২০০০ সালের ১০ নভেম্বর যাত্রা শুরু। এরপর একে একে কেটে গেছে ২৪টি বছর। এই ২৪ বছরে বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেটে অনেক পরিণত হওয়ার কথা ছিল। ১৪৮টি টেস্ট খেলেছে এই ২৪ বছরে। জয় পেয়েছে মাত্র ২১টিতে। ১০৮টিতে হার। বাকি ১৯টি ড্র।
Advertisement
এই ২৪ বছরে দলীয় সাফল্য যা এসেছে, বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত সাফল্যের হারটাই বেশি। ব্যক্তিগত রেকর্ড এবং সাফল্যকে অধিকাংশ সময়ই বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা দলীয় সাফল্যে পরিণত করতে পারেননি। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে যা বিরল।
সব কথার এক কথা, ব্যক্তিগত অর্জনের দিক থেকে যতটা আলো ছড়িয়েছেন টাইগাররা, দলের অর্জন ততটা উজ্জ্বল তো নয়ই, বরং অনেকটায় ফিকে।
অভিষেক টেস্টেই একজোড়া রেকর্ড গড়েছিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল এবং অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয়। অভিষেক টেস্টে বুলবুলের ১৪৫ রানের পাশাপাশি ৬ উইকেট নেন নাইমুর রহমান দুর্জয়। সে ধারাবাহিকতায় গত ২৪ বছরে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত অর্জনের ঝাঁপি অনেক পূর্ণ হয়েছে, দলীয় অর্জনের তুলনায়। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের দুই যুগের অর্জনের সেই চালচিত্রটা এক নজরে দেখে নেয়া যাক।
Advertisement
(১) স্বপ্নের অভিষেকে ইতিহাস গড়েন বুলবুল, বল হাতে রেকর্ড গড়েন দুর্জয় (ঢাকা, নভেম্বর ২০০০) কূটনৈতিক সাফল্যে পাওয়া টেস্ট স্ট্যটাসের মর্যাদা রক্ষা করতে পারবে কি-না এমন একটা সংশয় নিয়ে ক্রিকেটের অভিজাত মহলে পা রাখল বাংলাদেশ। ১০ নভেম্বর যত এগিয়ে আসতে থাকল মর্যাদা ধরে রাখার শঙ্কটা রূপ নিতে থাকল আতঙ্কে। অবশ্য খেলতে নেমেই সব শঙ্কা , আতঙ্ক ভুলিয়ে দিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
১৮৭৭ সালের টেস্ট ক্রিকেটের অভিষেকে সবচেয়ে আলোচিত নাম চার্লস ব্যানারম্যানকেই যেন ফিরিয়ে আনলেন বুলবুল। কোন দেশের অভিষেকে তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে সেঞ্চুরি করার কীর্তি গড়লেন। ব্যানারম্যানের রেকর্ড থেকে ২০ রান পেছনে থেকে থামলেন বুলবুল। দেশের অভিষেকে ১৬৫ রান করেছিলেন ব্যানারম্যান। বুলবুল খেললেন ১৪৫ রানের চোখ ঝলসানো ইনিংস। এর মধ্যদিয়ে কোন দেশের অভিষেকে দ্বিতীয় সর্ব্বোচ্চ রান করার রেকর্ডটিও নিজের করে নিয়েছেন বুলবুল।
বুলবুলের ইতিহাস গড়ার পর বল হাতে রেকর্ড গড়লেন অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয়ও। ১৩২ রান খরচায় ৬ উইকেট তুলে নিয়ে ভারতীয় ইনিংস গুটিয়ে দিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। সে সঙ্গে দেশের হয়ে এক ইনিংসে প্রথমবারের মতো ৫ বা ততোধিক উইকেট নেয়ার রেকর্ডও গড়লেন দুর্জয়। (২) জাভেদ ওমর গুল্লুর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং (বুলাওয়ে, এপ্রিল ২০০১)
নিজের অভিষেক টেস্টকে আপন আলোয় রাঙান ওপেনার জাভেদ ওমর বেলিম গুল্লু। অভিষেকে টেস্ট ইতিহাসের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে ইনিংসের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন এই ওপেনার। ব্যক্তিগত ৮৫ রানে অপরাজিত থেকে সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিল দেখেন গুল্লু। তার আগে অভিষেকে এমন কৃতিত্ব দেখান ইংলিশ ওপেনার পেলহাম ওয়ার্নার। ১৯৮৮ সালে জোহান্সবার্গ টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে এসে ১৩২ রানে অপরাজিত ছিলেন ওয়ার্নার।
