অর্থনীতি

এনআরবিসি ব্যাংকের পারভেজ-আদনানের হিসাব জব্দ

এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল ও ব্যাংকটির এক্সিকিউটিভ কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান আদনান ইমামের ব্যাংক হিসাব স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। পাশাপাশি মো. জাফর ইকবাল হাওলাদার নামের এক ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবও স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের একক মালিকানাধীন বা সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবও স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিএফআইইউ দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়ে অ্যাকাউন্ট জব্দ করার এ নির্দেশনা দেয়। সংস্থাটির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নির্দেশনামতে, আগামী ৩০ দিন তাদের ব্যাংক হিসাবে কোনো লেনদেন করা যাবে না। প্রয়োজনে লেনদেন স্থগিতের সময়সীমা আরও বাড়ানো যাবে। এছাড়া মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা অনুযায়ী এসব হিসাবের লেনদেন বিবরণী, কেওয়াইসি ফরমসহ প্রয়োজনীয় তথ্য আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে বিএফআইইউতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের দ্বৈত নাগরিক মোহাম্মেদ আদনান ইমাম ও বাংলাদেশ ও রাশিয়ার দ্বৈত নাগরিক পারভেজ তমালের বিরুদ্ধে রয়েছে নজিরবিহীন দুর্নীতির অভিযোগ। চরম বিতর্কিত করে আদনান ইমাম মাত্র ৩ বছরেই বিভিন্ন ব্যাংক থেকে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছেন। আর কাগুজে কোম্পানি খুলে শত শত কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা পাচার করেছেন বিদেশে।

শ্বশুরবাড়ির গৃহকর্মীকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাজিয়ে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে খোলা ‘টিএসএন ট্রেড অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড কোম্পানি’ নামে ৪০০ কোটি টাকা ঋণ তুলে আত্মসাৎ করেছেন আদনান ইমাম। ১২০ কোটি টাকার সরকারি কাজের বিপরীতে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ তুলে পাচার করার অভিযোগ আসে গণমাধ্যমে।

Advertisement

অভিযোগ আছে, আদনান ইমামের এ লুটপাটের সহযোগী ছিলেন-এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল। ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা ইঞ্জিনিয়ার ফরাসাত আলী এবং সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সহ-সভাপতি ও মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি-সিলেটের চেয়ারম্যান ড. তৌফিক রহমান চৌধুরীর হাত ধরে ব্যাংকটির যাত্রা শুরু হয়। এর কয়েক দিনের মধ্যেই বিভিন্ন দুর্নীতি ও আলোচিত ব্যবসায়ী শহিদুল আহসানের সঙ্গে যোগসাজশে প্রায় ৯০০ কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারির তথ্য প্রকাশিত হয় গণমাধ্যমে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দমাতে বিপুল অর্থ সরবরাহ করার অভিযোগ রয়েছে তমাল ও আদনানের বিরুদ্ধে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের পর সিন্ডিকেটসহ আত্মগোপনে চলে যান তারা। এসএম পারভেজ তমালের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ থাকায় গত ৬ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ব্যাংকটির অনিয়মের বিষয়গুলো তদন্ত করতে মাঠে নামতে যাচ্ছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ইএআর/এমএএইচ/জেআইএম

Advertisement