ভয়াল ১৫ নভেম্বর। ২০০৭ সালের এদিনে সুপার সাইক্লোন সিডর বাংলাদেশে আঘাত হানে। লন্ডভন্ড হয়ে যায় বাগেরহাটসহ উপকূলীয় কয়েকটি জেলা। সরকারি হিসেবে এদিনে প্রায় ৯০৮ জন মানুষ মারা যান। স্বজন হারানো ক্ষতিগ্রস্ত শরণখোলা-মোরেলগঞ্জের মানুষের একমাত্র দাবি টেকসই বাঁধ।
Advertisement
স্থানীয়রা জানান, মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সরকার ২০১৫ সালে ২৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোরেলগঞ্জ-শরণখোলায় ৬৩ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ শুরু হয়। যার মধ্যে ১২ কিলোমিটার কংক্রিটের ব্লক দিয়ে তৈরি। এ ১২ কিলোমিটারের মধ্যে সাত কিলোমিটার ভাঙনের কবলে রয়েছে। পরে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে নির্মাণ কাজ শেষ হলে বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে বাঁধ হস্তান্তর করা হয়। তবে বাঁধ হস্তান্তরের আগেই ব্লক ধসে বিলীন হওয়া শুরু করে বলেশ্বর নদীতে। এলাকাবাসীর মাঝে দেখা দেয় ভাঙন আতঙ্ক। নদীতে ব্লক ধসে ও মাটির উপরের অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
তাফালবাড়ি এলাকার সমাজসেবক নজরুল ইসলাম বলেন, বাঁধের ব্লক ধসে বিলীন হচ্ছে নদীতে। শরণখোলা উপজেলার বগি, গাবতলা, মোরেলগঞ্জের আমতলা, ঘাষিয়াখালী এলাকা থেকে ভাঙন শুরু হয়েছে। এছাড়াও বেশ কয়েকটি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। নদী শাসন না করে বাধ নির্মাণে এ ধরনের ক্ষতি শিকার হচ্ছে।
দক্ষিণ সাউথখালী গ্রামের আমিনুর রহমান বলেন, দর্শন নদী ভাঙনে আমাদের অনেক জমিজমা হারিয়েছি। সিডরে অনেক স্বজন হারিয়েছি। বাঁধ নির্মাণ শুরু হলে আশা রেখেছিলাম ভাঙন ও দুর্যোগ থেকে মুক্তি পাব। সেই স্বপ্ন এখন আতঙ্কে পরিণত হয়েছে।
Advertisement
গাবতলা এলাকার মহারা শিকদার বলেন, বাঁধ নির্মাণের শুরুতে আমরা নদী শাসনের দাবি করেছিলাম। সভা সমাবেশ অনেক করেছি তারপরও ওদের শাসন না করে বাদ নির্মাণ করেছে। এখন বাঁধে ভাঙন শুরু হয়েছে। ফসলি জমি, গাছপালা, বসতঘর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মাদ আল বেরুনি বলেন, ৬৩ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করে সিআইপি প্রকল্প। তারপর গত বছরের ডিসেম্বর মাসে আমাদের কাছে সেটি হস্তান্তর করা হয়েছিল। এখন বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমরা মাঠে থেকে পর্যবেক্ষণ করে কাজ করছি।
আরএইচ/জেআইএম
Advertisement