Advertisement
ওই বুলাওয়ে টেস্টে বাংলাদেশ ইনিংস ব্যবধানে হারলেও ম্যাচ সেরার পুরস্কার পান জাভেদ। টেস্টে দুই ইনিংসেই হাফ সেঞ্চুরির কৃতিত্ব দেখান। এটাই ছিল বাংলাদেশ দলের কোন ব্যাটারের প্রথমবারের মতো দুই ইনিংসেই হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ড।
(৩) টেস্ট ক্রিকেটের সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান আশরাফুল (কলম্বো, ২০০১ সেপ্টেম্বর)
টেস্ট অভিষেকেই ক্রিকেট দুনিয়াকে তাক লাগিয়ে দেন মোহাম্মদ আশরাফুল। এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে দ্বিতীয় ইনিংসে ১১৪ রানের রাজসিক ইনিংস খেলেন এই লিটল মাস্টার। তখন তার বয়স মাত্র ১৭ বছর ৬১ দিন।
এর মধ্যদিয়ে সবচেযে কম বয়সে টেস্ট সেঞ্চুরির রেকর্ডটি নিজের করে রেখেছেন আশরাফুল। ওই ম্যাচে বাংলাদেশ হারলেও লঙ্কান ঘুর্ণি জাদুকর মুত্তিয়া মুরালিধরনের সঙ্গে যুগ্মভাবে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন আশরাফুল।
(৪) অলক কাপালির হ্যাটট্রিক (পেশোয়ার, আগস্ট ২০০৩)
২০০৩ সালের পাকিস্তান সফরে নিজেদেরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার জোরালো সম্ভাবনা তৈরি করে বাংলাদেশ। পেশোয়ারে দ্বিতীয় টেস্টে লেগ স্পিনার অলক কাপালির হ্যাটট্রিকের সুবাদে ৬৬ রানের লিড পায় বাংলাদেশ। পরপর তিন বলে তিনি ফিরিয়ে দেন সাব্বির আহমেদ, দানিশ কানেরিয়া ও ওমর গুলকে।
সে সঙ্গে টেস্ট ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিক করার কৃতিত্বের অধিকারী হন কাপালি। ওই সময় তার বয়স ছিল ১৯ বছর ২৪০ দিন। তার এই রেকর্ডটি স্থায়ী হয় ১৭ বছর। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে কাপালির রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন রেকর্ড গড়েছেন পাকিস্তানী পেসার নাসিম শাহ।
(৫) মুলতান ট্র্যাজেডি ও রফিকের স্পোর্টসম্যানশিপ (মুলতান, সেপ্টেম্বর ২০০৩)
২১ বছর আগে স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে মুলতান টেস্টে গোটা দুনিয়াকে চমকে দেয় বাংলাদেশ। মুলতানে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টে ম্যাচের শেষ ঘণ্টা বাদে পুরো সময় দাপট দেখিয়েও তীরে এসে তরি ভেড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। মোহাম্মদ রফিকের স্পোর্টসম্যানশিপ ও পাকিস্তান অধিনায়ক ইনজামাম-উল হকের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের কাছে জয় ছুঁই ছুঁই দুরত্ব থেকে হারতে হয় টাইগারদের।
তৃতীয় টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে ইনজামাম ব্যাট করতে আসার সময় পাকিস্তানের স্কোর ২ উইকেটে ৬২। তাদের জয়ের জন্য টার্গেট ২৬১ রান। একটা পর্যায়ে ১৩২ রানে পাকিস্তান হারায় ৬ উইকেট। আর অষ্টম উইকেটের পতন ঘটে ২০৫ রানে। এ অবস্থায় উমর গুলকে সঙ্গে নিয়ে ৫২ রানের জুটি গড়েন ইনজামাম। যা জয় এনে দেয় স্বাগতিকদের।
