স্বাস্থ্য

‘সব হাসপাতালে মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসার পদ সৃষ্টি করতে হবে’

মানসিক স্বাস্থ্য জনগণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠলেও সেভাবে গুরুত্ব পচ্ছে না বলে জানিয়েছে মানসিক স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা। ঢাকাসহ দেশের সব বিভাগের মানুষের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। আর সেজন্য দেশের সব হাসপাতালে মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসার পদ সৃষ্টি করতে হবে বলে জানান তারা।

Advertisement

শনিবার (৯ নভেম্বর) রাজধানীর শেরবাংলা নগর জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে মেন্টাল হেলথ ২.০ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের বিভাগীয় প্রধান সায়েদুল ইসলাম বলেন, সরকারি হাসপাতালে মানসিক স্বাস্থ্যর জন্য আলাদা কোনো পদ নেই। অনেক সময় চিকিৎসকদের সেখানে সংযুক্ত করা হয়। সরকারি সব মেডিকেলে মানসিক স্বাস্থ্যর জন্য আলাদা পদ তৈরি করা প্রয়োজন। তাহলে এই খাতে উন্নয়ন সম্ভব।

এখনো আন্দোলনে আহত অনেক শীক্ষার্থী শারীরিকভাবে সুস্থ হলেও অনেক শীক্ষার্থীরা মানসিক ট্রমায় ভুগছেন বলে উল্লেখ করছেন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলের মানসিক স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো জোবায়ের মিয়া। তিনি বলেন, আমি একজনকে চিকিৎসা দিয়েছি এমন যে তার শরীরে গুলি ভেতরে ডুকে গিয়েছিল। তার শরীর থেকে গুলি বের করা হলেও এখনো সে মনে করে তার শরীরে এই গুলির মাধ্যমে একটি চিফ ডুকিয়ে দেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে তাকে ট্র্যাক করা হচ্ছে। যদিও বিষয়টি ভিত্তিহীন। সে মানসিক সমস্যায় ভুগছে। আমরা তাকে সহযোগিতা করছি।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, তার মতো আহতদের মানসিক স্বাস্থ্য হুমকির মুখে। তারা মিছিলের আওয়াজ শুনে, ঘুমাতে পারে না, ভয় পায়। তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন।

ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ) উত্তরের সভাপতি ডা. আসাদুজ্জামান কাবুল বলেন, আমাদের দেশে তরুণরা আন্দোলন করেছে দেশ থেকে বৈষম্য দূর করার জন্য। আমরাও চেষ্টা করছি দেশের সব জায়গায় বৈষম্য দূর করতে। বিগত সময় আমরা এসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারতাম না, আসতে পারতাম না। আমরা এখন আসার সুযোগ পাচ্ছি, বৈষম্য দূর করে একসঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করবো।

ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সহ সভাপতি ডা. মোসাদ্দেক হোসাইন বিশ্বাস বলেন, নর্থ বেঙ্গল থেকেই শুরু হয়েছিল ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। এই ২০২৪ সালের যুদ্ধ ও উত্তর বঙ্গ থেকে শুরু হয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি অনুষ্ঠানে আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরনে এক মিনিট নীরবতা পালনের কথাও বলেন তিনি।

তিনি বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যের প্রায় ৭০ শতাংশ চিকিৎসকই বেসরকারিভাবে চিকিৎসা দিয়ে থাকে। তাদের কীভাবে কাজে লাগানো যায় তা নিয়ে আমরা ভাবছি। আমাদের দেশেরই অনেকে দেশের বাইরের অনেক অভিজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেছে। তারা আমাদের দেশের জন্য কাজ করতে চায়। কিন্তু আমাদের দেশের অনেকের কোন্দলের কারণে তারা দেশে এসে কাজ করার সুযোগ পাই না।

Advertisement

সাইকেয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, আমরা সবাইকে নিয়ে চলতে চাই। যারা আগেও এই অ্যাসোসিয়েশনে কাজ করেছে তারা আগামীকাল দায়িত্ব হস্তান্তর করবে। আমরা সবাইকে নিয়েই চলতে চাই।

এসময় মানসিক চিকিৎসকদের ভূমিকা বিএমডিসির মাধম্যে মূল্যায়ন করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মুনতাসীর মারুফ।

এএএম/এমআইএইচএস/জিকেএস