বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের পদযাত্রা থেকে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগের মামলায় দলটির যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ ৬৬ জন আইনজীবীকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে গত ৩ নভেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমরার আহম্মেদ তাদের অব্যাহতি দেন।
Advertisement
বুধবার (১৩ নভেম্বর) কোতয়ালী থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের এসআই আল আমিন জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কোতোয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক মো. শাহাবুদ্দিন হাওলাদার বাদী হয়ে এ মামলা করেন। চলতি বছরের ১০ অক্টোবর ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ ৬৬ জন আইনজীবীর বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ না পেয়ে অব্যাহতির আবেদন করে আদালতে চূড়ান্ত প্রদিবেদন দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতয়ালী থানার এসআই মোহাম্মদ ওয়ালী উল্লাহ। আদালত প্রতিবেদন গ্রহণ করে শুনানির জন্য ৩ নভেম্বর দিন ধার্য করেন। নির্ধারিত দিনে শুনানি শেষে আসামিদের অব্যাহতি দেওয়া হয়।
অব্যাহতি পাওয়া অন্য আইনজীবীরা হলেন- বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, রুহুল কুদ্দুস কাজল, মো. ওমর ফারুক ফারুকী, আব্দুল খালেক মিলন, খোরশেদ আলম মিয়া, কামরুল ইসলাম সজল, মাহবুবুর রহমান খান, জহুরুল ইসলাম মুকুল, মোহাম্মদ আলী, দেওয়ান রিপন, হাজী মো. মহাসিন, মুজাহিদুল ইসলাম সায়েম, আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন, শাম্মী আক্তার, মোছা. হিরা, নারগিস পারভেজ মুক্তি, নুরুল ইমান বাবুল, ইউসুফ সরকার, আজাহারুদ্দিন রিপন, কে এম মিরাজ হোসেন, সাইদুর রহমান সোহাগ, কেএম বরকত সবুজ, মাহবুব আলম আক্তার, জহুরুল ইসলাম মুকুল, কাজী পনির, এস এম হুমায়ুন কবির, মোছা. তাহমিনা আক্তার হাসমি, হাফিজুর রহমান হাফিজ, তহিদুর রহমান তৌহিদ, আব্দুল হান্নান, শফিকুল ইসলাম শফিক, মোছা. খুকি, যাদু, নুরুজ্জামান, জাবেদ, আনোয়ার হোসেন, ইব্রাহীম স্বপন, সাঈদ আবু জাফর রিজভী, আল ফয়সাল সিদ্দিক, এমডি কাইয়ুম, দেলোয়ার জাহান রুমি, এ. আর রায়হান, আমির, আব্দুর রশিদ, নুরুজ্জামান তপন, মাজিদুর রহমান মাজেন, তানভীর সোহেল, মোছা. রওসন দিল আফরোজ, সেলিম চৌধুরী, শাহাদাত হোসেন আদিল, আব্দুল বাছেদ রাখি, শেখ আলাউদ্দিন, রফিক (সাবেক লাইব্রেরিয়ান), ইলিয়াছ, আফজাল মৃধা, টিপু সুলতান, আশরাফ জালাল খান মনন, শিপন, লুৎফর, লতিফ ভূঁইয়া, মাহাবুব উদ্দিন, পাপ্পু, রাহাত, রাসেল আহম্মেদ, ফরিদ উদ্দিন ও শহিদুল ইসলাম।
Advertisement
মামলার এজাহারে বলা হয়েছিল, ২০২৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে ঢাকা আইনজীবী সমিতি ভবনের নিচে ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্ট নামে ব্যানার এবং সরকারবিরোধী বিভিন্ন ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড নিয়ে আসামিরাসহ অজ্ঞাতপরিচয় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের সমর্থিত আরও অনেক আইনজীবী নির্ধারিত কর্মসূচি পদযাত্রা সফল করার লক্ষ্যে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।
এসময় মাহাবুব উদ্দিন খোকন, কায়সার কামাল, রুহুল কুদ্দুস কাজল ও ওমর ফারুক ফারুকীদের নেতৃত্বে ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্ট ব্যানারসহ আইনজীবীরা মিছিল করতে করতে ঢাকা আইনজীবী সমিতি ভবন থেকে জনসন রোডের ঢাকা আইনজীবী সমিতির ভবনের প্রবেশ মুখে প্রধান সড়কের ওপর চলে আসেন।
তখন কোতোয়ালী থানা পুলিশ মিছিলকারী আইনজীবীদের রাস্তা অবরোধ না করার জন্য বারবার অনুরোধ করেন। আইনজীবীদের অনুরোধ সত্ত্বেও তারা পুলিশের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রধান সড়কে এসে রাস্তা অবরোধ করে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। তখন পুলিশ অত্যন্ত ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করে, ‘এলাকাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় রয়েছে। এছাড়া সাধারণ বিচারপ্রার্থীও যাওয়া-আসা করে থাকেন, আপনারা রাস্তা ছেড়ে দিন।’
তখন মিছিলকারীরা হট্টগোল সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে কর্তব্যরত পুলিশের ওপর প্রথমে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন এবং তাদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডের লাঠি দিয়ে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের পিটিয়ে আহত করেন। এসময় আত্মরক্ষার্থে এবং যান চলাচল ও সাধারণ মানুষের চলাচল স্বাভাবিক রাখাসহ আদালত প্রাঙ্গণ এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে আইনজীবীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ সদস্যরা।
Advertisement
জেএ/এমকেআর/জেআইএম