দেশজুড়ে

সেই দিনমজুর জামাল মিয়ার জামিন, সন্তানরা ফিরে পেল বাবাকে

জাগো নিউজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর গোপালগঞ্জের সেই দিনমজুর জামাল মিয়াকে জামিন দিয়েছেন আদালত। এতে করে অসহায় চার শিশু সন্তান ফিরে পেল তাদের বাবাকে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ফিরোজ মামুন এ জামিন দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (সদর থানা আমলি আদালত) জিআরও এএসএআই লাভলী।

দিনমজুর জামাল মিয়ার পক্ষে জামিন আবেদন করেন গোপালগঞ্জ জেলা লিগ্যাল এইডের আইনজীবী অ্যাড. শারমিন জাহান।

Advertisement

আরও পড়ুন: মা কবরে বাবা জেলে, তিনদিন চুলা জ্বলেনি শিশু সাজ্জাদের ঘরে

তিনি বলেন, জেলা লিগ্যাল এইডের পক্ষ থেকে জামাল মিয়ার জামিন আবেদন করি। বিচারক আমাদের কথা বলার আগেই নথি হাতে পেয়ে জামিন মঞ্জুর করেন। হয়তো বিচারক আগে থেকেই জামাল মিয়ার চার বাচ্চার সংবাদটির বিষয়ে অবগত ছিলেন। মানবিক দিক থেকে তাকে জামিন দেওয়া হয়েছে। এতে করে ওই চার বাচ্চা ফিরে পেল তার বাবাকে।

এর আগে সকালে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ঘটনা নজরে নিয়ে শিশুদের দেখভাল করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। স্থানীয় সমাজ সেবা অধিদপ্তর ও গোপালগঞ্জের ডিসিকে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।

Advertisement

আদালতে এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আনেন আইনজীবী ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ, ব্যারিস্টার নাজিয়া কবির ও ব্যারিস্টার সিফাত মাহমুদ শুভ।

হাইকোর্টের নির্দেশের পরই জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে জামাল মিয়ার চার বাচ্চাদের দেখতে ছুটে যান কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনুর আক্তার। এসময় চার বাচ্চাকে বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রীসহ নগদ অর্থ দেওয়া হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনুর আক্তার বলেন, জেলা প্রশাসক কামরুজ্জামান বিষয়টি অবগত আছেন। তার অনুমতিক্রমে আজকে আমরা প্রাথমিকভাবে সাজ্জাদসহ তাদের চার ভাই বোনের জন্য ১০ হাজার টাকা ও কিছু শিশু সামগ্রী নিয়ে আসছি। একটা কথাই বলবো সাজ্জাদ এবং তার বোনদের পাশে উপজেলা প্রশাসন সব সময় আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জামাল মিয়া পেশায় একজন দিনমজুর। একমাস আগে তার স্ত্রী সাথী বেগম যমজ কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। এর ছয়দিন পর সাথী বেগম মারা যান। স্ত্রীর মৃত্যুর পর সদ্য জন্ম নেওয়া দুগ্ধপোষ্য দুই কন্যাসহ চার ছেলে মেয়ে নিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন জামাল মিয়া। ঘরে অসুস্থ মা ও চার শিশু সন্তানের লালন-পালন করে দিন কাটছিল তার।

এ অবস্থায় ৮ নভেম্বর দিবাগত রাতে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ জামাল মিয়াকে বাড়ি থেকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। এরপর তাকে গোপালগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়।

গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশ পরদিন ৯ নভেম্বর জামাল মিয়াকে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদার হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠায়।

আশিক জামান অভি/জেডএইচ/জিকেএস