চট্টগ্রাম মহানগরের পাহাড়সমৃদ্ধ আকবর শাহ এলাকার অন্তত ৪ শতাধিক পাহাড়-টিলা ও জলাশয়ের মালিকরা পাহাড় কাটা ও জলাশয় ভরাট করবেন না মর্মে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
Advertisement
রোববার (১০ নভেম্বর) বিকেলে আকবর শাহ থানাধীন উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের জয়ন্তিকা ও উত্তর লেক সিটি এলাকায় এক মতবিনিময় সভায় পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তারা।
এ সময় স্থানীয় ভূমি মালিকরা নিজেদের অঙ্গীকারপত্র অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যসচিব মো. সাদি উর রহিম জাদিদের কাছে তুলে দেন।
ব্যতিক্রমী এই মতবিনিময়ের আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এবং ‘ভোরের আলো’ নামে একটি সংগঠন।
Advertisement
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক সোনিয়া সুলতানা। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আরাফাত সিদ্দিকী, ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও আকবর শাহ থানা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সাত্তার সেলিম, সিএমপির আকবর শাহ থানার ওসি মো. আফতাব হোসেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) চট্টগ্রামের সমন্বয়ক মুনিরা পারভীন রুবা।
ভোরের আলোর প্রতিষ্ঠাতা, সাংবাদিক ও পরিবেশকর্মী মো. শফিকুল ইসলাম খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ভূমি মালিকদের পক্ষ থেকে পাহাড়-টিলা কাটা ও জলাশয় ভরাট না করার লিখিত অঙ্গীকারপত্র তুলে ধরেন জয়ন্তিকা আবাসিক প্লট মালিক কল্যাণ কমিটির আহ্বায়ক মো. তৌহিদুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যসচিব ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাদি উর রহিম জাদিদ বলেন, ‘পরিবেশ সংরক্ষণ আইন সংশোধিত-২০১০ অনুযায়ী সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত কিংবা ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড় বা টিলা, ছনখেলা কিংবা দৃশ্যমান পাহাড়, জলাশয় যাই হোক না কেন, তা কাটা বা ভরাট করা এবং যেকোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ নিষিদ্ধ। এটিকে কোনোভাবেই নষ্ট কিংবা ক্ষতিসাধন কিংবা মোচন করা যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আকবর শাহ এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছি। পরিবেশ আইন সবার জন্য প্রযোজ্য। সুতরাং আপনারা নিজেরা যদি সচেতন হন, তাহলে আপনাদের উচ্ছেদের প্রয়োজন নেই। কিন্তু যদি পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে কিছু করেন, তাতে কোনো ছাড় পাবেন না।’
Advertisement
সভাপতির বক্তব্যে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক সোনিয়া সুলতানা বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত পাহাড়-টিলা কাটা ও জলাশয় ভরাটের তথ্য পাচ্ছি। আকবর শাহতেও এগুলো হচ্ছে। প্রতিনিয়ত অভিযান চালিয়ে জরিমানা ও মামলা দেওয়া হচ্ছে। সুতরাং আমরা চাই না আপনাদের কষ্ট দিতে। আপনারা যদি পাহাড়-টিলা বা জলাশয় মোচন থেকে বিরত থাকেন এবং পরিবেশ আইন মেনে চলেন, তাহলে আমাদের এসব করতে হয় না।’
এতে ভূমি মালিকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ওহীদুল ইসলাম, সদস্যসচিব মো. কামাল উদ্দীন ও ভূমি মালিকপক্ষের প্রতিনিধি মো. আক্কাস আলী।
এএজেড/এসএনআর/জেআইএম