দেশজুড়ে

দুই কারণে মুনতাহাকে হত্যা, আশঙ্কা বাবার

মাত্র পাঁচ বছরের ফুটফুটে শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিন। সারাক্ষণ বাড়ির সবাইকে মাতিয়ে রাখতো। বাবা-মা সবার প্রাণ ছিল ছোট্ট মুনতাহা। অবুঝ এ শিশুটি পৃথিবীতে ফুটে ওঠার আগেই নরপিশাচরা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। ফুলের মতো শিশুটি হারিয়ে বাগরুদ্ধ মা-বাবা। স্তব্ধ পুরো সিলেট তথা দেশ।

Advertisement

কিন্তু কী কারণে মুনতাহাকে হত্যা করা হয়েছে তা বলতে পারছেন না কেউই। পুলিশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে। কিন্তু এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে হত্যার কারণ বলছে না। মুনতাহার বাবা-মাও জানেন না কেন তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে।

তবে দুটি কারণে হত্যা করতে পারে বলে আশংকার কথা জানিয়েছেন মুনতাহার বাবা শামীম আহমদ।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ঘাতক শামীমা বেগম মার্জিয়া চরিত্রহীন ছিল। বিভিন্ন স্থানে যাওয়ার সময় মুনতাহাকে সঙ্গে নিতো। খারাপ প্রকৃতির হওয়ায় তিনি তাকে মানা করেছেন। অন্য কারণ হলো- মুনতাহার গৃহশিক্ষক ছিল মার্জিয়া। চারিত্রিক সমস্যার কারণে তিনি তাকে শিক্ষকতা থেকে বাদ দেন।

Advertisement

এ দুই কারণ ছাড়া মার্জিয়াদের সঙ্গে অন্য কোনো বিরোধ মনে করতে পারছেন না মুনতাহার বাবা। মুনতাহার বাবার এই সন্দেহের সঙ্গে পুলিশের সন্দেহেও মিল রয়েছে।

পুলিশ ধারণা করছে গৃহশিক্ষক থেকে বাদ দিয়ে দেওয়ায় আক্রোশ থেকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে।

রোববার (১০ নভেম্বর) সকালে মুনতাহার ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মরদেহের সঙ্গে আসেন মুনতাহার চাচা কয়ছর আহমদ।

আরও পড়ুন:ঘাতক তিন নারীর বাড়িঘরে আগুন দিলো জনতনিখোঁজের ৭ দিন পর নালায় মিললো শিশু মুনতাহার মরদেহমুনতাহার মরদেহ ছিল নারীর কোলে, ফেলতে যাচ্ছিলেন পুকুরে

জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশী মার্জিয়াদের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। তাকে টিউশনি থেকে বাদ দেওয়ায় সে হত্যা করতে পারে। এছাড়া আর কোনো কারণ নেই বলেন তিনি।

Advertisement

সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, মার্জিয়ার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ৩ নভেম্বর রাতেই মুনতাহাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর ডোবায় ফেলে রাখা হয়। মার্জিয়াকে শিক্ষকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় ক্ষোভ থেকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।

তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঘাতক মার্জিয়াসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আর কেউ জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কানাইঘাট সদর ইউপি চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন আহমদ বলেন, মার্জিয়াদের সঙ্গে মুনতাহার পরিবারের বিরোধ রয়েছে কি না আমরা বিভিন্নভাবে জানার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনো পূর্বশত্রুতার খবর পাওয়া যায়নি।

এর আগে রোববার (১০ নভেম্বর) ভোররাতে নিজ বাড়ির পার্শ্ববর্তী নালা থেকে মরদেহ পুকুরে ফেলার সময় মুনতাহার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় হাতেনাতে মার্জিয়ার মা আলিফজান বিবিকে আটক করে স্থানীয় জনতা।

এ ঘটনায় শিশু মুনতাহার গৃহশিক্ষক শামীমা বেগম মার্জিয়া, তার মা আলিফজান বিবি ও নানি কুতুবজান বিবি, প্রতিবেশী নিজাম উদ্দিন, ইসলাম উদ্দিন ও নাজমা বেগমকে আটক করেছে পুলিশ।

আহমেদ জামিল/এএইচ/জেআইএম