হয় ৩৪ জন শিশু যার মধ্যে শিক্ষক দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৮৫ জন এবং বলাৎকারের শিকার হয়েছে ৩২ ছেলে শিশু।
২০০৯ সালের যৌন হয়রানি বন্ধের লক্ষ্যে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেই চলেছে। এসব প্রতিরোধে আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক আইন প্রণয়ন করা জরুরি।
Advertisement
কোয়ালিশন মনে করে, গৃহকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আইন প্রণয়ন ও সচেতনতা তৈরি করা আবশ্যক।
২০২৪ সালের প্রথম দশ মাসে নিহত শিশুর সংখ্যা ৪৮২ জন। ২০২৩ সালের প্রথম দশ মাসে যা ছিল ৪২১ জন। এছাড়া ২০২৪ সালের প্রথম দশ মাসে বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয় ৫৮০ জন শিশু, তবে ২০২৩ সালের প্রথম দশ মাসে এ সংখ্যা ছিল ৯২০।
আসকর প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১২১ জন শিশু মারা যায়।
শান্তা ইসলাম বলেন, গত কয়েক দশকে বাংলাদেশ শিশু অধিকার রক্ষায় বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করলেও শিশুদের পরিস্থিতি আশানুরূপ অগ্রগতি অর্জন করেনি কেননা অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব পদক্ষেপের বাস্তবায়ন ঘটেনি। এসব পদক্ষেপের যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর পর্যবেক্ষণ ও জবাবদিহিতা অনুপস্থিত।
এসআরএস/এমআরএম/এমএস