প্রশাসনের প্রত্যেকটি মানুষের মননে মগজে যে ফ্যাসিবাদী চিন্তা, যে প্রভুত্বশালী চিন্তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেটা একদিনে কিংবা ১০ বছরেও উপড়ে ফেলা সম্ভব নয় বলে মনে করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
Advertisement
তিনি বলেছেন, দেশে একটি দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পুরো একটা প্রজম্মকে সেই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে উঠে আসতে হবে, দাঁড়াতে হবে। যতদিন এই প্রজন্ম প্রশাসনের প্রত্যেকটা জায়গায় নতুন করে দায়িত্ব না নেবে ততোদিন পর্যন্ত এই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হবে বলে মনে হচ্ছে না।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইলের সন্তোষে ‘মওলানা ভাসানী ও নতুন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ৭২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত যে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে তার ভীত অনেক গভীরে। আমরা শুধু গাছটা কাটতে পেরেছি, কিন্তু শেকড় এখনও উৎখাত করতে পারিনি। সেই লড়াই আমাদের চালিয়ে যেতে হবে। সেই শিক্ষা মওলানা ভাসানী আমাদের দিয়েছেন। সেই পথ আমাদের দেখিয়েছেন। কীভাবে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে, সেই রাস্তা তিনি আমাদের দেখিয়ে দিয়ে গেছেন। আমরা সেটি অনুসরণ করতে চাই এবং লড়াইয়ে সফলকাম হতে চাই।
Advertisement
আসিফ মাহমুদ বলেন, এদেশের ইতিহাসকে ক্ষমতাসীনরা বারবার তাদের মতো করে বিকৃত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমরা সেই বানানো ইতিহাসের দেওয়ালে প্রথম আঘাতটা করতে পেরেছি। আমরা বলেছি যে, এখানে কোনো একক জাতির পিতা নেই। আমাদের অনেক ফাউন্ডিং ফাদার্স রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম প্রধান একজন হলেন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী।
অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, জনগণের মনোনীত সরকার আমরা। জনগণের প্রতিনিধিত্ব করার জন্যই আমরা। নতুন যাদের উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে আশা করি বাংলাদেশের জনগণ তাদের কাজ দেখে বিচার করবেন। যদি দেখি জনগণের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ আসছে তাহলে আমরা বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখবো। তবে আমরা মনে করি যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তারা জনগণের পাশে থাকবে। তারা কাজের মাধ্যমে তাদের যোগ্যতা প্রমাণ করবে।
কবি ও লেখক ফরহাদ মজহারের সভাপতিত্বে সভায় প্রবন্ধ পাঠ করেন ভাসানী পরিষদের সদস্য সচিব আজাদ খান ভাসানী। স্বাগত বক্তব্য দেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আনোয়ারুল আজীম আখন্দ। বক্তব্য দেন ভাসানী ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মাহমুদুল হক সানু, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য সরোয়ার তুষার ও অলিক মৃধা, নাগরিক কমিটি টাঙ্গাইল শাখার কামরুজ্জামান শাওন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত মারুফের মা মোর্শেদা, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সংগঠক ফাতেমা রহমান বিথি, আবু আহমেদ শেরশাহ প্রমুখ। সঞ্চালনায় ছিলেন মাসুদুর রহমান। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আজাদ খান।
সভায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার বিজয় মিছিলে গুলিতে নিহত স্কুলছাত্র মারুফের নামে টাঙ্গাইল স্টেডিয়ামের নামকরণের ঘোষণা দেন।
Advertisement
আরিফ উর রহমান টগর/এফএ/এমএমএআর/এএসএম