আন্তর্জাতিক

মণিপুরে নারী-শিশুসহ অপহৃত ৬ জনের মরদেহ উদ্ধার

ভারতের মণিপুরে জিরিবাম জেলা থেকে ছয়জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতদের মধ্যে তিনজন নারী এবং তিনজন শিশু রয়েছে, যাদের একজনের বয়স মাত্র আট মাস। মেইতেই সম্প্রদায়ভুক্ত এই পরিবারটিকে পাঁচদিন আগে সন্দেহভাজন কুকি সন্ত্রাসীরা অপহরণ করেছিল। রাজ্য সরকারের শীর্ষ সূত্রে শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

Advertisement

সূত্র জানায়, শুক্রবার রাতে আসামের শিলচরের মর্গে এক নারী ও দুই শিশুর মরদেহ আনা হয়। এসময় মণিপুরের জিরিবাম জেলায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল। শিলচর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (এসএমসিএইচ) মর্গের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রথমে তিনটি মরদেহকে প্রাপ্তবয়স্ক মনে হলেও পরবর্তীতে দুটি মরদেহ শিশুর এবং একটি নারীর বলে নিশ্চিত করা হয়।

আরও পড়ুন>>

উত্তপ্ত মণিপুরে রকেট হামলার পর সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা মণিপুরের তিন জেলায় কারফিউ জারি মণিপুরে সাতরঙা পতাকা ওড়ালো শিক্ষার্থীরা

এরপর শনিবার দুপুরে আরও তিনটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ফলে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছয়জনে। তবে এই তিনটি মরদেহ এখনো শনাক্ত করা হয়নি এবং এসএমসিএইচ-এ নিয়ে আসা হয়নি।

Advertisement

যেভাবে অপহরণ

লায়শারাম হিরোজিত নামে এক সরকারি কর্মচারী জানিয়েছেন, তার দুই সন্তান, স্ত্রী, শাশুড়ি ও শ্যালিকা অপহৃতদের মধ্যে ছিলেন। তারা সবাই মেইতেই সম্প্রদায়ের সদস্য। হিরোজিত বলেন, সোমবার তার স্ত্রী তাকে ফোনে জানান, সশস্ত্র একদল লোক তাদের ঘিরে রেখেছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফোনকলটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং পরে ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।

পুলিশ ও সিআরপিএফের সঙ্গে কুকি সন্ত্রাসীদের সংঘর্ষ চলাকালে অপহৃতদের একটি নৌকায় তুলে নিয়ে যেতে দেখা যায় বলে জানান হিরোজিতের স্ত্রীর এক বন্ধু।

বন্দুকযুদ্ধে ১০ জন নিহত

গত ১১ নভেম্বর সিআরপিএফ ও পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১০ জন সন্দেহভাজন কুকি সন্ত্রাসী নিহত হয়। তবে কুকি সম্প্রদায় দাবি করেছে, নিহতরা ‘গ্রাম স্বেচ্ছাসেবক’ ছিলেন।

যদিও এই দাবি অস্বীকার করেছে সিআরপিএফ ও পুলিশ। সংঘর্ষস্থল থেকে একে-৪৭ ও ইনসাস রাইফেল এবং রকেট-চালিত গ্রেনেড লঞ্চারের মতো ভারী অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

Advertisement

শিলচরে কুকি সম্প্রদায়ের প্রতিবাদ

এদিকে, কুকি সম্প্রদায়ের একদল লোক শিলচরের হাসপাতালের বাইরে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ করেছে। তাদের দাবি, শিলচরে মর্গে থাকা ১০ জন কুকি পুরুষের মরদেহ মিজোরামের দিকে নিয়ে যেতে দিতে হবে। পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টার আলোচনার পরও সমঝোতা না হওয়ায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং লাঠিচার্জ করতে হয়।

এই ঘটনার জেরে আসাম পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

কেএএ/