তবে এই জুটি ভাঙার সুবর্ণ সুযোগ ছিল মোহাম্মদ রফিকের সামনে। রান নেয়ার জন্য বোলার বল ডেলিভারির আগেই নন-স্ট্রাইকিং প্রান্ত থেকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন গুল। তবে স্পোর্টসম্যনশিপের নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত দেখিয়ে গুলকে রান আউট না করে তাকে সতর্ক করেন রফিক। গুল শেষ পর্যন্ত দলীয় ২৫৭ রানে আউট হন। তবে বাংলাদেশকে কাঁদিয়ে অপরাজিত ১৩৮ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে পাকিস্তানকে জেতান ইনজামাম।
(৬) রফিক ও পাইলটের সেঞ্চুরিতে ড্র (সেন্ট লুসিয়া, মে ২০০৪)
অর্জনের দিক থেকে এটা হয়তো খুব বড় কিছু নয়। তবে ক্রিকেটীয় মানদণ্ডে ২০০৪ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর বাংলাদেশের জন্য ভিন্ন কিছু। এর আগ পর্যন্ত টেস্ট খেলে ড্র করার কোন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেনি বাংলাদেশ। বলাই যায়, সেন্ট লুসিয়া টেস্টে প্রথমবারের মতো খেলে ড্র করতে সমর্থ হয় টাইগাররা।
ওই টেস্টে প্রথস ইনিংসে সেঞ্চুরি করেন অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন। তবে ম্যাচ বাঁচানোর জন্য প্রয়োজন ছিল আরও বেশি কিছুর। আর সেটাই করে দেখান মোহাম্মদ রফিক ও খালেদ মাসুদ পাইলট। প্রথম ইনিংসে নয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ১১১ রানের ইনিংস খেলেন রফিক। আর দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৩ রানে অপরাজিত থেকে দলের ড্রয়ে অনন্য ভূমিকা রাখেন খালেদ মাসুদ পাইলট।
(৭) এনামুল হক জুনিয়রের ঘূর্ণি জাদুতে প্রথম টেস্ট জয় (চট্টগ্রাম, জানুয়ারি ২০০৫)
টেস্ট খেলার পঞ্চম বছরের শুরুতে ৩৫তম টেস্টে এসে প্রথম জয়ের দেখা পায় বাংলাদেশ। দুই টেস্টের ওই সিরিজে চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টে সফরকারী জিম্বাবুয়েকে ২২৬ রানে হারায় হাবিবুল বাশার সুমনের দল। ম্যাচে অভিষেকেই দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুয়ে ইনিংসে ধস নামান বাঁ-হাতি স্পিনার এনামুল হক জুনিয়র। মাত্র ৪৫ রান খরচায় ৬ উইকেট শিকার করেন এই টিন এজার। ওই সময় এনামুল ১৮ বছরের তরুণ। বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়ের ম্যাচে সেরার পুরস্কারও পান তিনি।
(৮) নাফিসের ব্যাটে প্রথম সিরিজ জয় (ঢাকা, জানুয়ারি ২০০৫)
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওই সিরিজেই প্রথম টেস্ট জয়ের আনন্দ মিলিয়ে যেতে বসেছিল ঢাকায় দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে। সিরিজ জেতার জন্য বাংলাদেশের প্রযোজন ড্র। আর সিরিজ হার এড়াতে চাইলে জয়ই একমাত্র বিকল্প জিম্বাবুয়ের। সিরিজে ফিরতে মরিয়া সফরকারীরা প্রথম ইনিংসে লিড নিল ৮৭ রানের। দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের সংগ্রহ দাঁড়াল ২৮৬ রান। চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশের সামনে ৩৭৭ রান টপকানোর চ্যালেঞ্জ। আর ড্র করতে হলে প্রায় পৌনে দুদিন উইকেট আগলে রাখার কঠিন পরীক্ষা।
ওপেনার নাফিস ইকবালের দৃঢ়তায় কঠিন পরীক্ষায় উতরে গেল বাংলাদেশ। তাকে সুযোগ্য সঙ্গ দেন আরেক ওপেনার জাভেদ ওমর। সাড়ে ৫ ঘণ্টা উইকেট আগলে রাখেন জাভেদ। আর আট ঘণ্টা উইকেট আগলে রেখে বাংলাদেশের ড্রয়ের কাজটিকে সহজ করে দেন নাফিস। ৩৫৫ বলের ইনিংসে ১২১ রান করেন নাফিস। তার বিদায়ের পর বাকি পথটুকু নির্বিঘ্নেই পার করান রাজিন সালেহ ও খালেদ মাসুদরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪২ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৮৫ রান জমা পড়ল বাংলাদেশ ইনিংসে। এই ড্রয়ের সুবাদে প্রথমবারের মতো সিরিজ জয়ের স্বাদ পায় টাইগাররা। (৯) ফতুল্লা ট্র্যাজেডি (ফতুল্লা, এপ্রিল ২০০৬)
