কৃষি ও প্রকৃতি

মানিকগঞ্জে আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

মানিকগঞ্জ জেলায় এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকের সোনালি আমন ধান দোল খাচ্ছে মাঠজুড়ে। আমন ধানের বাম্পার ফলনে খুশি কৃষকেরা। ধান পাকতে শুরু করায় কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক ও শ্রমিকরা। চাষের খরচ মিটিয়ে তারা ধারদেনাও শোধ করতে পারবেন বলে আশা করছেন।

Advertisement

মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি অফিসের তথ্য বলছে, এ বছর জেলায় ৩৫ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও আমন আবাদ হয়েছে ৩১ হাজার ৬৪৯ হেক্টর জমিতে। গত বছর চাষ হয়েছিল ৩৬ হাজার ৯৭২ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হয়েছিল ৬৯ হাজার ১৬৪ মেট্রিক টন। গত বছরের চেয়ে এ বছর আমনের আবাদ কমেছে ১ হাজার ৪২২ হেক্টর জমিতে। এ বছর এখন পর্যন্ত ৩০ শতাংশ জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে ধান কাটা শেষ হবে। তখন কৃষক আমনের দাম ভালো পাবে বলে আশা করে জেলা কৃষি অফিস।

বাঠইমুড়ি গ্রামের মিঠুন আহম্মেদ বলেন, ‘বন্যার পানিও খুব বেশি হয়নি। ধানে কোনো পোকার আক্রমণও হয়নি। ফলে এবার খরচ কমই হয়েছে। তবে ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছিল। তাতে ধান আবাদে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। তাই ধানের ফলনও বাম্পার হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে সব ধান কাটা ও মাড়াই শেষে ঘরে তুলতে পারবো।’

আরও পড়ুন

Advertisement

বিএডিসি খামারে ৩০০ একর জমিতে আউশের বীজ চাষ ঝালকাঠিতে আমন চাষে ব্যস্ত কৃষক, বীজ সংকটের শঙ্কা

ঘিওর উপজেলার উভাজানী গ্রামের রতন দেওয়ান বলেন, ‘আমি এবার ৫ বিঘা আমনের চাষ করেছি। আশা করছি ৪০ মণের কাছাকাছি ধান পাবো। আমন ধানে কোনো রকমের সার-কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। তাই খরচ কম হয়। আশা করি লোনের টাকা দিয়েও হাতে কিছু থাকবে।’

একই গ্রামের রবিউল বলেন, ‘শুনেছি এবার বাজারে ধানের দাম ভালো। তবে গতবারের চাইতে এবার ধান কাটার শ্রমিকের দামটা একটু বেশি। প্রতি শ্রমিককে তিনবার খাইয়ে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা দিতে হচ্ছে।’

ধান ব্যবসায়ী আলমাস আলী বলেন, ‘এ বছর আমন ধান হাটে আসতে শুরু করেছে। আমরা আজ ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায় কিনেছি। তবে মনে হচ্ছে আরও দাম বাড়তে পারে।’

মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. রবীআহ নূর আহমেদ বলেন, ‘কৃষি অফিসের পরামর্শে গত বছর রোপা আমন চাষ করা হয়েছিল ১১ হাজার ৪৬২ হেক্টর জমিতে। এ বছর চাষ হয়েছে ১২ হাজার ৩৮ হেক্টর জমিতে। বোনা আমন গত বছর চাষ হয়েছিল ১২ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে। এ বছর চাষ হয়েছে ১৯ হাজার ৬১১ হেক্টর জমিতে। আশা করি এ বছর গত বছরের চেয়ে দাম ভালো পাবেন কৃষক।’

Advertisement

এসইউ/এমএস