দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন থামছেই না। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে শেয়ার বিক্রির অর্জিত মূলধনী মুনাফার ওপর কর হার কমানোর প্রেক্ষিতে দুদিন কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেলেও ফের টানা দরপতনের বৃত্তে আটকে গেছে শেয়ারবাজার।
Advertisement
আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় রোববার (১০ নভেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম কমার তালিকায়। ফলে কমেছে মূল্যসূচক।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হলো।
এর আগে শেয়ারবাজারে অব্যাহত দরপতন দেখা দিলে গত ৪ নভেম্বর দুপুরে মূলধনী মুনাফার ওপর কর হার কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর প্রেক্ষিতে ওইদিন এবং পর দিন শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। কিন্তু এরপর আবার পতনের ধারা শুরু হয় শেয়ারবাজারে।
Advertisement
গত সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবস পতনের পর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত সূচকের ঋণাত্মক ধারা অব্যাহত থাকে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৬৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ২৯২টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৩৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫০ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ২৬৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৫৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৭৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৫৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৪১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। সে হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১৮ কোটি ১১ লাখ টাকা।
Advertisement
এই লেনদেনে সব চেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ২১ কোটি ৬৫ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সোনালী আঁশের ১৯ কোটি ৭১ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৬ কোটি ১১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফারইস্ট নিটিং।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওরিয়ন ফার্মা, বিচ হ্যাচারি, ইসলামী ব্যাংক, ইউনিক হোটেল, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, ওরিয়ন ইনফিউশন এবং আফতাব অটোমোবাইল।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৫৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪০টির এবং ১৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয় ৫ কোটি ৩ লাখ টাকা।
এমএএস/এমআইএইচএস/জিকেএস