মুলতানের রেপ্লিকা যেন ফতুল্লা ট্রাজেডি। জয়ের সুবাস ছাড়িয়েও তীরে এসে তরি ডোবে বাংলাদেশের। মুলতানে ১ উইকেটে আর ফতুল্লায় হার ৩ উইকেটের ব্যবধানে। দুক্ষেত্রেই চতুর্থ ইনিংসে প্রতিপক্ষ অধিনায়কের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের কাছে হারতে হয় টাইগারদের।
২০০৬ সালে ফতুল্লায় প্রবল পরাক্রম অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শাহরিয়ার নাফীস (১৩৮) , হাবিবুল বাশার সুমন (৭৬) ও রাজিন সালেহর (৬২) নৈপুন্যে প্রথম ইনিংসে নিজেদের স্কোরবোর্ডে ৪২৭ রান জমা করে বাংলাদেশ। জবাবে ২৬৯ রানে শেষ হয় অস্ট্রেলিযা ইনিংস। ১৫৮ রানের লিড পায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় ইনিংসে স্বাগতিকরা আাটকে যায় ১৪৮ রানে। জয়ের জন্য ৩০৬ রানের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নেমে ২৩১ রানের মাথায় ষষ্ঠ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। জয়ের জন্য শেষ চার উইকেটে দরকার ৭৫ রান। এখান থেকে বাংলাদেশের আশার বেলুন ফুটো করে দেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক রিকি পন্টিং। ১১৮ রানে অপরাজিত থেকে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন অজি অধিনায়ক।
(১০) প্রথম বিদেশ জয় (সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডা, আগস্ট ২০০৯) বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জেতাটা পরিসংখ্যানের দিক থেকেই যা একটু গুরুত্ব বহন করে। কেননা ২০০৯ সালের ওই সফরে প্রতিপক্ষ হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের যে দলটি খেলেছিল সেই দলটিকে দ্বিতীয় সারির বললেও বেশি বলা হবে।
সম্পূর্ণ আনকোরা ওই দলটিকে ২-০ ব্যবধানে সহজেই হারায় বাংলাদেশ। সেন্ট ভিনসেন্ট প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ জেতে ৯৫ রানের ব্যবধানে। আর গ্রানাডায় জয় আসে ৫ উইকেটের ব্যবধানে। ওই সিরিজে প্রথম টেস্টে মাশরাফি মর্তুজা ইনজুরি আক্রান্ত হওয়ার পর বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেন সাকিব আল হাসান।
(১১) সাকিব নাম্বার ওয়ান ক্রিকেটে অলরাউন্ডার হিসেবে এক নাম্বার জায়গাটি অনেকটায় নিজের করে রাখেন সাকিব আল হাসান। ওয়ানডে ক্রিকেটে ২০০৯ সালে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের তকমাটা নিজের করে নেন। এর দু’বছর পর টেস্ট র্যাংকিংয়েও সেরা অলরাউন্ডার হিবেবে সবাইকে পেছনে ফেলেন সাকিব। ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেই নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার হওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন বাঁ-হাতি।
শুধু নিজের সময়ই না সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের সংক্ষিপ্ত কাতারে সাকিবের নামটিও আলোচিত। চার হাজার রান ও দুশো উইকেট শিকারি সর্বকালের সেরা পাঁচ অলরাউন্ডারের অন্যতম সাকিব। বলা বাহুল্য সবচেয়ে দ্রুততম এই ক্লাবে (৪ হাজার রান ও ২০০ উইকেট) পৌছেছেন সাকিব। ৭১ টেস্টে ৩৭ দশমিক ৭৭ গড়ে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৪ হাজার ৬০৯ রান।
