আন্তর্জাতিক

ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের বিমান হামলা, অস্ত্রাগার ধ্বংস

ইয়েমেনের রাজধানী সানা এবং বিভিন্ন স্থানে একযোগে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। হুথি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত আল-মাসিরাহ টেলিভিশন চ্যানেল এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

Advertisement

পেন্টাগন জানিয়েছে, এই হামলায় উন্নত অস্ত্রশস্ত্রের একটি গুদামকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, যা লোহিত সাগর ও অ্যাডেন উপসাগরে চলাচলকারী সামরিক-বেসামরিক জাহাজগুলোতে হামলার জন্য ব্যবহৃত হতো।

শনিবার রাতভর সানা এবং উত্তরের আমরান প্রদেশসহ বিভিন্ন এলাকায় এই হামলা চালানো হয়। আল-মাসিরাহ টেলিভিশনের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, স্থানীয়রা তীব্র গুলির শব্দ এবং বিস্ফোরণের আওয়াজ শুনেছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন>

Advertisement

ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা লেবাননের পর ইয়েমেনে হামলা চালালো ইসরায়েল ইয়েমেনে হুথিদের স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা

পেন্টাগনের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, এই হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল এমন কিছু অস্ত্রাগার, যেগুলো ব্যবহার করে হুথি বিদ্রোহীরা আন্তর্জাতিক জলসীমায় বাণিজ্যিক ও সামরিক জাহাজে হামলা চালিয়ে আসছিল।

এ বছরের শুরু থেকে হুথি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলি বাণিজ্যিক জাহাজের ওপর একাধিকবার হামলা চালিয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য জানুয়ারির পর থেকে ইয়েমেনে একাধিকবার বিমান হামলা চালা। গত জুলাইয়ে হোদাইদা প্রদেশে চালানো এক হামলায় অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছিল বলে দাবি করেছে হুথি বিদ্রোহীরা।

আঞ্চলিক যুদ্ধের শঙ্কা

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত বৃদ্ধির পর থেকে হুথি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা শুরু করেছে। বিদ্রোহীদের দাবি, ইসরায়েল গাজায় হামলা বন্ধ না করলে এই আক্রমণ চলতে থাকবে। হুথিদের সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি জানিয়েছেন, তারা সম্প্রতি ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের নেভাতিম বিমান ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে এবং পশ্চিম ইয়েমেনে একটি মার্কিন ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে।

ইয়েমেনে ২০২২ সাল থেকে একটি নাজুক যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও সাম্প্রতিক হামলার ফলে দেশটির গৃহযুদ্ধ ফের ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। হুথিদের অব্যাহত আক্রমণের ফলে লোহিত সাগরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিপিং রুটে বাণিজ্যিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

Advertisement

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪৩ হাজার ৫৫২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ২ হাজার ৭৬৫ জন। গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে লেবাননেও নিয়মিত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। সেখানে ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৩ হাজার ১৩৬ জন নিহত এবং ১৩ হাজার ৯৭৯ জন আহত হয়েছেন।

সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে ইয়েমেন ও গাজা সংঘাত নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যে একটি আঞ্চলিক যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি করছে।

সূত্র: আল-জাজিরাকেএএ/