মাদারীপুরে বিভিন্ন নদ-নদীর অর্ধশতাধিক স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। প্রশাসন থেকে মাঝেমধ্যে অভিযান চালানো হলেও বন্ধ হচ্ছে না বালু উত্তোলন। এতে ভেঙে যাচ্ছে নদীর পাড়। হুমকির মুখে পড়েছে বেড়িবাঁধ।
Advertisement
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের অক্টোবরে তৎকালীন জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন মাদারীপুর জেলাকে ড্রেজারমুক্ত ঘোষণা করেন। ওই সময় বালু উত্তোলন অনেকটাই বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তিনি বদলি হয়ে চলে যাওয়ার পর আবার শুরু হয় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে বালু উত্তোলনের হিড়িক পড়ে যায়।
স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা কৌশলে রাতভর বালু উত্তোলন করছেন। নদ-নদীর অর্ধশতাধিক স্থানে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। জড়িতরা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলেন না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার শ্রীনদী, কালিরবাজার, ধুরাইল, দুধখালী, কুনিয়া, বাজিতপুর, পাঁচখোলার জাজিরার তাল্লুক, মহিষেরচর, চরমুগরিয়া, দুধখালী ও লঞ্চঘাট; রাজৈর উপজেলার হরিদাসদি-মাহেন্দ্রদী, কবিরাজপুর, আমগ্রাম, টেকেরহাট; কালকিনি উপজেলার ফাঁসিয়াতলা, সাহেবরামপুর, কালীনগর, রমজানপুর, রাজারচর, লক্ষ্মীগঞ্জ; শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি, কুতুবপুর, উৎরাইল হাট সংলগ্ন, দত্তপাড়া, নিলখী, শিরুয়াইল, চরচান্দা, কাওলিপাড়া, চরজানাজাতসহ জেলার অর্ধশত স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
Advertisement
বেশিরভাগ সময় রাত থেকে ভোর পর্যন্ত ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হয়। পরে সারাদিন ড্রেজার মেশিনগুলো নদীর পাড়েই বেঁধে রাখা হয়। জেলার পদ্মা, পালরদী, ময়নাকাটা, কুমার, আড়িয়াল খাঁসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
রাজৈরের কালীবাড়ি এলাকার সালাম সরদার বলেন, ‘রাত যত গভীর হয় ততই বালু উত্তোলনের হিড়িক পড়ে যায়। সকাল হলেই আবার উত্তোলন বন্ধ। প্রভাবশালীরা জড়িত থাকায় কেউ কিছু বলার সাহসও পায় না।’
মাদারীপুর শহরের লঞ্চঘাট এলাকার কালাম হোসেন বলেন, ‘দিনের পর দিন অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করায় শহররক্ষা বাঁধটি হুমকির মুখে। এখনই যদি এগুলো বন্ধ না হয়, তাহলে বড় ধরনের ক্ষতির মধ্যে পড়তে হবে সবাইকে।’
এ বিষয়ে মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল ইসলাম বলেন, প্রায় প্রতিদিনই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান পরিচালনা করছেন। কোথাও জেল আবার কোথাও আর্থিক জরিমানা করা হচ্ছে। ড্রেজার মেশিন জব্দ ও পাইপগুলো ভেঙে নষ্ট করা হচ্ছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
Advertisement
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এসআর/এমএস