বল হাতে ৩১ দশমিক ৭২ গড়ে শিকার করেছেন ২১০ উইকেট। টেস্টে তিন হাজার রানের পাশাপাশি দুশো উইকেট শিকারীর ক্লাবে পৌঁছে গেছেন তিনি। মাকিব মাঠে নামা মানেই ঘটনার ঘনঘটা। একই টেস্টে সেঞ্চুরির পাশাপাশি ১০ উইকেট নেয়ার মতো ক্রিকেটার বাংলাদেশ দলেও আছে! টেস্টে এমন কৃতিত্ব সাকিব দেখিয়েছেন দুই দু’বার।
(১১) লর্ডসের অনার্স বোর্ডে তামিম (লর্ডস, মে ২০১০) ক্রিকেট আর লর্ডস যেন বিনে সুঁতোয় গাঁথা। ক্রিকেটের এই প্রেস্টিজিয়াস মঞ্চে নিজের সেরাটা পাওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকেন ক্রিকেটাররা। বোলাররা যেমন চান ৫ উইকেট তেমনি ব্যাটসম্যানদের আরাধ্য সেঞ্চুরি। আর এমনটা করতে পারলেই যে লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম ওঠে।
২০১০ সালের ৩০ মে লর্ডসের অনার্স পরীক্ষায় উতরে গেলেন তামিম ইকবাল। বলা বাহল্য প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এমন কৃতিত্ব দেখান তামিম। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওই লর্ডস টেস্টে বাংলাদেশ অবশ্য হেরে যায় ৮ উইকেটের ব্যবধানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ৯৪ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর ১০৩ রানে সাজ ঘরে ফেরেন তিনি। (১২) অভিষেকেই রুপকথা লিখলেন আবুল হাসান রাজু (খুলনা, নভেম্বর ২০১২)
২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খুলনা টেস্টে অভিষেকই ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নেন আবুল হাসান রাজু। টেস্টে দশ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ১১৩ রানের ইনিংস খেলেন এই অলরাউন্ডার।
টেস্ট ইতহাসে দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে এমন কীর্তি গড়েন আবুল হাসান। তার আগে দশ নম্বরে নেমে সেঞ্চুরির একক মালিকানা ছিল অস্ট্রেলিয়ার রেগি ডাফের। ১৯০২ সালে মেলবোর্নে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দশ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ১০৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন ডাফ। এর ১১০ বছর পর সেই রেকর্ডে ভাগ বসালেন আবুল হাসান।
(১৩) ইতিহাসের পাতায় সোহাগ গাজী (চট্টগ্রাম, অক্টোবর ২০১৩)
টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে বিরল এক কীর্তির মালিকানা বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সোহাগ গাজীর। চট্টগ্রাম টেস্টে নিউজিল্যান্ডর বিপক্ষে ব্যাট হাতে সেঞ্চুরির সঙ্গে বল হাতে হ্যাটট্রিক করেন সোহাগ। প্রথম ইনিংসে অপরাজিত থাকেন ১০১ রানে। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে হ্যাটট্রিকসহ মাত্র ২৭ রান খরচায় তুলে নেন ৬ উইকেট। ১৪৩ বছরের টেস্ট ইতিহাসে এমন কৃতিত্ব আর একটিও নেই।
(১৪) ছয়শ’ রানের চূড়ায় বাংলাদেশ (গল, মার্চ ২০১৩) টেস্ট ক্রিকেটে একবারই ৬শ’ রানের চূড়ার নাগাল পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৩ সালে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৬৩৮ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। এই ইনিংসে বাংলাদেশর প্রথম ব্যাটার হিসেবে জোড়া শতক হাঁকান মুশফিকুর রহিম। এছাড়াও সেঞ্চুরি পান মোহাম্মদ আশরাফুল (১৯০) ও নাসির হোসেন (১০০)।
