দেশজুড়ে

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১০ মাসে নিহত ৭৪

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বেড়েই চলেছে সশস্ত্র গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারের লড়াই। গোলাগুলি ও সংঘর্ষে গত ১০ মাসে নিহত হয়েছেন ৭৪ জন রোহিঙ্গা। ক্যাম্প ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্র এতথ্য নিশ্চিত করেছে।

Advertisement

সাধারণ রোহিঙ্গাদের ভাষ্যমতে, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অরগানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। তারা চাঁদাবাজি, খুন, নির্যাতনসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। ক্যাম্পের ভেতর দোকান বা ভালো কিছু করলে সেগুলো থেকে চাঁদা তোলেন তারা। সাধারণ রোহিঙ্গাদের ধরে আস্তানায় নিয়ে নির্যাতন করা হয়। ভয় ও আতঙ্কে তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পান না।।

উখিয়ার ক্যাম্প-১৭ এর বাসিন্দা আব্দুল হালিম। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে পালিয়ে উখিয়া ক্যাম্পে আশ্রয় নিলাম। এখন আমাদের জাতি-গোষ্ঠীর কিছু খারাপ মানুষ বিভিন্ন গ্রুপের নাম দিয়ে সন্ত্রাসী করছে।

গত ২১ অক্টোবর এসব সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যরা ক্যাম্পে বসবাসরত একই পরিবারের তিন সদস্য আহমেদ হোসেন (৬০), তার ছেলে সৈয়দুল আমিন (২৮) ও মেয়ে আসমা বেগমকে (১৩) গুলি করে হত্যা করে বলেও জানান আব্দুল হালিম।

Advertisement

টেকনাফ নয়াপাড়া রেজিস্ট্রার ক্যাম্পের মাঝি (নেতা) ইকবাল জানান, গত ১০ নভেম্বর রেজিস্ট্রার ক্যাম্প সি-৫ ব্লকে রাতে মো. জুবায়ের নামের এক রোহিঙ্গা যুবককে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গুলি করে হত্যা করে।

তিনি বলেন, এসব ঘটনায় আমরা সব সময় আতঙ্কে থাকি। এপিবিএন, পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছেন। তারপরও এসব সন্ত্রাসীরা তাদের অপরাধমূলক কাজ করে যাচ্ছেন।

উখিয়া ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) খন্দকার ফজলে রাব্বি জানান, গত এক সপ্তাহে ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে দেশি-বিদেশি অস্ত্র-গুলি ও গ্রেনেডসহ কয়েকজন আরসা সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযান চলমান থাকবে।

রোহিঙ্গা নেতা ও আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএইচপিএস) সভাপতি ডা. মোহাম্মদ জুবায়ের বলেন, ক্যাম্পগুলোতে আধিপত্য বিস্তারের জেরে এসব হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে। ক্যাম্পে বেশকিছু গ্রুপ মাদক কারবার, চাঁদাবাজি ও অপহরণসহ নানা অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করছে। এসব ঘটনায় সাধারণ রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে।

Advertisement

জাহাঙ্গীর আলম/এসআর/এমএস