জাতীয়

১০০ দিনে সবল অবস্থানে অর্থনীতি: প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সম্পূর্ণ নিজস্ব নীতিমালা দিয়ে ১০০ দিনে অর্থনীতি সবল অবস্থানে চলে এসেছে। ১০০ দিন আগে আর্থিক দিক থেকে আমরা যে লন্ডভন্ড অবস্থা থেকে যাত্রা শুরু করেছিলাম সেটা এখন অতীত ইতিহাস হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Advertisement

রোববার (১৭ নভেম্বর) তার সরকারের প্রথম ১০০ দিন উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এখনো আমাদের বন্ধুদের কাছ থেকে যে সাহায্যের আয়োজন হয়েছে তা আসা শুরু করেনি। বন্ধু রাষ্ট্রগুলো শুধু যে আমাদের বড় বড় অংকের সাহায্য নিয়ে আসছে তাই নয় তারা এই সাহায্য দ্রুততম সময়ে আসা শুরু করবে এই প্রতিশ্রুতিও আমাকে দিয়েছে। এই সাহায্য আসা শুরু করলে আমাদের অর্থনীতি অত্যন্ত মজবুত এবং আকর্ষণীয় অর্থনীতিতে পরিণত হবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও নানা রকম বিনিয়োগে উৎসাহীত হয়ে এগিয়ে আসবে।

তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে এখন থেকে আমরা আলোচনা শুরু করে দিয়েছি। বিশ্বের রাষ্ট্রপুঞ্জের মজলিসে আমরা এখন সম্মানিত এবং প্রশংসিত দেশের অবস্থানে পৌঁছাতে পেরেছি। এ কারণে পরাজিত শক্তি নানা কৌশল করেও তাদের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারছে না। তারা নানা চেহারা নিয়ে আপনাদের প্রিয়পাত্র হওয়ার চেষ্টা করছে।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, পরাজিত শক্তির ষড়যন্ত্র থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুন, দেশকে মুক্ত রাখুন। এ ব্যাপারে অনড় থাকুন। এমন কিছু করবেন না যা তাদের উৎসাহিত করতে সাহায্য করে। তাদের সব দিক থেকে নিরাশ করুন। সেটা নিশ্চিত করতে পারলে আমাদের আর কোনো বিষয়ে সংশয় করার প্রয়োজন নেই।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি সব প্রকার সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা আপনাদের একটা মজবুত অর্থনীতি দিয়ে যাবো। ভবিষ্যতে চলার পথকে সহজগম্য করে যাবো। নাগরিক অধিকারসমূহ নিশ্চিত করে যাবো। বিপক্ষ শক্তি যত শক্তিশালীই হোক, নাশকতার যত রকমই উদ্ভট পরিকল্পনাই করুক সব কিছু নস্যাৎ করার জন্য প্রস্তুত থাকুন। এবার যে মুক্তি আমরা অর্জন করেছি তা আমাদের কাছ থেকে কেউ যেন ছিনিয়ে নিতে না পারে তার জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকুন।

আপনারা জেনেছেন, পতিত সরকার ও তার দোসররা প্রতিবছর দেশ থেকে ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ সম্প্রতি এই তথ্য দিয়েছে। পাচার হয়ে যাওয়া এই অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য সম্ভব সব ধরনের উদ্যোগ আমরা গ্রহণ করেছি। এ কাজে সফল হতে পারলে আমাদের অর্থনীতি আরও গতি পাবে। এ কাজে আমরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার সাহায্য নিচ্ছি।

বিশ্ব নেতৃবৃন্দকেও তিনি ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের এই সংকটময় সময়ে তারা প্রায় সবাই সহযেগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমি যখন সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেই সে সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, কানাডা, ইতালি, হল্যান্ড, জাতিসংঘ মহাসচিবসহ বিশ্বের অনেক দেশের সরকার প্রধানের সঙ্গে আমার বৈঠক করার সুযোগ হয়। তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমাদের প্রতি সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

Advertisement

এমইউ/এমআইএইচএস/এমএস