(১৫) মুমিনুলের উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরী (চট্টগ্রাম, ফেব্রুয়ারি ২০১৮) ২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে ১৭৬ রানের ইনিংস খেলেন মুমিনুল হক। দ্বিতীয় ইনিংসে তার ব্যাট থেকে আসে ১০৫ রান। এর মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে একই টেস্টের উভয ইনিংসেই সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব দেখান মুমিনুল। (১৬) মিরাজ ঘূর্ণিতে ইংল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজে সমতা (মিরপুর, নভেম্বর ২০১৬) ২০১৬ সালে ঘরের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে প্রথম টেস্টে হাড্ডহাড্ডি লড়াই করে মাত্র ২২ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ। এর আগ পর্যন্ত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কখনোই টেস্ট জয়ের স্বাদ পায়নি টাইগাররা। এই টেস্টে অভিষেকেই ৬ উইকেট নিয়ে আলো ছড়ান মেহেদী হাসান মিরাজ।
তবে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে মিরাজ হয়ে উঠলেন আরও বিপজ্জনক। দু’ ইনিংস মিলিয়ে ১২ উইকেট শিকার করলেন এই ডানহাতি অফস্পিনার। বাংলাদেশ ম্যাচ জিতল ১০৯ রানে। আর এই সুবাদে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মত সমতায় থেকে সিরিজ শেষ করল টাইগাররা।
(১৭) অস্ট্রেলিয়াকে মাটিতে নামাল বাংলাদেশ (মিরপুর, আগস্ট -সেপ্টেম্বর ২০১৭)
ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়াকে হারানো বিশেষ ঘটনা। সাকিব আল হাসানের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে অবশেষে অস্ট্রেলিয়াকে মাটিতে নামাতে সমর্থ হল বাংলাদেশ। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে ৮৪ রান করলেন সাকিব। আর বল হাতে দুই নিংসেই শিকার করলেন ৫ উইকেট। স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচে বাংলাদেশ জিতল ২০ রানে। ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেলেন সাকিব।
তবে প্রথম টেস্টের এই সুখস্মৃতি দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট অবধি টেনে নিতে পারেনি টাইগাররা। দ্বিতীয় টেস্টে ৭ উইকেটে জিতে সিরিজে সমতায় ফেরে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া।
(১৮) মুশফিকের তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি (মিরপুর, ফেব্রুয়ারি, ২০২০) বাংলাদেশের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব দেখান মিস্টার ডিপেন্ডাবল খ্যাত মুশফিকুর রহিম। তবে এখানেই থেমে থাকেননি। নিজের ডাবল সেঞ্চুরির সংখ্যাকে তিনে উন্নীত করেছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। আর এটা করার পথে বিরল কীর্তিও গড়েছেন মুশফিক।
টেস্ট ইতিহাসে উইকেটরক্ষক-ব্যাটান হিসেবে একাধিক ডবল সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব আর কারো নেই। এ বছর রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৯১ রানের ইনিংস খেলেন মুশফিক। মাত্র ৯ রানের জন্য টেস্ট ক্যারিয়ারে চতুর্থ ডাবল সেঞ্চুরি থেকে বঞ্চিত হন তিনি।
বলা বাহুল্য, বাংলাদেশের পাঁচটি ডাবল সেঞ্চুরির তিনটিই মুশফিকের দখলে। বাকি দুই ডাবল সেঞ্চুরিয়ান সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল।
(১৯) অভিষেকে ৫ উইকেটের ছড়াছড়ি দুর্দান্ত অভিষেকের পর ধীরে ধীরে স্তিমিত হয়ে আসাটা বাংলাদেশর ক্রিকেটারদের নৈমিত্তিক বৈশিষ্ট্য। শুধু অভিষেক টেস্টেই এক ইনিংসে ৫ উইকেট শিকারের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন বাংলাদেশের ৮ জন বোলার। দেশের অভিষেকে ৬ উইকেট নিয়ে এই যাত্রা শুরু করেছিলেন নাইমুর রহমান দুর্জয়।
