২০২৪ সালের প্রথম ১০ মাসে অন্তত এক লাখ ৯১ হাজার ৯০০ জন অনিয়মিত অভিবাসী ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এর বিভিন্ন দেশে এসেছেন। জোটের সীমান্ত সুরক্ষা সংস্থা ফ্রন্টেক্স জানিয়েছে, সংখ্যাটি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৩ শতাংশ কম।
Advertisement
ফ্রন্টেক্স বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত অনিয়মিত অভিবাসী আগমন সবচেয়ে বেশি কমেছে সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরীয় এবং পশ্চিম বলকান রুটে। ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় এই দুটি রুটে আগমন কমেছে যথাক্রমে ৬২ শতাংশ এবং ৮০ শতাংশ।
ইইউ সীমান্ত সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, মানবপাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের লক্ষ্যে তিউনিশিয়া এবং লিবিয়ার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তির কারণেই ইতালিমুখী অভিবাসীদের সংখ্যা ক্রমশ কমেছে।
সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে অন্তত ৫৫ হাজার ২২৭ জন অনিয়মিত অভিবাসী ইতালিতে এসেছেন। যাদের বেশিরভাগই বাংলাদেশ, সিরিয়া ও টিউনিশিয়া থেকে এসেছেন।
Advertisement
অন্যদিকে পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় রুট হয়ে স্পেনে আগমনের হারও ৫ শতাংশ কমেছে। মরক্কো এবং অন্যান্য উত্তর আফ্রিকার দেশগুলো থেকে সমুদ্র এবং স্থলপথে এসব অভিবাসীরা স্পেনে এসে থাকেন।
বছরের প্রথম ১০ মাসে ১২ হাজার ৯৫২ জন অনিয়মিত অভিবাসী এই রুটে ইউরোপে ঢুকেছেন। তাদের বেশিরভাগই আলজেরিয়া, মরক্কো এবং মালির নাগরিক।
অন্যদিকে, পূর্ব ভূমধ্যসাগর রুট হয়ে গ্রিস এবং পশ্চিম আফ্রিকার রুট হয়ে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে অভিবাসী আগমনের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।
বছরের শুরু থেকেই এ দুইটি সমুদ্রপথ ইউরোপের সবচেয়ে ব্যস্ত অভিবাসন রুটে পরিণত হয়েছে।
Advertisement
তবে ইইউর বহিঃসীমান্তে আগের বছরের তুলনায় সর্বাধিক সংখ্যক প্রবেশ শনাক্ত করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ১৯৫ শতাংশ।
১৫ হাজার ২৩৪ জন অনিয়মিত অভিবাসী স্থল সীমান্ত হয়ে ইউরোপে ঢুকেছেন। ইউক্রেনীয়, সোমালি এবং ইরিত্রিয়ান নাগরিকেরা এই রুটে সর্বোচ্চ সংখ্যায় প্রবেশ করেছেন।
উত্তর ফ্রান্স এবং ব্রিটেনের মধ্যকার ইংলিশ চ্যানেল হয়ে অনিয়মিত অভিবাসন ৫ শতাংশ বেড়েছে।
জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা (আইওএম) বলছে, এই বছর ব্রিটিশ উপকূলে পৌঁছানোর চেষ্টা করা অন্তত ৭০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। যা গত দশ বছরের মধ্যে এই রুটে সর্বোচ্চ।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এবং অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে সতর্ক করেছিল, উত্তর আফ্রিকা থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়া মানুষের সংখ্যা ২০২৪ সালে তীব্রভাবে কমেছে।
ইউএনএইচসিআর অনুসারে, এ বছর এ পর্যন্ত সমুদ্রপথে ইউরোপীয় উপকূলে পৌঁছানোর চেষ্টা করে কমপক্ষে দুই হাজার ৮৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তবে এই সংখ্যাটি অনেক বেশি বলে ধারণা করছে এনজিও ও অভিবাসন সংস্থাগুলো।
এমআরএম/জিকেএস