ফিচার

কেন ইন্টার্নশিপ করবেন

গ্র্যাজুয়েশন শেষ হওয়ার পর সবাইকেই কোনো একটি প্রতিষ্ঠানের অধীনে খণ্ডকালীন সময়ের জন্য বিশেষ কাজ করতে হয়। আর এই কাজটাকেই বলা হয় ইন্টার্নশিপ। এই ইন্টার্নশিপ পড়াশোনার একটি অংশ হিসেবেই বিবেচিত হয়, কারণ তিনমাস কোনো একটি প্রতিষ্ঠানের অধীনে ইন্টার্নশিপ করার পর এই কাজের ওপর একটি রিপোর্ট জমা দিতে হয় আর বিশ্ববিদ্যালয়ে রিপোর্ট জমা দেয়ার পরই শিক্ষার্থী তার সার্টিফিকেট পায়। তাই এই ইন্টার্নশিপের গুরুত্ব আর বুঝিয়ে বলার দরকার হয় না।ইন্টার্নশিপ কোথায় করবেনবর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম চালু হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মিডিয়া, মোবাইল অপারেটর, বহুজাতিক কোম্পানি ইন্টার্নশিপকে গুরুত্ব দিচ্ছে। এমনকি যারা ইন্টার্নশিপ করতে আসে অনেক কোম্পানি তাদের প্রতিমাসে টাকাও দিয়ে থাকে। এতে করে কাজের প্রতি শিক্ষানবিশদের আগ্রহ আরো বাড়ে।ইন্টার্নশিপ কেন করবেনযেসব শিক্ষার্থীরা ইন্টার্নশিপে অংশগ্রহণ করেন তাদের ক্যারিয়ারের জন্য এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ যেসব ছাত্রছাত্রী প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে আসে ইন্টার্নশিপ শেষে তাদের অনেকেরই একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি হয়ে যায়। আর তা না হলেও অন্য প্রতিষ্ঠানের চাকরির আবেদনে তাদের এই অভিজ্ঞতাকে তারা কাজে লাগাতে পারে।প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপের গুরুত্বইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম যে শুধুমাত্র শিক্ষানবিশদের জন্যই গুরুত্ব বহন করে তা কিন্তু নয়, এর সঙ্গে সঙ্গে প্রতিষ্ঠানও সমানভাবে উপকৃত হয়। প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে তিনমাসের কাজ করার সুবিধা দেয়া হয়। তাদের কাজের মাধ্যমে তাই খুব সহজেই প্রতিষ্ঠানটি যাচাই-বাছাইয়ের যথেষ্ট সুযোগ পায়। ফলে পরে স্থায়ীভাবে লোক নেয়ার সময় ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামে অংশ নেয়া প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়। কারণ স্বল্প সময়ের জন্য হলেও একজন শিক্ষানবিশ ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে সেই প্রতিষ্ঠানের কাজের ধরন, তাদের পলিসি ও পরিবেশ সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়ে থাকে। এতে করে নতুনভাবে ট্রেনিং দেয়ার ঝামেলা বা খরচ দুটোই কমে যায়।ইন্টার্নশিপের সময় শিক্ষানবিশদের করণীয় বিষয়ইন্টার্নশিপের প্রোগ্রামটি যেহেতু যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ তাই এই সময় শিক্ষানবিশদের তাদের কাজে যথেষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হবে।ঠিক করে নিতে হবে ক্ষেত্রএকজন শিক্ষানবিশ যেই বিষয়ে মেজর করেছে সাধারণত কোনো প্রতিষ্ঠানে সেই বিষয়েই ইন্টার্নশিপের জন্য নির্বাচিত হয়। কিন্তু সেই মেজর বিষয়টিরও অনেকগুলো ক্ষেত্র আছে। ক্ষেত্র অনুযায়ী কাজ বুঝে নিতে হবে। কোনো এরিয়াতে কাজ করলে তার জন্য ভালো হবে, সে নতুন কি আয়ত্ত করতে পারবে অল্প সময়ের মধ্যে তা বুঝেই ঠিক করে নিতে হবে এরিয়া।সুপারভাইজারের সঙ্গে সদ্ভাবইন্টার্নশিপ করতে হলে প্রতিষ্ঠানের কোনো একজন নির্ধারিত সুপারভাইজারের অধীনে কাজ করতে হয়। তাই তার সঙ্গে সদ্ভাব রাখাটা জরুরি। কোনো কিছু না বুঝলে তাকে প্রশ্ন করে জেনে নিতে হবে এবং এর সঙ্গে সঙ্গে তার কাজের প্রতিও বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে করে কাজ শেখা যায়।নিয়মিত থাকাঅনেক ছাত্রছাত্রীদের দেখা যায় ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামকে অবহেলা করে, নিয়মিত অফিসে যায় না বা গেলেও সময়মতো পৌঁছায় না। এটা একেবারেই ঠিক নয়, এতে করে যদি কারো ক্ষতি হয় তা সম্পূর্ণ তার নিজের। ইন্টার্নশিপের কাজকেও যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে এবং সময় মেনে নিয়মিত অফিসে যেতে হবে।নেতিবাচক মনোভাব বর্জন করে ইতিবাচক হোনঅনেক শিক্ষার্থীরই একটি সাধারণ অভিযোগ যে তাদের দিয়ে অনেক বেশি কাজ করানো হয় বা প্রেশারে রাখা হয়। কিন্তু এতে বিরক্ত হওয়া যাবে না। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেরই শিক্ষানবিশদের তিনমাস কাজ শেখাতে বেশ কিছু ব্যয় হয়ে থাকে, অনেক প্রতিষ্ঠানে দুপুরের খাবার বা বিকেলের নাস্তাও দেয়া হয়। তাই প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার মাঝে মাঝে একটু বেশি কাজ করায় কিন্তু এতে বরং আপনার লাভই হচ্ছে, কারণ আপনি জানতে ও শিখতে পারছেন বেশি।

Advertisement