সর্বশেষ ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই কৃতিত্ব দেখিয়েছেন নাইম হাসান। ক্রিকেটের কুলীন দল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তুলনাটা করলেই বিষয়টা পরিষ্কার হযে যাবে। এখন পর্যন্ত ৬ জন কিউই ক্রিকেটার অভিষেক টেস্টের এক ইনংসে পেয়েছেন ৫ উইকেট। মনে রাখতে হবে বাংলাদেশের সাত দশক আগে থেকে টেস্ট খেলছে নিউজিল্যান্ড। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটে এই সংখ্যাটা মোটে দুই।
(২০) শততম টেস্টে জয় (কলম্বো, মার্চ ২০১৭) ২০১৭ সালের শ্রীলঙ্কা সফর কাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য বিশেষ একটা ব্যাপার। এই সফরে নিজেদের শততম টেস্টে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে হারানোর গৌরব অর্জন করে টাইগাররা। ম্যাচে সাকিব আল হাসানের সেঞ্চুরিতে ভর দিয়ে প্রথম ইনিংসে ১২৯ রানের লিড পায় বাংলাদেশ। জয়ের জন্য চতুর্থ ইনিংসে ১৯১ রান তোলার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে বাংলাদেশ।
৪ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় মুশফিকরা। প্রথম ইনিংসে ৪৯ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৮২ রান করেন তামিম ইকবাল। পান ম্যাচ সেরার স্বীকৃতিও।
(২১) নিউজিল্যান্ডকে তাদেরই মাটিতে হারিয়ে নতুন উচ্চতায় বাংলাদেশ (মাউন্ট মঙ্গানুই, জানুয়ারি ২০২২)
দু’বছর আগে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে প্রথম টেস্টে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ দল। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ক্রিকেটে তিন ফরম্যাটে এটিই বাংলাদেশের প্রথম জয়।
প্রথম ইনিংসে ১৩০ রানের লিড আর নিউজিল্যান্ডকে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬৯ রানে অলআউট করে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় মাত্র ৪০ রান। সেই লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নেমে মাত্র দুই উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যান মুমিনুল-মুশফিকরা। এটা নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্টে প্রথম জয়তো বটেই, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেও বাংলাদেশেরও প্রথম জয়ের স্বাদ।
১৬ বারের দেখায় কিউইদের টেস্টে হারাতে পারল টাইগাররা। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জেতাটা যে কতটা কঠিন এটা অনুধাবন করার জন্য একটি তথ্যই যথেষ্ট। ঘরের মাঠে টানা ১৭ টেস্ট অপরাজিত থাকার পর টাইগারদের কাছে হারের স্বাদ পায় ব্ল্যাক ক্যাপসরা। ২০১৭ সালের পর স্বাগতিক কিউরা টানা ৮ টেস্ট সিরিজ জেতার পর হারে এই প্রথম।
(২২) বাংলাদেশের পাকিস্তান জয় (রাওয়লপিন্ডি, আগস্ট ২০২৪)
টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন এসেছে এ বছর পাকিস্তান সফরে। ২১ বছর পর মুলতানের দুঃখ ভুলিয়েছেন টাইগাররা। রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জয়ের আনন্দকে হোয়াইটওয়াশের উচ্ছ্বাসে ভাসিয়েছেন লাল–সবুজের প্রতিনিধিরা।
