আর্জেন্টিনার ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে ওষুধ ও অ্যাক্টিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট (এপিআই) শিল্পে যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে এ খাতে সরকার প্রদত্ত প্রণোদনা সুবিধা গ্রহণের প্রস্তাব করেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ।
Advertisement
রোববার (নভেম্বর ১০) রাজধানীর গুলশানে ডিসিসিআই সভাপতি এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত মার্সেলো কার্লোস সেসার মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এই আহ্বান জানান।
সম্প্রতি বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার স্থায়ী মিশনের কার্যক্রম চালুর মাধ্যমে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
বৈঠকে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৬৭৮.৭৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৬৬৩.৩৪ ও ১৪.৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা আশানুরূপ নয়।
Advertisement
তাই ওষুধ ও অ্যাক্টিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট শিল্পে যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে এ খাতে সরকার প্রদত্ত প্রণোদনা সুবিধা গ্রহণের সুযোগ গ্রহণের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি সম্ভব।
বাংলাদেশে থেকে আরও বেশি হারে তৈরি পোষাক পণ্যের পাশাপাশি পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ওষুধ এবং প্লাস্টিক পণ্য আমদানির জন্য আর্জেন্টিনার উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান ডিসিসিআই সভাপতি।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোষাক ও চামড়াজাত পণ্য আর্জেন্টিনায় রপ্তানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান উচ্চহারে ট্যারিফ হ্রাসকরণে আর্জেন্টিনার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিবেচনার আহ্বান জানান।
আশরাফ আহমেদ উল্লেখ করেন, তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশ দ্রত উন্নতি করছে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ থেকে সফটওয়্যার এবং এ খাতে দক্ষ মানবসম্পদ নেওয়ার প্রস্তাব করেন। উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে ভার্চুয়াল প্ল্যার্টফমে নিয়মিত বিটুবি (বিজনেস টু বিজনেস) ম্যাচ-মেকিং আয়োজনের প্রস্তাব করেন যাতে করে দু দেশের ব্যবসীরা একে অন্যের বাজার সম্পর্কিত তথ্য ও চাহিদা সম্পর্কে অবগত হতে পারে।
Advertisement
আর্জেন্টিনার উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের বাজার অথবা নিদিষ্ট কোনো পণ্যের সম্ভাবনা সম্পর্কিত তথ্য জানতে ঢাকা চেম্বারের বাণিজ্যিক গবেষণার সহায়তা নিতে পারে বলে রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন। আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত মার্সেলো কার্লোস সেসা বলেন, দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা ও বিনিয়োগের প্রচুর সম্ভবানা থাকা সত্ত্বেও প্রধানত দুই দেশের ব্যবসায়ীদের যোগাযোগের অভাবের কারণে তা কাঙ্খিত মাত্রায় পৌঁছায়নি।
তিনি বলেন, দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের দেশগুলোতে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ‘হাব’ হিসেবে আর্জেন্টিনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
তিনি উল্লেখ করেন, দক্ষিণ আমেরিকার ৪টি দেশ (আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, উরুগুয়ে, প্যারাগুয়ে) নিয়ে ‘মারকোসার’ অর্থনৈতিক জোট গঠন করা হয়েছে। যারা নিজেদের মধ্যকার পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা ভোগ করে থাকে। এ সুবিধা গ্রহণ করতে তিনি বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের আর্জেন্টিনায় বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এছাড়াও তিনি ডিসিসিআই’র পক্ষ থেকে একটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল প্রেরণের আহ্বান জানান। যাতে করে সে দেশের বাজারের সম্ভাবনা খুঁজে পেতে বাংলাদেশী উদ্যোক্তারা সক্ষম হবে। সেই সাথে রাষ্ট্রদূত ঢাকা চেম্বারকে আর্জেন্টিনার প্রধান প্রধান চেম্বার ও এসোসিয়েশনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরেরও প্রস্তাব করেন।
ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী, সহ-সভাপতি জুনায়েদ ইবনে আলী এবং বাংলাদেশস্থ আর্জেন্টিনার দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন ম্যাক্সিমিলিয়ানো রোমানেলো প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এসআরএস/এমআইএইচএস/জিকেএস