পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ইসিজি মেশিনের যন্ত্রাংশ খুলে নেওয়া ও টেকনিশিয়ানদের হত্যার হুমকি দেওয়া দালালচক্রের মূলহোতা সাদ্দামকে আটক করেছে সেনবাহিনী ও পুলিশের একটি যৌথ টিম।
Advertisement
সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে হাসপাতাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। এসময় তার কাছে গাঁজা ও হেরোইন পাওয়া গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম।
ওসি জানান, দালাল সাদ্দামের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। জোর করে হাসপাতালে ঢুকে কখনো ইসিজি মেশিন ছিনিয়ে নেওয়া আবার কখনো যন্ত্রাংশ খুলে নেওয়া, রোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়সহ নানান অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল তার। এগুলোতে যারা সহযোগিতা করতে অপারগতা প্রকাশ বা প্রতিবাদ জানিয়েছেন তাদের নানাভাবে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টিম তাকে আটক করে। এরপর তাকে সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। খুব শিগগির তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
এ বিষয়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাদ্দামকে আটকের বিষয়টি জানিয়েছে। এতে টেকনিশিয়ান ও কর্মকর্তা হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা সাময়িকভাবে স্বস্তি প্রকাশ করলেও তাদের দাবি, হাসপাতালে একটি স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প করে সার্বক্ষণিক আইনি সহায়তা নিশ্চিত করা। এতে হাসপাতাল থেকে দালাল নির্মূল করা সহজ হবে।
Advertisement
এর আগে শনিবার (৯ নভেম্বর) ‘যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে গেছে দালাল চক্র, ৩ দিন ধরে বন্ধ ইসিজি সেবা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাগো নিউজ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালটিতে আগে ২৪ ঘণ্টা ইসিজি সেবা ছিল না। ফলে ইসিজির নামে সাদ্দামসহ দালালরা রোগী ও তার স্বজনদের জিম্মি করে ৫০০-৭০০ টাকা আবার কখনো ১৫০০ টাকা করেও বাগিয়ে নিতেন। কিন্তু বছরখানেক ধরে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা মাত্র ৮০ টাকায় এ সেবা হাসপাতাল থেকে দেওয়া হচ্ছে। এতে তাদের বাণিজ্য বন্ধ হওয়ায় দফায় দফায় ইসিজি কক্ষ-২ থেকে ইসিজি মেশিন ছিনিয়ে নেন। পরে ওই মেশিন দিয়ে তারা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে রোগীদের পরীক্ষা করিয়ে ৫০০-৭০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করতেন।
এ কাজে বাধা দিলে বা আপত্তি জানালে দালাল চক্রের মূলহোতা সাদ্দাম প্রাণনাশের হুমকি দেন। ইসিজি রুমে চাকু নিয়ে ঢুকে আগে ভয়ভীতি দেখান এবং মেশিন নিয়ে যান। কখনো কখনো মেশিন না নিলেও পরীক্ষা বন্ধ করিয়ে রেখে নিজেদের বাণিজ্য পরিচালনা করেন। সবশেষ গত ৬ নভেম্বর রাত ১১টার দিকে আবার চাকু নিয়ে ইসিজি রুমে প্রবেশ করেন সাদ্দাম। তিনি ইসিজি মেশিনের লিডসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে যান।
এসআর/এএসএম
Advertisement