পাকিস্তানের বিপক্ষে এই সিরিজে ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং সব বিভাগেই দাপট দেখিয়েছেন টাইগাররা। কখনো পেসারারা ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন, কখনোবা স্পিনাররা, টপ অর্ডার ব্যাটাররা সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলে সেটা করে দেখিয়েছেন মিডল অর্ডার ব্যাটাররা।
আবার কখনো টপ অর্ডার ব্যাটাররাই এগিয়ে দিয়েছেন দলকে। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটের দারুণ এক জয়ের পর দ্বিতীয় টেস্টে টাইগারদের জয় ৬ উইকেটের ব্যবধানে।
পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করাটা কতটা গর্বের- এর জন্য একটা তথ্যই যথেষ্ট। ইংল্যান্ডের পর এই কীর্তি কেবল বাংলাদেশের। এর আগে টেস্ট ইতিহাসে কেবল একবারই হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল পাকিস্তান। ২০২২ সালে স্বাগতিক পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল ইংল্যান্ড। সেই সফরে ইংলিশরা টেস্ট সিরিজ জেতে ৩-০ ব্যবধানে। এরপর কেবল বাংলাদেশই অধিকারী হল এমন গৌরবের।
(২৩) লিটন–মিরাজের ব্যাটে ইতিহাস (রাওয়লপিন্ডি, আগস্ট ২০২৪)
টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের পাতাকে নতুনভাবে সমৃদ্ধ করলেন লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজ। ৫০ রানের নিচে ৬ উইকেট পতনের পর টেস্ট ইতিহাসের প্রথম দেড়শ রানের জুটি গড়েন এই দু’জন। রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসেএকটা পর্যায়ে মাত্র ২৬ রানে ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এখান ১৬৫ রানের ঐতিহাসিক জুটি গড়েন লিটন-মিরাজ। ৭৮ রানে মিরাজের বিদায়ে এই জুটি থামে ১৬৫ রানে। লিটনের ব্যাট থেকে আসে ১৩৮ রান।
এর আগের রেকর্ডটি ছিল পাকিস্তানের আব্দুল রাজ্জাক ও কামরান আকমলের। ২০০৬ সালে ভারতের বিপক্ষে করাচিতে ৩৯ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর ১১৫ রানের জুটি গড়েছিলেন এই দু’জন। বাংলাদেশের চেয়ে কম রানে ৬ উইকেট হারিয়ে শতরানের জুটি টেস্ট ইতিহাসে আছে কেবল আর একটি। ২০২১ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গলে ১৮ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর ১০০ রানের জুটি গড়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এনক্রুমা বনার ও জশুয়া দা সিলভা।
(২৪) টাইগার পেসাররা দশে ১০ (রাওয়ালপিন্ডি, আগস্ট ২০২৪)
এ বছর রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসের সবক’টি উইকেটই শিকার করেন বাংলাদেশের পেসাররা। টেস্টে প্রথমবারের মতো এমন কৃতিত্ব দেখিয়েছেন টাইগার পেসাররা। ম্যাচের চতুর্থ দিনে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭২ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান।
সবগুলো উইকেটই নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছেন বাংলাদেশের তিন পেসার— হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা ও তাসকিন আহমেদ। টেস্টে এই প্রথম এমন দৃস্টান্ত গড়ল টাইগার পেস ব্রিগেড। ৪৩ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন হাসান। টেস্টে এটাই তাঁর প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট। পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম পেসার হিসেবেও নেন নিলেন ৫ উইকেট। এছাড়াও ৪ উইকেট নেন নাহিদ। আর তাসকিনের শিকার ১ উইকেট।
আইএইচএস/