যশোরে দুই জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়ে জালিয়াতি করে আলোচনায় আসা জাকির হোসেন ওরফে মোশারফের বিরুদ্ধে এবার জাল-জালিয়াতি করে অন্যের জমি বিক্রির চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
Advertisement
জমির মালিক ফজলে রাব্বীর অভিযোগ, জাকির হোসেন তার (ফজলে রাব্বী) জমির জাল দলিল করে বিক্রির চেষ্টায় একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে বায়না করেছেন। কিন্তু মামলা থাকায় রেজিস্ট্রি করে দিতে না পারায় বায়না ফেরতও দিয়েছেন।
যশোর শহরের ঘোপ জেল রোড এলাকার মৃত ফজলে আকবরের ছেলে ফজলে রাব্বী জানান, যশোর কোতোয়ালি থানার ৯২ ঘোপ মৌজায় তাদের ২৮ দশমিক ৬৯ শতক জমি রয়েছে। এরমধ্যে ছয় শতক জমি জাল-জালিয়াতি করে জাকির হোসেন দলিল করে নিয়েছেন। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলমান। কিন্তু এরই মধ্যে তিনি ওই জমি বিক্রির জন্য একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে বায়না নিয়েছেন। মামলার বিষয়টি জেলা রেজিস্ট্রি অফিস অবহিত থাকায় জাকির হোসেন জমি রেজিস্ট্রি করতে পারেননি। ফলে বায়না ফেরত দিতেও বাধ্য হন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, জাকিরের বাড়ি যশোর সদর উপজেলার উপশহরের জলপাইতলা ফকিরার মোড় এলাকায়। কিন্তু তার দুটি এনআইডি কার্ড রয়েছে। দুই এনআইডির তথ্য অনুযায়ী, একটিতে নাম জাকির হোসেন, পিতা-মো. মুনছুর আলী, মাতা-সাফিয়া খাতুন, ঠিকানা-সেক্টর ১, উপশহর, সদর, যশোর; জন্মতারিখ ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৬৪। অন্যটিতে নাম মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, পিতা-মো. হারুন উর রশিদ; মাতা, নাম-ঠিকানা ও জন্মতারিখ একই। গত জানুয়ারিতে বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে গ্রেফতার করলে বিষয়টি ফাঁস হয়। গ্রেফতারের পর জাকির হোসেন দাবি করেন, তিনি মোশারফ হোসেন।
Advertisement
এনআইডি জালিয়াতির এ ঘটনা উদ্ঘাটন করে আদালতে প্রতিবেদনও দাখিল করেন যশোর কোতোয়ালি থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) টমাস মন্ডল। বিষয়টি নিশ্চিতও করেন টমাস মন্ডল। ওই মামলায় জামিনে বের হওয়ার পর শহরের ঘোপ এলাকায় কয়েক কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র শুরু করেন বলে অভিযোগ।
জমির মালিক ফজলে রাব্বী অভিযোগ করেন, একসময় জাকির তাদের জমি ও স্থাপনার কেয়ারটেকার ছিলেন। ওইসময় জাল-জালিয়াতি করে ভুয়া দলিল তৈরি করেন। বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর তিনি আদালতে মামলা করেন। মামলাটি এখনো চলছে। এজন্য জমিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞাসম্বলিত সাইনবোর্ডও টানানো রয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন সময় সেই সাইনবোর্ড নষ্ট করে এবং নির্দেশনা উপেক্ষা করে জমি বিক্রির চেষ্টা করছেন জাকির।
এ বিষয়ে জাকির হোসেন ওরফে মোশরফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জমি বিক্রি চেষ্টার কথা স্বীকার করে বলেন, যখন জমি বিক্রির কথা চলছিল, তখন মামলা ছিল না। তবে বায়না রেজিস্ট্রি করতে না পারায় তিনি টাকা ফেরত দিয়েছেন।
তিনি দাবি করেন, ফজলে রাব্বী তাকে জমি লিখে দিয়েছেন। একাধিক এনআইডির বিষয়ে বলেন, তার এনআইডি একটি। অন্যটি কোথা থেকে এসেছে তা তিনি জানেন না।
Advertisement
মিলন রহমান/এসআর/জেআইএম