দেশজুড়ে

সরকারি ব্রিজ ব্যবহার হচ্ছে মমতাজের ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে

মানিকগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম। বিগত সরকারের সময় ক্ষমতার প্রভাব খটিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে গড়েছেন শত শত কোটি টাকার সম্পদ। করেছেন বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান।

Advertisement

মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের হাসপাতালে যাতায়াতের সুবিধার্থে ৪০ লাখ ১৮ হাজার ৩১৬ টাকা ব্যয়ে ২০ ফুট একটি সেতু নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের ক্ষুদ্রসেচ বিভাগ। কৃষি জমির পানি নিষ্কাশনের জন্য বরাদ্দ হলেও স্থানান্তর করে ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের সামনে এটি নির্মাণ করা হয়েছে।

তবে সেতুটি জনস্বার্থে কোনো কাজে আসছে না বলে দাবি স্থানীয়দের। কৃষকের সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার প্রায় ৪১ লাখ টাকা ব্যয় করলেও ক্ষমতার দাপটে সাবেক এমপির ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার হচ্ছে সেতুটি। শুধু তার এই একটি স্বার্থের জন্য গজারিয়া চকের ৪ হাজার বিঘা জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

মানিকগঞ্জ বিএডিসি (ক্ষুদ্রসেচ) অফিস সূত্রে জানা যায়, গজারিয়া চকের ৪ হাজার বিঘা কৃষি জমির পানি নিষ্কাশনের জন্য ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ৪০ লাখ ১৮ হাজার ৩১৬ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ২০ ফুট ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়।

Advertisement

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মানিকগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডের পাশে মানরা এলাকার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে মমতাজ চক্ষু হাসপাতালের সামনে সেতুটি নির্মাণ করেছে বিএডিসির ক্ষুদ্রসেচ বিভাগ। সেতুর নিচে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মাটি দিয়ে খালটি ভরাট করে জায়গাটি দখল করে রেখেছে এবং শুধু নিজের প্রতিষ্ঠানের জন্য সেতুটি ব্যবহার করছে। এতে করে কৃষি জমির পানি নিষ্কাশন হওয়ার জায়গায় পানি আটকে আছে। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে গজারিয়া চকের কৃষি জমিতে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২০ সালে জেলা প্রশাসক ছিলেন এস এম ফেরদৌস। তার নেতৃত্বে গজারিয়া চকের ৪ হাজার বিঘা কৃষি জমির পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তিনি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) ক্ষুদ্রসেচ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মোক্তার হোসেনকে দায়িত্ব দিলে তিনি একটি সেতুর বরাদ্দ পান। গজারিয়া চকের পানি নিষ্কাশনের জন্য সেতুটি নির্মাণ করার কথা থাকলেও সাবেক এমপি মমতাজকে খুশি করতে তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সামনে সেতু নির্মাণ রেজুলেশন করেন মোক্তার হোসেন। পরে ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মানিকগঞ্জে নিয়োগ পেয়ে ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর বদলি হয়ে চলে যান।

তৎকালীন সময়ের বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) ক্ষুদ্রসেচ বিভাগ মানিকগঞ্জের সহকারী প্রকৌশলী মোক্তার হোসেন মুঠোফোনে জাগো নিউজকে বলেন, সেতুটি নির্মাণের সময় আমি ছিলাম না। সেতুটি যখন নির্মাণ হয় তখন আরেকজন ছিলেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) ক্ষুদ্রসেচ বিভাগ মানিকগঞ্জের সহকারী প্রকৌশলী তিতাস জাগো নিউজকে বলেন, এই সেতুটি নির্মাণের পর আমি মানিকগঞ্জে আসি। তবে আমি যতটুকু জানি মোক্তার হোসেন স্যার ব্রিজটির রেজুলেশন পর্যন্ত ছিলেন। কাজের সময় ফরহাদ হোসেন সৌরভ নামে একজন ছিলেন। তিনি এখন বিএডিসিতে নাই। অন্য একটা চাকরি করেন।

এফএ/এমএস

Advertisement